Image description

কর সংক্রান্ত এক বিতর্কের জেরে যুক্তরাজ্যের উপ-প্রধানমন্ত্রী অ্যাঞ্জেলা রেইনার শুক্রবার পদত্যাগ করেছেন। তার সাম্প্রতিক বাড়ি কেনার ঘটনায় হওয়া স্বাধীন তদন্তে তিনি মন্ত্রীদের জন্য নির্ধারিত নৈতিক মানদণ্ড পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন বলে প্রমাণিত হয়।

৮ লাখ পাউন্ড মূল্যের অ্যাপার্টমেন্ট কেনায় কর বাকি

রেইনার চলতি গ্রীষ্মে হোভ শহরে প্রায় ৮ লাখ পাউন্ড মূল্যের একটি অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছিলেন। কিন্তু তদন্তে উঠে আসে, তিনি সঠিক স্ট্যাম্প ডিউটি কর পরিশোধ করেননি। কর ঘাটতির পরিমাণ ধরা হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার পাউন্ড।

বিষয়টি নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হলে রেইনার নিজেই স্বাধীন উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাসের কাছে তদন্তের জন্য নিজেকে উপস্থাপন করেন। তদন্তে দেখা যায়, তিনি সৎ উদ্দেশ্যে কাজ করলেও মন্ত্রীদের আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন।

পদত্যাগপত্রে দায় স্বীকার

প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের কাছে জমা দেওয়া পদত্যাগপত্রে রেইনার পুরো দায় স্বীকার করেন। তিনি লিখেছেন, যদিও তিনি ‘গুড ফেইথে’ কাজ করেছিলেন, তবুও এ ধরনের বড় আর্থিক লেনদেনে তাকে আরও নির্দিষ্ট কর পরামর্শ নেওয়া উচিত ছিল।

রেইনার ব্যক্তিগত সমস্যার কথাও উল্লেখ করেন। তিনি জানান, বিবাহবিচ্ছেদ ও ছেলে সন্তানের দেখাশোনার দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে এই ভুলটি ঘটেছে।

স্টারমারের প্রতিক্রিয়া

রেইনারের পদত্যাগে প্রধানমন্ত্রী স্টারমার গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এক হাতে লেখা চিঠিতে তিনি লেখেন, “আমি তোমার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও রাজনৈতিক সাফল্যের জন্য আন্তরিক প্রশংসা জানাই। আমি সত্যিই দুঃখিত যে তোমার সময় এভাবে শেষ হলো।”

স্টারমার আরও বলেন, রেইনার সঠিক কাজ করেছেন—প্রথমে নিজেকে স্বাধীন উপদেষ্টার কাছে উপস্থাপন করে এবং পরে তার সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে পদত্যাগের মাধ্যমে।

রাজনৈতিক অভিঘাত

রেইনার কর ফাঁকি ও ট্যাক্স এড়ানোর বিরুদ্ধে বরাবরই সোচ্চার ছিলেন। ফলে বিরোধীরা তার পদত্যাগকে কটাক্ষ করে ‘কপটতা’ বলে আখ্যা দিয়েছে। কনজারভেটিভ নেতা কেমি ব্যাডেনক তাকে সরাসরি “ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার” অভিযোগ করেন।

তার পদত্যাগ শুধু সরকার নয়, লেবার পার্টিতেও বড় ধাক্কা তৈরি করেছে। উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং লেবার পার্টির উপ-নেতা—দুই গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে তার সরে দাঁড়ানো নেতৃত্বে শূন্যতা তৈরি করেছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের একজন হিসেবে রেইনারের প্রস্থান লেবারকে কঠিন সময়ে ফেলেছে।

বর্তমানে লেবার পার্টি নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন ও অভ্যন্তরীণ পুনর্গঠনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা স্টারমারের জন্যও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।