
ফ্রান্সের পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে পদচ্যুত হয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরু। সোমবার (০৮ সেপ্টেম্বর) তাকে অপসারণ করার পক্ষে ভোট দিয়েছেন ফরাসি পার্লামেন্টের বেশির ভাগ সদস্য।
প্রধানমন্ত্রী বাইরুকে পরাজিত করতে তার বিপক্ষে ভোট পড়েছে ৩৬৪টি। অপরদিকে তাকে প্রধানমন্ত্রী পদে রাখার পক্ষে ভোট দিয়েছেন পার্লামেন্টের ১৯৪ জন সদস্য।
এই পরাজয়ের অর্থ হলো, মঙ্গলবার বাইরু তার সরকারের পদত্যাগপত্র প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর কাছে জমা দেবেন। প্রেসিডেন্টের দপ্তর জানিয়েছে, নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের বিষয়টি আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই হবে।
এভাবে ফ্রান্স দুই বছরেরও কম সময়ে পঞ্চম প্রধানমন্ত্রীর দিকে এগোচ্ছে। এটি একটি হতাশাজনক রেকর্ড, যা প্রেসিডেন্ট মাখোঁর দ্বিতীয় মেয়াদের ভেতরে ছড়িয়ে থাকা অচলাবস্থা ও হতাশাকে স্পষ্ট করে।
বাইরুর পতন ঘটে যখন তিনি তার সরকারকে দাঁড় করান জরুরি আস্থা ভোটে, যেখানে মূল বিষয় ছিল ফ্রান্সের ঋণ।
তিনি সারা গ্রীষ্মকাল ধরে ভাষণ, সাক্ষাৎকার ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বারবার সতর্ক করেছিলেন যে, ফ্রান্স যদি তার ৩.৪ ট্রিলিয়ন ইউরোর দায় শোধে উদ্যোগ না নেয় তবে দেশটি ‘অস্তিত্ব সংকটে’ পড়বে।
কিন্তু তার এই আর্থিক বিপর্যয়ের ভবিষ্যদ্বাণী রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে প্রভাবিত করতে ব্যর্থ হয়। জাতীয় পরিষদে কোনো সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায়, বামপন্থী ও কট্টর-ডানপন্থীরা এক হয়ে তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। আর এতেই তার ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে যায়।
কেউ কেউ ধারণা করছেন, এবার মাখোঁ হয়তো একজন বামপন্থী প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেবেন, যেহেতু আগে তিনি রক্ষণশীল বার্নিয়ে ও মধ্যপন্থী বাইরুকে দিয়ে চেষ্টা করেছেন। তবে সমাজতান্ত্রিক দল (পিএস) স্পষ্ট জানিয়েছে, তারা মাখোঁর ব্যবসাবান্ধব নীতির সঙ্গে কোনোভাবেই চলতে রাজি নয়।
ফলে আপাতত মনে হচ্ছে, মাখোঁ তার নিজের রাজনৈতিক শিবির থেকেই নতুন প্রধানমন্ত্রী খুঁজবেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেবাস্তিয়ান লেকর্নু, শ্রমমন্ত্রী ক্যাথেরিন ভোট্রা ও অর্থমন্ত্রী এরিক লম্বারের নাম আলোচনায় রয়েছে।