
মাদাগাস্কারে বিদ্যুৎ ও পানির সংকট নিয়ে তরুণদের বিক্ষোভের জেরে সরকার ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোয়েলিনা। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে তিনি বলেন, সরকারি দায়িত্ব যদি কেউ যথাযথভাবে পালন না করে থাকে, তার জন্য আমরা দায় স্বীকার করছি এবং দুঃখ প্রকাশ করছি।
গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া এ আন্দোলনকে বলা হচ্ছে 'জেন-জেড বিক্ষোভ'। এতে হাজারো তরুণ রাজধানী আন্তানানারিভোসহ দেশের বিভিন্ন শহরে নেমে আসে। তাদের স্লোগান ছিল, আমরা বাঁচতে চাই। জাতিসংঘ জানিয়েছে, বিক্ষোভ দমনের সময় নিরাপত্তা বাহিনীর দমন-পীড়নে অন্তত ২২ জন নিহত এবং ১০০ জন আহত হয়েছেন। জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার টুর্ক এ ঘটনায় অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের নিন্দা করে আটক বিক্ষোভকারীদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে আহ্বান জানান।
তবে মাদাগাস্কারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জাতিসংঘের পরিসংখ্যানকে গুজব বা ভ্রান্ত তথ্যনির্ভর বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।
আন্তানানারিভোতে সহিংসতা ও লুটপাট ছড়িয়ে পড়ার পর সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়। পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাস ছুড়ে ভিড় ছত্রভঙ্গ করে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, এক দুজন মন্ত্রী নয়, পুরো সরকারকেই পদত্যাগ করতে হবে।
প্রেসিডেন্ট রাজোয়েলিনা সোমবার জানান, প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে, তবে নতুন সরকার গঠনের আগ পর্যন্ত বর্তমান মন্ত্রীরা অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি আরও বলেন, নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের আবেদন তিন দিনের মধ্যে গ্রহণ করা হবে এবং তরুণদের সঙ্গে আলোচনায় বসারও আগ্রহ রয়েছে তার। এ বিক্ষোভে বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে, তবে আন্দোলনকারীরা দাবি করেছে, তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে ভাড়াটে লোকজনকে লুটপাট ও ভাঙচুরে নিয়োজিত করা হয়েছে।
মাদাগাস্কার ১৯৬০ সালে স্বাধীনতার পর থেকে একাধিক গণ-অভ্যুত্থানের মুখোমুখি হয়েছে। ২০০৯ সালে রাজোয়েলিনা নিজেও এক গণবিক্ষোভের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেন। এবারের আন্দোলনকে ২০২৩ সালে তার তৃতীয় মেয়াদে পুনর্নির্বাচনের পর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে।