
রাষ্ট্রীয় অর্থ অপব্যবহারের অভিযোগে গ্রেপ্তার শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহেকে কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে রাজধানী কলম্বো ন্যাশনাল হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়েছে।
কলম্বো ন্যাশনাল হাসপাতালের উপ-মহাপরিচালক রুকশান বেল্লানা ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, শুক্রবার রাতে রনিল বিক্রমাসিংহেকে রিমান্ডে পাঠানো হয়। এরপর থেকে তিনি তীব্র পানিশূন্যতায় ভুগছিলেন এবং তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখার প্রয়োজন হয়।
তিনি বলেন, গুরুতর জটিলতা ঠেকাতে তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও তীব্র পানিশূন্যতার চিকিৎসা দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। হাসপাতালে আনার সময় তিনি গুরুতর ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে ভুগছিলেন। এবং বর্তমানে বিক্রমাসিংহের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে বলেও জানান ।
কলম্বোর কারা কর্তৃপক্ষ বলেছে, শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় সাবেক প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহেকে শ্রীলঙ্কার প্রধান সরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। কারাগারের চিকিৎসা কেন্দ্রে তাকে এ ধরনের চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব নয়।
এর আগে, শুক্রবার সকালে সাবেক এই প্রেসিডেন্টকে রাষ্ট্রীয় অর্থ অপব্যবহারের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে কলম্বো পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। পরে কলম্বোর একটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাকে রিমান্ডে পাঠায়।
এএফপি জানিয়েছে, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন কিউবায় জি৭৭ শীর্ষ সম্মেলন থেকে ফেরার পথে যুক্তরাজ্যের লন্ডন গিয়েছিলেন বিক্রমাসিংহে এবং তার স্ত্রী। সেখানে তারা উলভারহ্যাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। তবে এটি একটি ব্যক্তিগত সফর ছিল এবং যার জন্য তিনি সরকারি তহবিলের অপব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ লঙ্কান পুলিশের।
এদিকে শ্রীলঙ্কার বিরোধী দলগুলো অভিযোগ করে বলেছে, আবারও ক্ষমতায় ফিরতে পারেন আশঙ্কায় বর্তমান সরকার রনিল বিক্রমাসিংহেকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।
আদালতে এই অপরাধ প্রমাণিত হলে বিক্রমাসিংহের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ২০ বছরের কারাদণ্ড ও আত্মসাৎকৃত অর্থের তিনগুণ পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
শ্রীলঙ্কার রেকর্ড ছয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী ৭৬ বছর বয়সী বিক্রমাসিংহেকে ২০২২ সালে চরম আর্থিক সংকটের দায়ে রাজাপাকসে সরকারের পতনের পর দ্বীপরাষ্ট্রটির প্রেসিডেন্টের দ্বায়িত্ব নেন। তবে ২০২৪ সালের গত সেপ্টেম্বরে দেশটিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অনুরা কুমারা দিসানায়েকের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন তিনি।