গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি বিনিময় নিয়ে আলোচনা ‘শেষ পর্যায়ে’ রয়েছে বলে জানিয়েছে কাতার। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি বলেছেন, আমরা আশাবাদী খুব শিগগির একটি চুক্তিতে পৌঁছানো যাবে। তবে চূড়ান্ত ঘোষণা না আসা পর্যন্ত বেশি উত্তেজিত হওয়া ঠিক হবে না।
গাজায় হামাসের ৭ অক্টোবরের আক্রমণ এবং তার পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মিসর এবং কাতার একযোগে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মঙ্গলবার শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে এই বিষয়ে বৈঠকে বসেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, চুক্তিটি চূড়ান্ত হওয়ার অপেক্ষায়। এখন বল হামাসের কোর্টে। অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি দুই পক্ষকেই নমনীয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
ইসরায়েলি গণমাধ্যম এবং আলোচনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, প্রাথমিক পর্যায়ে ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হতে পারে। এর বিনিময়ে হামাসের তরফ থেকে প্রায় ১,০০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া চুক্তির প্রথম ধাপ কার্যকরের সময় ইসরায়েল গাজার ভেতরে একটি বাফার জোন রক্ষা করবে।
হামাস জানিয়েছে, তারা একটি ‘স্পষ্ট ও বিস্তৃত চুক্তি’র আশা করছে এবং এই অগ্রগতির বিষয়ে অন্যান্য ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলোকে জানিয়েছে।
ইসরায়েলের তথ্য অনুযায়ী, হামাসের আক্রমণে ১,২১০ জন নিহত হন, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক। অন্যদিকে, গাজায় ইসরায়েলের পাল্টা অভিযানে এখন পর্যন্ত ৪৬,৬৪৫ জন নিহত হয়েছেন বলে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য জানিয়েছে। এই মানবিক সংকটে যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকার মানুষ শান্তির জন্য উদগ্রীব।
গাজার খান ইউনিস শহরের বাসিন্দা উম ইব্রাহিম আবু সুলতান বলেন, এই যুদ্ধে আমি সবকিছু হারিয়েছি। আমি যুদ্ধবিরতির অপেক্ষায় রয়েছি। শান্তি এলে আমি দিনের পর দিন কাঁদব।
যদিও নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভার অনেক সদস্য চুক্তির পক্ষে রয়েছেন, তবে উগ্র-ডানপন্থী জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গেভির এবং অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ এ চুক্তির বিরোধিতা করেছেন। স্মোত্রিচ একে ‘ধ্বংসাত্মক চুক্তি’ বলে অভিহিত করেছেন।
যুদ্ধের ভয়াবহতা, রাজনৈতিক মতপার্থক্য এবং মানবিক সংকটের মধ্যে এই চুক্তি সম্পন্ন হলে তা গাজা এবং ইসরায়েলের জন্য এক নতুন অধ্যায় শুরু করবে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
বিডিপ্রতিদিন