
প্রতিবেদনে করিম খানের বিশেষ সহকারী টমাস লিঞ্চের ভূমিকার ওপর আলোকপাত করা হয়েছে। 'নিউ ইয়র্কার' সন্দেহ প্রকাশ করেছে যে, লিঞ্চ বা তার ঘনিষ্ঠ কেউ তদন্তকারীদের কাছে দেয়া তার নিজের চার পাতার বিবৃতির তথ্য ফাঁস করার পেছনে ভূমিকা রাখতে পারে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান প্রসিকিউটর করিম খানের বিরুদ্ধে যৌন অসদাচরণের অভিযোগ এবং সে সংক্রান্ত তদন্তকে ঘিরে নতুন চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে 'নিউ ইয়র্কার' পত্রিকার সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে। এ অভিযোগের জেরে গাজায় ইজরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ তদন্তের প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে করিম খানের বিশেষ সহকারী টমাস লিঞ্চের ভূমিকার ওপর আলোকপাত করা হয়েছে। লিঞ্চকে ইজরায়েলের সঙ্গে ফিলিস্তিনে যুদ্ধাপরাধ সংক্রান্ত তদন্তের বিষয়ে যোগাযোগ রক্ষার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। 'নিউ ইয়র্কার' সন্দেহ প্রকাশ করেছে যে, লিঞ্চ বা তার ঘনিষ্ঠ কেউ তদন্তকারীদের কাছে দেয়া তার নিজের চার পাতার বিবৃতির তথ্য ফাঁস করার পেছনে ভূমিকা রাখতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একটি বেনামি ই-মেইল অ্যাকাউন্ট থেকে সাংবাদিকদের কাছে করিম খানের বিরুদ্ধে কিছু তথ্য ফাঁস করা হয়। ই-মেইলে 'মিথ্যে' দাবি করা হয়েছিল যে, খান আগাম ব্যবস্থা হিসেবে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের বিরুদ্ধে তাকে হুমকি ও ব্ল্যাকমেল করার অভিযোগ করেছেন। ই-মেইলটি আবার মোসাদের পক্ষেই কথা বলেছিল এবং খান ‘কাভার আপ স্টোরি’ বানাচ্ছেন বলেও সেখানে দাবি করা হয়।

ই-মেইলটিতে লিঞ্চ, অভিযোগকারী নারী এবং আইসিসির আরো কয়েকজনের নাম ও ফোন নম্বর ছিল। কিছু নম্বরের পাশে হিব্রু ভাষায় ‘টেলিফোন’ শব্দটি লেখা ছিল।
মার্কিন গণমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের বিপরীত তথ্য দিয়ে নিউ ইয়র্কার জানিয়েছে, ওই নারী সহকর্মী অভ্যন্তরীণভাবে ইসরায়েলি নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে খানকে ‘ধীরে’ চলার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তবে তিনি দাবি করেছেন যে, তার অভিযোগের সঙ্গে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে তদন্তের কোনো সম্পর্ক নেই।
যোগাযোগ রেকর্ডের ভিত্তিতে নিউ ইয়র্কার জানিয়েছে, একটি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে অভিযোগ সম্পর্কে পোস্ট প্রকাশের মাত্র ৯০ মিনিট আগে লিঞ্চ অভিযোগকারীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তবে লিঞ্চ এই তথ্য ফাঁসের ঘটনায় নিজের দায় স্বীকার করেননি।
প্রতিবেদনে করিম খানের অফিসিয়াল নোটের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ব্রিটেনের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন খানকে সতর্ক করে বলেছিলেন যে, ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা চাওয়াটা হবে হাইড্রোজেন বোমা ফেলার সমতুল্য। আরেক ব্রিটিশ-ইসরায়েলি আইনজীবী তাকে হুমকি দিয়েছিলেন, ‘তারা আপনাকে এবং আদালতকে ধ্বংস করে দেবে’।
করিম খান সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং মে মাসে জাতিসংঘের স্বাধীন তদন্তের ফলাফলের অপেক্ষায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে গেছেন। নিউ ইয়র্কার বলেছে, এই অভিযোগের করিম খানের অনুপস্থিতি এরইমধ্যে গাজায় ইজরায়েলের হত্যাকাণ্ডের জন্য তাদের জবাবদিহি করার প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করেছে।