Image description
 

 ধরুন, হঠাৎ কোনো মরুভূমির প্রান্তে ধুলার ঘূর্ণিতে ভেসে উঠলো এক ধাতব দৈত্য। যার গর্জনে কেঁপে উঠলো আকাশ। সে কোনো গল্পের চরিত্র নয়, বরং ইরানের তৈরি বাস্তব যুদ্ধযন্ত্র—কারর।

ইরানের প্রতিরক্ষা কারিগররা নির্মাণ করেছেন এই আধুনিক ট্যাংক, যার লক্ষ্যবস্তু কোনো কিছুতেই সীমাবদ্ধ নয়—সাজোয়া গাড়ি হোক কিংবা নিরস্ত্র ট্রাক, এই ট্যাংকের সামনে দাঁড়ানোর সাহস নেই কারোরই।

এর ১২৫ মিলিমিটার কামান থেকে ছুটে আসে এমন শেল যা শুধু বর্ম নয়, শক্ত কাঠামোকেও ভেদ করতে সক্ষম। ইরানি সংবাদমাধ্যম পার্স টুডে-এর এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

 

‘কারর’ ট্যাংকের ওজন প্রায় ৫১ টন। বাইরের আবরণে রয়েছে উন্নত কম্পোজিট বিম, যা সুরক্ষিত করে বিস্ফোরক থেকে শুরু করে ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র পর্যন্ত।

 

আর ভেতরের প্রযুক্তি যেন চোখ ধাঁধানো—নাইট ভিশন ক্যামেরা, লেজার টার্গেটিং, ডিজাইনিং ও স্বয়ংক্রিয় লক্ষ্য সমন্বয়ের মতো স্মার্ট অগ্নি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রয়েছে এতে। ফলে রাতের অন্ধকারেও নিখুঁতভাবে আঘাত হানতে পারে এই ট্যাংক।

শুধু আক্রমণ নয়, গতিতেও পিছিয়ে নয় কারর। এটি ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটার গতিতে ছুটতে পারে। এমনকি অসমান পাহাড়ি পথেও চলে স্বাচ্ছন্দ্যে।

ডিজিটাল কমান্ড সিস্টেমের কারণে এটি একাধিক ট্যাংকের সঙ্গে সমন্বয়ে কাজ করতে পারে। এমন সুবিধা আগে কেবল বিশ্বের কয়েকটি প্রযুক্তি নির্ভর শক্তিধর দেশের ট্যাংকেই দেখা যেত।

ইরানের দাবি, আধুনিক যেকোনো হুমকি মোকাবেলার ক্ষমতা রয়েছে এই ট্যাংকের। সেই সাথে ডিজিটাল কমান্ড ও গ্রুপ অপারেশন সিস্টেম আরও উন্নত সমন্বয়ের সুযোগ এনে দেয়।

কারর শুধু একটি ট্যাংক নয়—এটি দেশীয় ডিজাইন, ভারী সাজোয়া সরঞ্জাম তৈরি এবং সেনাবাহিনীর যুদ্ধ সক্ষমতা উন্নত করার ক্ষেত্রে ইরানের প্রতিরক্ষা শিল্পের প্রতিচ্ছবি। এটি বিদেশী অস্ত্রের উপর নির্ভরতা ছেড়ে নিজস্ব প্রযুক্তিতে গড়ে তোলা এমন একটি যুদ্ধযন্ত্র, যা মধ্যপ্রাচ্যের জ্বালাময় ভূখণ্ডে এক ধরনের কৌশলগত আত্মনির্ভরতা প্রকাশ করে।

কাররকে ঘিরে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে তৈরি হয়েছে সামরিক উত্তেজনা। কারণ, এর ভয়াবহতা যিনি একবার দেখেছেন, তিনি জানেন—এই "ফায়ার বিটল" কেবল কামান নয়, এটি বহন করে একটি দেশের আত্মমর্যাদাও।