
আন্তর্জাতিক মান অনুসরণের মাধ্যমে আড়িপাতা বিষয়টি আইনি কাঠামোভুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এরই অংশ হিসেবে ‘টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন-২০০১’ সংশোধন করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে টেলিযোগাযোগ বিভাগ কিছু মূলনীতি ঠিক করেছে। সে অনুসারে আইনের খসড়া তৈরি করতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি বিটিআরসিকে পাঠানো হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার টেলিযোগাযোগবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের বরাতে এ চিঠি পাঠানো হয়।
এতে বলা হয়, ২০০১ সালের টেলিযোগাযোগ আইন এমনভাবে সংশোধন করতে হবে, যেন আড়িপাতাবিষয়ক প্রক্রিয়াকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী কাঠামোবদ্ধ করা যায়। এ ক্ষেত্রে শুধু নির্দিষ্ট সংস্থা গেটওয়ে হিসেবে কাজ করবে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো বিচারিক অনুমোদন ছাড়া সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারকেও (এনটিএমসি) জবাবদিহির আওতায় রাখতে হবে।
নতুন আইনে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধের বিষয়ে যে কোনো সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগ প্রতিরোধে সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে। এ ক্ষেত্রে ২০০১ সালের আইন পরিমার্জন করে এমন একটি কাঠামো গড়ে তোলা হবে, যেখানে নাগরিকের ডিজিটাল অধিকার রক্ষায় আইনি সুরক্ষা থাকবে।
পূর্ণ ক্ষমতা পাচ্ছে বিটিআরসি
বর্তমানে ট্যারিফ নির্ধারণসহ অনেক বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের পূর্বানুমতি প্রয়োজন হয়, যা ভবিষ্যতে কমিয়ে আনা হবে। নতুন আইনে শুধু নীতিগত ও জাতীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের অনুমতির বিধান থাকবে; বাকি বিষয়ে বিটিআরসি পূর্ণ স্বাধীনতা পাবে।
ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা, সাইবার সুরক্ষা, ন্যাশনাল এআই পলিসি এবং ই-কমার্স-সংক্রান্ত আইন ও নীতিমালার সঙ্গে সমন্বয় রেখে নতুন আইন সংশোধন করা হবে।
লাইসেন্সের শর্তে পরিবর্তন
নতুন লাইসেন্স বা নবায়নের ক্ষেত্রে মানসম্মত সেবা নিশ্চিত এবং আন্তর্জাতিক মানের কেপিআই নির্ধারণ বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। পুরোনো প্রযুক্তির বিলোপ ও নতুন প্রযুক্তির পথ পরিষ্কার করাও নতুন ধারায় অন্তর্ভুক্ত থাকবে। উদ্যোক্তাদের জন্য অপ্রয়োজনীয় বিধিনিষেধ বা ভয়ভীতি দূর করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
টেলিযোগাযোগ লাইসেন্স-সংক্রান্ত বেসামরিক ও ফৌজদারি অপরাধের শাস্তি পৃথক করা হবে। আইন হালনাগাদ করে সেই অনুযায়ী স্পষ্ট ধারা সংযোজন করা হবে বলে চিঠিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।