Image description

বিশ্বের শীর্ষ ইউরেনিয়াম উৎপাদনকারী দেশ কাজাখস্তানে প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ শুরু করেছে রাশিয়া। শুক্রবার (৮ আগস্ট) এএফপি জানায়, মধ্য এশিয়ার এই দেশে প্রভাব বিস্তারে প্রতিযোগিতা করছে মস্কো, বেইজিং ও ইউরোপ।

দীর্ঘদিন ধরে কাজাখস্তানে রাশিয়ার প্রভাব বজায় রয়েছে। মস্কো এই অবস্থান ধরে রাখতে চাইলেও চীন তাদের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’-এর অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে।

কাজাখস্তান ও রাশিয়ার পরমাণু সংস্থা যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য উপযুক্ত স্থান নির্ধারণ ও প্রকল্পের নথি প্রস্তুতে ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভে শুরু হয়েছে।

কাজাখস্তানের পরমাণু সংস্থার প্রধান আলমাস আদম সাতকালিয়েভ বলেন, এটি দেশের কৌশলগত সিদ্ধান্ত। প্রকল্পটি সারাদেশে দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চালিকাশক্তি হবে।

কাজাখস্তান কর্তৃপক্ষ জানায়, চীন দেশটিতে আরও দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে প্রস্তুত এবং চলতি বছরের শেষের দিকে বিস্তারিত ঘোষণা দেওয়া হবে।

বিশ্বের মোট ইউরেনিয়াম চাহিদার ৪৩ শতাংশ সরবরাহ করে কাজাখস্তান। ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্যও এটি তৃতীয় বৃহত্তম কাঁচা ইউরেনিয়াম সরবরাহকারী। তবে দেশটিতে বাসাবাড়ির জন্য পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনে ঘাটতি রয়েছে।

সোভিয়েত আমলে পারমাণবিক পরীক্ষায় প্রায় ১৫ লাখ মানুষ তেজস্ক্রিয়তায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কাজাখস্তানে পারমাণবিক বিদ্যুৎ নিয়ে সংবেদনশীলতা রয়েছে।

প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বালখাশ লেকের তীরে অর্ধ-পরিত্যক্ত উলকেন গ্রামের কাছে নির্মাণ হচ্ছে। কাজ সম্পূর্ণ হতে কয়েক বছর সময় লাগবে। রাশিয়ার পরমাণু সংস্থা রোসাটম জানিয়েছে, চুল্লির আয়ুষ্কাল হবে ৬০ বছর, প্রয়োজনে যা আরও ২০ বছর বাড়ানো যাবে।

উল্লেখ্য, রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা রোসাটম বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশে পারমাণবিক প্রকল্প পরিচালনা করছে, যার মধ্যে ভারত, তুরস্ক, মিশর, বাংলাদেশ, চীন ও এখন কাজাখস্তান উল্লেখযোগ্য। নিরাপত্তা মান, প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের কারণে রাশিয়া বৈশ্বিক পারমাণবিক বিদ্যুৎ শিল্পে একটি প্রভাবশালী অবস্থান ধরে রেখেছে।