
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কঠোর হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে ফিলিস্তিনের গাজার দিকে এগিয়ে চলেছে শতাধিক জাহাজের একটি নৌবহর, যার নাম 'সুমুদ ফ্লোটিলা'। এই কাফেলায় অংশ নিয়েছেন সুইডিশ পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি মান্ডলা ম্যান্ডেলা, গেম অফ থ্রোন্স তারকা লিয়াম কানিংহামসহ ৫০টিরও বেশি দেশের বিভিন্ন পেশার মানুষ।
অভিযানের লক্ষ্য ও যাত্রা
এই বহরের মূল উদ্দেশ্য হলো গাজার অবরুদ্ধ মানুষের কাছে মানবিক সহায়তা, খাদ্য এবং ওষুধ পৌঁছে দেওয়া। কয়েকশো মানুষকে বহনকারী এই ফ্লোটিলা বিশ্বাস করে যে, তারা ঝড়-ঝঞ্ঝা পেরিয়ে গাজার অবরোধ ভেঙে ফেলতে সক্ষম হবে।
যাত্রাটি শুরু হয়েছিল স্পেনের বার্সেলোনার বন্দর থেকে, যেখানে হাজার হাজার মানুষ এই কাফেলাকে বিদায় জানাতে জড়ো হয়েছিলেন। তিউনিশিয়া থেকে আরও কয়েক ডজন জাহাজ এই বহরে যুক্ত হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ফ্লোটিলা লিবিয়া ও মিশরের আন্তর্জাতিক জলসীমা অতিক্রম করে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে গাজায় পৌঁছাবে।
পূর্ববর্তী প্রচেষ্টা ও বর্তমান সংহতি
এর আগে মানবাধিকার কর্মীরা দুইবার ত্রাণবাহী জাহাজ নিয়ে গাজা উপত্যকায় যাওয়ার চেষ্টা করলেও ইসরায়েলি বাহিনীর কারণে তা সম্ভব হয়নি। কিন্তু এবারের চিত্র ভিন্ন। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে ১০০টিরও বেশি ত্রাণবাহী জাহাজ নেতানিয়াহুর অবরোধ ভাঙার দৃঢ় সংকল্প নিয়ে এগিয়ে চলছে।
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় আছেন পর্তুগালের বামপন্থী রাজনীতিবিদ মারিয়ানা মরটাগুয়া, স্পেনের অভিনেতা এডোয়ার্ড ফার্নান্দেজসহ ৪৪টি দেশের প্রতিনিধি। সংস্থাটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিরাপত্তার কারণে নির্দিষ্ট জাহাজ ও বন্দরের তথ্য গোপন রাখা হয়েছে। এই বহর প্রায় ১৬২০ নটিক্যাল মাইল পথ পাড়ি দেবে এবং যাত্রীরা ইসরায়েলি বাহিনীকে মোকাবিলার জন্য দুই দিনের প্রশিক্ষণও নিয়েছেন।
এর আগে ব্রিটিশ পতাকাবাহী 'ম্যাডলিন' নামের একটি জাহাজে করে ত্রাণ নিয়ে গাজার দিকে রওনা হয়েছিলেন গ্রেটা থুনবার্গ। সেই জাহাজটিও ইসরায়েলি নৌ সেনারা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিল।
বর্তমানে গাজায় নেতানিয়াহুর দখলদার সেনারা আগ্রাসন চালাচ্ছে এবং সেখানকার নিরীহ মানুষ চরম ক্ষুধা ও দুর্ভিক্ষের সঙ্গে লড়াই করছে। এমন পরিস্থিতিতে ফ্লোটিলা স্থল ও বিমান রুটে নিরাপত্তাহীনতার কারণে সমুদ্রপথে জরুরি সামগ্রী নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।