
শিশু ও সাধারণ মানুষকে হত্যা বন্ধে ইসরাইলকে বার্তা উয়েফার । ফিলিস্তিনি গাজা উপত্যকার প্রধান শহর গাজা সিটি দখলের আগে বুধবার দখলদার ইসরাইলের পিশাচবাহিনী শহরটিতে তীব্র হামলা চালিয়েছে।
এদিন তাদের হামলায় গাজায় আরও ১২৩ জন ফিলিস্তিনি শহিদ হয়েছেন বলে ভ‚খÐটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। এটি এক সপ্তাহের মধ্যে গাজায় ২৪ ঘণ্টায় ঘটা সবচেয়ে বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার ঘটনা। ইসরাইল গাজা সিটি ফের দখল করার পরিকল্পনা করেছে। প্রায় দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধর শুরুর দিকেও তারা গাজা সিটি দখল করেছিল, কিন্তু পরে বাহিনী প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। ইসরাইলি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গাজা দখলে নিতে তাদের সম্ভবত আরও কয়েক সপ্তাহ লেগে যাবে। স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, এদিন ইসরাইলি বিমান ও ট্যাঙ্কগুলো গাজা সিটির পূর্বাংশে বোমা ও গোলাবর্ষণ করে। রাতে চালানো বোমা হামলায় গাজা সিটির জেইতুন ও শেজাইয়া এলাকার বহু বাড়ি ধ্বংস হয়। আল-আহলি হাসপাতাল জানিয়েছে, জেইতুনের এক বাড়িতে চালানো বিমান হামলায় ১২ জন নিহত হন। গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসের পূর্বাংশেও ট্যাংক নিয়ে হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। ট্যাংকের গোলাবর্ষণে বেশ কয়েকটি বাড়ি ধ্বংস হয়েছে। ফিলিস্তিনি চিকিৎসা কর্মীরা জানিয়েছেন, গাজার মধ্যাঞ্চলে পৃথক দুটি ঘটনায় ইসরাইলি সেনাদের গুলিতে ত্রাণের খোঁজে আসা নয়জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনা দুটির বিষয়ে ইসরাইলি বাহিনী কোনো মন্তব্য করেনি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ছিটমহলটিতে অনাহার ও অপুষ্টিতে ভুগে তিন শিশুসহ আরও আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এদের নিয়ে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ভ‚খÐটিতে অনাহারে ও অপুষ্টিতে ২৩৯ জনের মৃত্যু হল। এদের মধ্যে ১০৬ জন শিশু। ইসরাইল অনাহার ও অপুষ্টিতে হওয়া এসব মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে। এদিকে, গাজা সিটি এবং দক্ষিণ গাজার রাফাহের কাছে একটি সাহায্য কেন্দ্রে ইসরাইলি হামলায় ভোর থেকে ১০ জন ত্রাণপ্রার্থীসহ কমপক্ষে ২৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আল জাজিরার সংবাদদাতা জানিয়েছেন যে, ছিটমহলের উত্তরের বিশাল অংশ ‘প্রাণহীন মরুভ‚মিতে’ পরিণত হয়েছে।
শিশু ও সাধারণ মানুষকে হত্যা বন্ধে ইসরাইলকে বার্তা উয়েফার : ‘শিশু ও সাধারণ মানুষকে হত্যা করা বন্ধ কর’। গাজায় শিশু অসাধারণ মানুষদের উপর ক্রমাগত হামলার ঘটনা বন্ধ করার আবেদন জানানো হয়েছে ইতালির উদিনের বøুনার্জি স্টেডিয়ামে উয়েফা সুপার কাপের ফাইনালে। ফিলিস্তিন শিশুদের নিয়ে বিশেষ বার্তা দিয়েছেন টটেনহাম ও পিএসজি। দুই দলের খেলোয়াড়রাই খেলা শুরুর আগে মাঠের সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে ব্যানার প্রদর্শন করেন। সেখানেই লেখা ছিল, স্টপ কিলিং চিলড্র্রেন, টপ কিলিং সিভিলিয়ানস।
জানা গিয়েছে, ইউরোপিয়ান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফা ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার দুই শরণার্থী শিশুকেও নিয়ে আসে। উয়েফা সভাপতি আলেক্সান্দার সেফেরিনের পাশে সাদা শার্ট পরিয়ে ২ শিশুকে দাঁড় করানো হয়। ব্যানার প্রদর্শন করার সেই ছবি এক্সে পোস্ট করে লেখা হয়েছে, বার্তাটি স্পষ্ট এবং জোড়াল। উয়েফা জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের পাশাপাশি বিশ্বের যেকোনও জায়গায় যুদ্ধ পরিস্থিতিতে শিশুদের পাশে দাঁড়াতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গাজার শিশুদের অবস্থার কথা চিন্তা করে মানবিক সহায়তার কথা উল্লেখ করা হয়। এবারই প্রথম নয়, এর আগেও উয়েফা আফগানিস্তান, লেবানন, সুদান, সিরিয়া, ইয়েমেন ও ইউক্রেনসহ বিভিন্ন যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলের শিশুদের জন্য সাহায্যের প্রকল্প চালিয়ে আসছে। সুপার কাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আফগানিস্তান, ইরাক, নাইজেরিয়া, ফিলিস্তিন ও ইউক্রেনের শিশুদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সূত্র : রয়টার্স, আল-জাজিরা।