Image description

সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে তারা। সংস্থাটিও নিশ্চিত করেছে পুলিশের গুলিতে এক ডজনের বেশি বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। এক বিবৃতিতে আন্দোলনকারীদেরও সহিংস না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে এনএইচআরসি। বলেছে,  নেপালের সংবিধান এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী যেকোনো ব্যক্তির শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের অধিকার রয়েছে। তবে এক্ষেত্রে বিক্ষোভকারীদের সহিংস হওয়া এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অতিরিক্ত বল প্রয়োগ থেকে বিরত থাকতে হবে। 

আন্দোলনের সূত্রপাত যেভাবে: স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সোমবার সকাল ৯টা থেকে শুরু হয় তরুণদের নজিরবিহীন এই আন্দোলন। রাজধানীর মৈতীঘর মণ্ডলা এলাকায় জমায়েত হন বিক্ষোভকারীরা। এই এলাকাটি কাঠমান্ডুর প্রতীকী স্মৃতিস্তম্ভ এবং গুরুত্বপূর্ণ সড়কের সংযোগস্থল। মূলত এই স্থান থেকেই ছড়িয়ে পড়ে আন্দোলনের ঢেউ।  যা এক পর্যায়ে পৌঁছে যায় দেশটির সংসদ ভবনের সামনে নিউ বাণেশ্বর এলাকায়। এই আন্দোলনের মূল কারণ সরকারের ক্রমবর্ধমান দুর্নীতি, জবাবদিহিতার অভাব এবং তরুণদের রাজনৈতিক ও সামাজিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশগ্রহণ থেকে বঞ্চিত করা। আন্দোলনটি সংগঠিত করে ‘হামি নেপাল’ নামের একটি যুবসংগঠন। যারা ২০১৫ সাল থেকে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আয়ুষ বাস্যাল বলেন, সামপ্রতিক বছরগুলোতে দুর্নীতির যত তদন্ত হয়, তা পার্লামেন্টে আলোচনা হয়, কিন্তু কোনোটিরই সন্তোষজনক সমাধান হয় না। তা নিয়েই ক্ষোভ জন্ম নিয়েছে। বিশেষ করে ২০১৭ সালের একটি বিমান চুক্তির দুর্নীতির ঘটনা এবং সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনীতিবিদদের সন্তানদের বিলাসী জীবনযাপনের ছবি যখন টিকটকে ছড়িয়ে পড়ে, তখন তরুণদের ক্ষোভ চরমে ওঠে। একইসঙ্গে, সরকারের ৪ঠা সেপ্টেম্বর ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তও এই ক্ষোভে ঘি ঢেলেছে। প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি আন্দোলন শুরু হওয়ার আগেই মন্তব্য করেন, মানুষ নিজেরাই স্বাধীন না, চিন্তাও স্বাধীন না, আবার স্বাধীনতার কথা বলছে। তার এই মন্তব্যকে আন্দোলনকারীরা অপমানজনক ও স্বৈরাচারী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ বলে আখ্যায়িত করেছেন। পোখারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা অনুষদের সহকারী অধ্যাপক যোগ রাজ লামিচানে বলেন, এই আন্দোলন শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদ নয়, এটি দীর্ঘদিনের অবহেলা ও তরুণদের মত প্রকাশের অধিকার হরণ করার প্রতিক্রিয়া। তিনি আরও বলেন, তরুণরা সুশাসন, জবাবদিহি ও ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছে। তারা আর সহ্য করবে না।