Image description

ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তাদের আলোচনার অবস্থান বিকৃতভাবে উপস্থাপনের অভিযোগ এনেছে এবং ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভাকে যুদ্ধবিরতির প্রধান বাধা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

শনিবার (২৬ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে মেহর নিউজ।

শনিবার এক বিবৃতিতে হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য ইজ্জাত আল-রিশক বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তার বিশেষ দূত উইটকফের বক্তব্যে আমরা স্তব্ধ। এসব মন্তব্য মধ্যস্থতাকারীদের মূল্যায়নের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং হামাসের অবস্থানকে ভুলভাবে উপস্থাপন করছে।’

এর আগের দিন, শুক্রবার ট্রাম্প হামাসকে যুদ্ধবিরতি আলোচনার ভাঙনের জন্য দায়ী করে বলেন, ‘এই গোষ্ঠী এখন শিকার হবে।’

 

উল্লেখ্য, উইটকফ বৃহস্পতিবার বলেন, হামাসের ‘‘যথেষ্ট সদিচ্ছা নেই’’—এই অভিযোগ তুলে যুক্তরাষ্ট্র আলোচনায় তাদের সম্পৃক্ততা হ্রাস করছে।

তবে আল-রিশক বলেন, ‘আমাদের অবস্থান যে গঠনমূলক ও ইতিবাচক, তা কাতার ও মিশরের মতো মধ্যস্থতাকারীরাও স্বীকার করেছে। তাই মার্কিন এই বক্তব্যগুলো বাস্তবতা থেকে বিচ্যুত এবং নেতানিয়াহুর সরকার যে প্রকৃত বাধা, তা ইচ্ছাকৃতভাবে উপেক্ষা করা হচ্ছে।’

তিনি জানান, যুদ্ধ থামানো এবং গাজার মানবিক বিপর্যয় লাঘবের জন্য হামাস শুরু থেকেই দায়িত্বশীল ও নমনীয় ভূমিকা পালন করেছে।

মানবিক সহায়তা চুরির অভিযোগ নিয়ে আল-রিশক বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যে অভিযোগ এনেছে, তা ভিত্তিহীন। রয়টার্সের প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে, গাজায় সাহায্য চুরির ১৫৬টি ঘটনার মধ্যে অন্তত ৪৪টি ইসরাইলি সামরিক অভিযানের ফল।’

তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে আহ্বান জানান, ‘‘ইসরাইলি আগ্রাসন ও গণহত্যার দায় এড়ানোর পথ বন্ধ করুন এবং রাজনৈতিক ও সামরিক সহায়তা বন্ধ করে বাস্তব চাপ দিন যেন তারা আগ্রাসন থামায় ও বন্দি বিনিময় চুক্তিতে সম্মত হয়।’’

কাতারে এখনো পরোক্ষভাবে আলোচনা চলছে। তবে যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে এখনো কোনো চুক্তি হয়নি। তেল আবিব হামাসকে আলোচনায় দেরি করার জন্য দায়ী করলেও হামাস বলছে, ইসরাইল মূল বাধা তৈরি করছে, বিশেষ করে একটি টেকসই যুদ্ধবিরতির শর্ত মানতে রাজি না হয়ে।

প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতিতে একটি বন্দি বিনিময়ও অন্তর্ভুক্ত, যেখানে ৭ অক্টোবর ২০২৩-এর হামলার সময় আটক ২৫১ জন ইসরাইলির মধ্যে এখনো ৪৯ জন হামাসের হাতে বন্দি রয়েছে। ইসরাইলি সেনাবাহিনীর ধারণা অনুযায়ী, তাদের মধ্যে ২৭ জন ইতোমধ্যে নিহত হয়েছে।

ইসরাইল চায় হামাসের সামরিক ও প্রশাসনিক কাঠামো সম্পূর্ণভাবে বিলুপ্ত হোক। অন্যদিকে, হামাসের দাবি—যুদ্ধ স্থায়ীভাবে থামাতে হবে, ইসরাইলকে গাজা থেকে পুরোপুরি প্রত্যাহার করতে হবে এবং অবাধ মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে।

ইসরাইল বলছে, তারা কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের হালনাগাদ প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। তবে বাস্তবতায় সম্মতিসূচক চুক্তি এখনও অধরা।