
ধর্ম অবমাননার অভিযোগে রংপুরের গঙ্গাচড়ার বেতগাড়ি ইউনিয়নের আলদাদপুর বালাপাড়া গ্রামে হামলার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ১২০০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একজন ভুক্তভোগী গঙ্গাচড়া থানায় মামলা করেন। রাত ৯টার দিকে গঙ্গাচড়া মডেল থানার ওসি আল এমরান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, গঙ্গাচড়ায় হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলার ঘটনায় একজন মামলা করেছেন। এতে অজ্ঞাতনামা ১২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে বাদীর নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না।
পুলিশ বলছে, সামাজিক মাধ্যমে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ পেয়ে গত শনিবার রাতে এক কিশোরকে আটক করে থানায় আনা হয়। পরদিন সাইবার সুরক্ষা আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। আদালত তাকে শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠিয়েছেন। ওই কিশোর একটি বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী।
এ ঘটনায় উত্তেজিত জনতা শনিবার রাতে ওই কিশোরের বিচারের দাবিতে মিছিল করে। পরে তার বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। একই সময় আশপাশের কয়েকটি বাড়িতেও হামলা চালায় উত্তেজিত জনতা। পরে রাতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তার আগে, মাইকিং করে সেখানে লোকজন জড়ো করে ওই হিন্দুপল্লীর অন্তত ১৮টি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
এদিকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে রংপুরের গঙ্গাচড়ার বেতগাড়ি ইউনিয়নের আলদাদপুর বালাপাড়া গ্রামে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর মেরামত করে দিচ্ছে প্রশাসন। মঙ্গলবার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িগুলো মেরামত শুরু হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গ্রামে এখনও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখন আর কোনো আতঙ্ক নেই। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি বলেন, অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
এ বিষয়ে গঙ্গাচড়া মডেল থানার ওসি আল এমরান বলেন, বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। সেনাবাহিনী ও পুলিশ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নিয়োজিত রয়েছে। হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাত ১২০০ জনকে। আসামিদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।