
কাশ্মীরের পেহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলার জেরে গত মে মাসে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে ভারত ও পাকিস্তান। এরপর প্রথমবারের মতো দুই দেশের মধ্যে সরকারি পর্যায়ে বার্তা আদান-প্রদান শুরু হয়েছে। সিন্ধু নদীর পানি বণ্টন নিয়ে ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত ‘সিন্ধু পানি চুক্তি’ অনুযায়ী, সম্ভাব্য বন্যার পূর্বাভাস দিয়ে পাকিস্তানকে সতর্ক করেছে ভারত।
সোমবার সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, রবিবার নয়াদিল্লি ইসলামাবাদকে জানায়, জম্মুর তাওই নদীতে বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।
জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার পাকিস্তান সরকারের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দেয়। এতে বলা হয়, নদীর উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে তাওই নদীতে পানিপ্রবাহ বেড়েছে, যা পাকিস্তানের নিচু অঞ্চলগুলোয় প্লাবনের আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে।
ভারত ও পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে এই দাবি সত্য হলে প্রায় তিন মাস পর দুই দেশের মধ্যে প্রথম বড় ধরনের যোগাযোগ।
এদিকে, ভারতের সতর্কবার্তার পর পাকিস্তান সরকার জনসাধারণকে সতর্ক করেছে। নিচু এলাকা ও নদী-সংলগ্ন অঞ্চলের মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে কাশ্মীরের পেহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। ভারত এ হামলার জন্য সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে এবং পরে সিন্ধু পানি চুক্তির অধীনে চলমান কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। তবে পাকিস্তান সেই অভিযোগ অস্বীকার করে। মে মাসের শুরুতে দুই দেশের মধ্যে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র সামরিক সংঘাত শুরু হয়। পরে ১০ মে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
সিন্ধু পানি চুক্তি কী
১৯৬০ সালের সেপ্টেম্বরে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় ‘সিন্ধু পানি চুক্তি’। এই চুক্তি অনুযায়ী, ভারত সতলজ, বিয়াস ও রাভি নদীর ওপর পূর্ণ অধিকার পায়। অন্যদিকে পাকিস্তান পায় ইন্দুস, ঝিলম ও চেনাব নদীর পানি ব্যবহারের অধিকার।
চুক্তি অনুযায়ী, কোনও পক্ষ একতরফাভাবে পানি সরবরাহ বন্ধ করতে পারে না। যদি কোনও বিরোধ সৃষ্টি হয়, তবে সেটি নিষ্পত্তির জন্য নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ, সালিশি আদালত কিংবা আদালতের মাধ্যমে সমাধান করতে হয়।
বিডি প্রতিদিন