
উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একটি সামরিক কুচকাওয়াজে দেশটির সর্বশেষ ও ‘সবচেয়ে শক্তিশালী’ আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) উন্মোচন করা হয়েছে। কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সির (কেসিএনএ) বরাত দিয়ে করা এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়েছে আল-জাজিরা।
গতকাল শুক্রবার উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে অনুষ্ঠিত কুচকাওয়াজে দেশটির কিছু অত্যাধুনিক অস্ত্র প্রদর্শন করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে- দূরপাল্লার কৌশলগত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন উৎক্ষেপণ যান। তবে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল হোয়াসং-২০ আইসিবিএমকে, যেটিকে কেসিএনএ সামরিক বাহিনীর ‘সবচেয়ে শক্তিশালী পারমাণবিক কৌশলগত অস্ত্র ব্যবস্থা’ হিসাবে বর্ণনা করেছে।
সাম্প্রতিক সময়েই জানা গেছে উত্তর কোরিয়ার বিশাল হোয়াসং-২০-এর অস্তিত্ব। শুক্রবারের কুচকাওয়াজে এটিকে ১১-অ্যাক্সেল লঞ্চার ট্রাকে করে আনা হয়।
হোয়াসং সিরিজের আইসিবিএম উত্তর কোরিয়াকে দূরপাল্লার লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করার সক্ষমতা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, হোয়াসং-২০ একাধিক পারমাণবিক অস্ত্র বহন করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। কিম তার দেশের সেনাবাহিনীকে এটি তৈরি করতে বলেছেন, যাতে তার ক্ষেপণাস্ত্র শত্রু দেশের একদম গভীরে গিয়ে আঘাত হানতে পারে।
উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতিষ্ঠার ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে কুচকাওয়াজের পর কিম একটি বক্তৃতা দেন। সেই বক্তব্যে তিনি উত্তর কোরিয়াকে ‘সমাজতান্ত্রিক শক্তির বিশ্বস্ত সদস্য’ এবং পশ্চিমা আধিপত্যের হুমকির মুখে ‘স্বাধীনতার জন্য একটি দুর্গ’ বলে অভিহিত করেন।
কিম বলেন, ‘আজ আমরা বিশ্বের সামনে একটি শক্তিশালী জাতি হিসেবে দাঁড়িয়ে আছি। এমন কোনো বাধা নেই যা আমরা অতিক্রম করতে পারব না এবং এমন কোনো অর্জন নেই যা আমরা পূর্ণ করতে পারব না।’
অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পিয়ংইয়ংয়ে আসা বিদেশি বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের উপ-প্রধান এবং ভ্লাদিমির পুতিনের একজন গুরুত্বপূর্ণ মিত্র দিমিত্রি মেদভেদেভ। কিমের সাথে সাক্ষাৎ করে মেদভেদেভ ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের প্রতি উত্তর কোরিয়ার সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
জবাবে কিম মেদভেদেভকে রাশিয়ার সাথে সহযোগিতা জোরদার করার এবং সাধারণ লক্ষ্য অর্জনের জন্য বিভিন্ন বিষয়ে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত থাকার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।