
মার্কিন বাহিনীর সম্ভাব্য হামলা মোকাবেলায় সীমান্তে আরও শক্তি বাড়িয়েছে ভেনেজুয়েলা। কলম্বিয়া সীমান্ত ও ক্যারিবীয় উপকূলে মোতায়েন করা হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার সেনা। দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো জানিয়েছেন, মাতৃভূমি রক্ষায় তাঁর সেনারা সশস্ত্র সংগ্রামের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত।
মাদুরো বলেন, শত্রুর কোনো ভুল পদক্ষেপ ঘটলেই মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়বে ভেনেজুয়েলার সেনারা। আমেরিকাকে সতর্ক করে তিনি আরও জানান, জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য ভেনেজুয়েলা সর্বোচ্চ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
এদিকে মাদকবিরোধী অভিযানের অজুহাতে ক্যারিবীয় ও লাতিন আমেরিকায় সামরিক শক্তি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মাদক কারবারীদের টার্গেট করে নানা পরিকল্পনা করেছিলেন, এমনকি ভেনেজুয়েলার ভূখণ্ডে হামলার কথাও বিবেচনা করেছিলেন। বিশ্লেষকদের মতে, এটি মূলত মাদুরোর সরকারকে দুর্বল করার একটি বৃহত্তর কৌশলের অংশ।
তবে মাদুরো এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাঁর দাবি, যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে ২০০৩ সালে ইরাকে গণবিধ্বংসী অস্ত্রের কাল্পনিক অভিযোগ তুলে হামলা চালিয়েছিল, তেমনি ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধেও এখন মাদক পাচারের অজুহাত তৈরি করছে। তিনি বলেন, “ভেনেজুয়েলায় কোনো কোকেন চাষ বা উৎপাদন হয় না। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ।”
পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে কলম্বিয়া সীমান্ত ও ক্যারিবীয় উপকূলে সেনা মোতায়েন করেছেন মাদুরো। তিনি জানান, সেনা মোতায়নের প্রধান উদ্দেশ্য নিরাপত্তা ও শান্তি নিশ্চিত করা। তবে প্রয়োজনে তাঁর বাহিনী আক্রমণ প্রতিহত করতেও প্রস্তুত।
ভেনেজুয়েলার বিমানবাহিনীও শক্তি প্রদর্শন করেছে। মার্কিন যুদ্ধজাহাজের কাছাকাছি এলাকায় উড়ে গিয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে তাদের যুদ্ধবিমান। মাদুরো বলেন, “ভেনেজুয়েলানরা নিজেদের আইন ও সার্বভৌমত্বের মধ্যে আছে। এই ভূমিতে কেউ হাত দিতে পারবে না।”
তবে যুদ্ধ প্রস্তুতি নেওয়ার পাশাপাশি আলোচনার দ্বারও খোলা রেখেছে ভেনেজুয়েলা। মাদুরো জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভেনেজুয়েলার মধ্যে মতবিরোধ থাকলেও তার কারণে সামরিক সংঘাত হওয়া উচিত নয়। তিনি ওয়াশিংটনের প্রতি বেপরোয়া পরিকল্পনা থেকে সরে এসে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন।