Image description
 

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দুর্গাপুরে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক তরুণী। তিনি দেশটির একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। শনিবার (১১ অক্টোবর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, দুর্গাপুরের শিবপুরের আইকিউ সিটি মেডিকেল কলেজের ওই শিক্ষার্থীর বাড়ি ওডিশা প্রদেশের জলেশ্বর এলাকায়। শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনি এক বন্ধুর সঙ্গে বাইরে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন। কলেজের গেটের কাছে কয়েকজন ব্যক্তি তাদের পথরোধ করেন। পরে ওই তরুণীকে জোর করে পাশের জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন তারা।

২৩ বছর বয়সী ওই শিক্ষার্থীর বাবা বলেছেন, তার মেয়ের সঙ্গে থাকা বন্ধু পালিয়ে গেছে এবং সেও এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন বলে সন্দেহ করছেন তারা।

পুলিশের কাছে করা অভিযোগে ভুক্তভোগী তরুণীর বাবা বলেছেন, সঙ্গে থাকা বন্ধু ভুল বুঝিয়ে তার মেয়েকে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়েছিল। তিনি বলেন, ধর্ষকরা তার মেয়ের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়েছেন। এ সময় তার কাছ থেকে ৫ হাজার রুপিও কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

পরে ওই শিক্ষার্থীকে দুর্গাপুরের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা বলেছেন, ধর্ষণের শিকার তরুণীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছেন, এই ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে এবং ভুক্তভোগীর বন্ধুসহ একাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীর জবানবন্দিও রেকর্ড করা হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের নারী ও শিশু উন্নয়নমন্ত্রী এবং তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী শশী পান্জা বলেন, ‌‌বর্তমানে ওই শিক্ষার্থী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার মানসিক কাউন্সেলিং করা হবে। অভিভাবকরা পুলিশি তদন্তের ওপর আস্থা রেখেছেন। এ ধরনের অপরাধকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা উচিত নয়। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিজেপি সব সময় এসব ঘটনায় রাজনীতি খোঁজে।

দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে ঘটনার বিস্তারিত প্রতিবেদন চেয়েছে। জাতীয় নারী কমিশনের (এনসিডব্লিউ) একটি প্রতিনিধি দল দুর্গাপুরে গিয়ে ভুক্তভোগী ও তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করবে।

এনসিডব্লিউর সদস্য অর্চনা মজুমদার বলেন, বাংলায় নারীর বিরুদ্ধে অপরাধ বাড়ছে। পুলিশ এসব ঘটনায় আগাম কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানাব, তিনি যেন এসব অপরাধ দমনে সক্রিয় ভূমিকা নেন।

চলতি বছরের জুলাইয়ে কলকাতার কসবার সাউথ কলকাতা ল কলেজের ভেতরে আইনের এক শিক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় সাবেক এক শিক্ষার্থীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গত বছরের আগস্টে কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ৩১ বছর বয়সী এক নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ-প্রতিবাদ শুরু হয়। ওই ঘটনায় পুলিশের স্বেচ্ছাসেবী কর্মী সঞ্জয় রায়কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরবর্তীতে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

শীর্ষনিউজ