Image description

দ্য ওয়্যারের রিপোর্ট

ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (র)-এর সাবেক কর্মকর্তা বিকাশ যাদবের বিরুদ্ধে অজামিনযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে দিল্লির একটি আদালত। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কভিত্তিক খালিস্তানপন্থি আন্দোলনের নেতা গুরপাতওয়ান্ত সিং পান্নুনকে লক্ষ্য করে ‘মার্ডার-ফর-হায়ার’ ষড়যন্ত্র এবং অর্থপাচারের মামলায় যাদবের নাম উঠে আসে। তিনি দিল্লির একটি অপহরণ ও চাঁদাবাজি মামলায় হাজিরা না দেয়ায় এই পদক্ষেপ নেয়া হয়। ভারতের অনলাইন দ্য ওয়্যারে প্রকাশিত এক রিপোর্টে এ কথা বলা হয়েছে। ২৫ আগস্ট পাতিয়ালা হাউস কোর্টের অতিরিক্ত সেশন বিচারক সৌরভ প্রতাপ সিং লালার আদেশে উল্লেখ করা হয়, যাদবকে ‘সকাল থেকে একাধিকবার ডাকা হলেও তিনি আদালতে হাজির হননি।’ আদালত নির্দেশ দেয়, ‘অভিযুক্ত বিকাশ যাদবের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হোক এবং তার জামিনদারের বিরুদ্ধে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সনদ-এর ধারা ৪৯১ অনুযায়ী নোটিশ পাঠানো হোক।’ পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭ই অক্টোবর।

আদালতের নথি অনুযায়ী, যাদবের পরিবারের একজন সদস্য জামিনদার হিসেবে দাঁড়িয়েছিলেন। আগের শুনানিগুলোতে আইনজীবীর আবেদনের ভিত্তিতে তিনি আদালতে উপস্থিতি থেকে ছাড় পেয়েছিলেন। ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে মার্কিন প্রসিকিউটররা ভারতীয় নাগরিক নিখিল গুপ্তর বিরুদ্ধে পান্নুনকে হত্যাচেষ্টা করার অভিযোগ আনে। তাদের দাবি ছিল, তিনি একজন ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তার নির্দেশে কাজ করছিলেন, যাকে তখন শুধু ‘সিসি-১’ নামে উল্লেখ করা হয়। এর তিন সপ্তাহ পর ২০২৩ সালের ১৮ই ডিসেম্বর দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল একটি পৃথক অপহরণ ও চাঁদাবাজির মামলায় যাদবকে গ্রেপ্তার করে। মামলাটি রোহিনির এক বাসিন্দার অভিযোগের ভিত্তিতে দায়ের করা হয়। তিনি চার মাস তিহার জেলে কাটানোর পর ২০২৪ সালের এপ্রিলে জামিন পান। এরপর থেকে তার অবস্থান অজানা। ২০২৪ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র দ্বিতীয় পরিপূরক অভিযোগপত্র প্রকাশ করে। তাতে সিসি-১ হিসেবে বিকাশ যাদবের নাম উল্লেখ করা হয়।

অভিযোগে বলা হয়, তিনি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অধীনে মন্ত্রিপরিষদ সচিবালয়ের একজন কর্মকর্তা ছিলেন। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরবর্তীতে জানায়, যাদব আর সরকারের কর্মচারী নন। এ বছরের শুরুতে ডনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণের পাঁচ দিন আগে, ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায় যে, উচ্চপর্যায়ের সরকারি কমিটি একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে। একইসঙ্গে তারা স্বীকার করে যে কিছু প্রক্রিয়াগত ঘাটতি ছিল, যা সংশোধন করা প্রয়োজন, ইঙ্গিত দেয় যাদব হয়তো স্বতন্ত্রভাবে কাজ করেছিলেন। এদিকে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ১১ আগস্ট রিপোর্ট করে, তদন্তকারীরা দুবাইভিত্তিক মহাদেব অনলাইন বুক বেটিং নেটওয়ার্কের এক সন্দেহভাজন সদস্যের সঙ্গে যাদবের সম্ভাব্য যোগসাজশও খতিয়ে দেখছেন।

অন্যদিকে, মামলার সহ-অভিযুক্ত আবদুল্লাহ খান তার বাবার চিকিৎসার জন্য দুবাই, সিঙ্গাপুর এবং বৃটেন ভ্রমণের উদ্দেশ্যে পাসপোর্ট ফেরতের সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন করেন। আদালত তার আবেদন মঞ্জুর করেছে। উল্লেখ করে যে খান পূর্বেও বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি পেয়েছিলেন এবং কখনও সেই সুযোগের অপব্যবহার করেননি। তার পাসপোর্ট ফেরতের সময়সীমা ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে, যখন মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।