
ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে ঘোষিত যুদ্ধবিরতির পর গাজায় শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যেকোনো আন্তর্জাতিক মিশনে যোগ দিতে প্রস্তুত তুরস্কের সেনাবাহিনী। শুক্রবার তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। দেশটির গণমাধ্যম ডেইলি সাবাহ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান ঘোষণা দেন যে আঙ্কারা যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন ও পর্যবেক্ষণের জন্য একটি আন্তর্জাতিক টাস্ক ফোর্সে অংশ নেবে। তার পরদিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, তুর্কি সশস্ত্র বাহিনী (টিএসকে) “অর্পিত যেকোনো দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ প্রস্তুত” এবং তারা যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সূত্র জানায়,“বিভিন্ন অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বহু আন্তর্জাতিক মিশনে অংশ নিয়েছে তুর্কি সেনারা। তাদের পেশাদারিত্ব ও নিরপেক্ষতার কারণে সকল পক্ষের শ্রদ্ধা অর্জন করেছে তারা।”
গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জেকি আকতুর্ক বলেন, “গাজায় দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা ধ্বংসাত্মক সংঘাতের অবসান ঘটাতে যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে, আমরা তা আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই। এই যুদ্ধবিরতি স্থায়ী শান্তির পথ খুলে দেবে বলে আমরা আশা করি।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা আনন্দিত যে তুরস্কের মধ্যস্থতার প্রচেষ্টার ফলে গাজায় যুদ্ধবিরতি সম্ভব হয়েছে। এখন সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো অবিলম্বে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া, কারণ গাজা দুই বছর ধরে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের মুখে রয়েছে।”
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, তুরস্ক যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের পাশাপাশি টেকসই শান্তি নিশ্চিতের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে। দেশটি আশা করছে, এই যুদ্ধবিরতি একটি ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি “দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান”-এর পথে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
এছাড়া সিরিয়ার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তুর্কি প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা বলেন, সিরিয়ার সাম্প্রতিক নির্বাচন দেশটির ঐক্য ও স্থিতিশীলতার জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ। তবে তারা সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর উপর এসডিএফ (SDF)-এর আক্রমণের সমালোচনা করে বলেন, এই গোষ্ঠী “১০ মার্চ ২০২৫ সালের দামেস্ক চুক্তি লঙ্ঘন করেছে।”
কর্মকর্তারা আরও জানান, আঙ্কারা সিরিয়ায় ‘এক রাষ্ট্র, এক সেনাবাহিনী’ নীতিতে অটল থাকবে এবং পিকেকে-সমর্থিত এসডিএফের কর্মকাণ্ড নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
তুর্কি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য অনুযায়ী, গাজায় শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ তুরস্কের আন্তর্জাতিক মানবিক দায়িত্বেরই অংশ, যার লক্ষ্য “আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও ন্যায়ের ভিত্তিতে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা।”