
সম্প্রতি কাতারে ইসরায়েলি হামলার পর দেশটির সামরিক প্রতিক্রিয়া নিয়ে নানা জল্পনা চলছে। ইসরায়েল ঘোষণা দিয়েছে যে, বিশ্বের যেকোনো প্রান্তেই তাদের শত্রুরা লুকিয়ে থাকুক না কেন, তারা হামলা চালাবে। এই পরিস্থিতিতে কাতার পাল্টা সামরিক পদক্ষেপ নেবে, নাকি কূটনৈতিকভাবে এর প্রতিবাদ জানাবে, তা নিয়ে চলছে আলোচনা।
কাতারের সম্ভাব্য পদক্ষেপ
আন্তর্জাতিক গবেষকরা মনে করছেন, কাতার এই মুহূর্তে কোনো সামরিক প্রতিক্রিয়া দেখাবে না। বরং দেশটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে নিয়ে ইসরায়েলের ওপর অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে। লন্ডনভিত্তিক থিংক ট্যাংক 'চ্যাথাম হাউজ'-এর মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা বিষয়ক পরিচালক সানাম ওয়াকিল ডয়চে ভেলেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, উপসাগরীয় দেশগুলো জানে যে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের অংশীদারিত্ব অর্থনৈতিক এবং নিরাপত্তার দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই মুহূর্তে এই সম্পর্কে কোনো ফাটল ধরবে না।
ইউরোপীয় কাউন্সিল ফর ফরেন রিলেশনসের গবেষণা ফেলো হিউ লোভার্ট সন্দেহ প্রকাশ করেছেন যে, বর্তমান পরিস্থিতি কাতার এবং ইসরায়েলকে একটি শত্রুভাবাপন্ন সম্পর্কের দিকে ঠেলে দেবে। তবে কাতার তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সামরিক প্রতিশোধ নিতে প্রস্তুত নয়। তারা মনে করে, ইসরায়েলকে প্রতিহত করতে হলে আরও শক্তিশালীভাবেই তা করতে হবে।
হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা
কাতারে অবস্থিত আল-উদেইদ মার্কিন সামরিক ঘাঁটিটি এই অঞ্চলের বৃহত্তম। এখানে মার্কিন বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও রয়েছে। তা সত্ত্বেও, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন যে তিনি জানতেন না ইসরায়েল কাতারে হামলা চালাবে। যদি ট্রাম্প সত্যিই এই বিষয়ে জানতেন, তাহলে এটি যুক্তরাষ্ট্র ও উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে নিরাপত্তা অংশীদারিত্বকে সরাসরি আঘাত করবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন।
ইসরায়েলের উদ্দেশ্য
বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েলের সাহস বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ হলো আরব বিশ্বের সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ গড়ে না তোলা। ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্বের সুযোগ নিয়েছে ধুরন্ধর ইসরায়েল। দীর্ঘদিন ধরে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করে আসছে কাতার। ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র—দুই শত্রু দেশের সঙ্গেই দোহা বন্ধুত্ব বজায় রেখেছে। অথচ সেই কাতারে হামলা চালিয়ে ইসরায়েল বিশ্বকে বিস্মিত করে দিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, আঞ্চলিক দেশগুলোর উচিত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একসাথে দাঁড়ানো।