
ইসরায়েলি সরকার ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানকে লক্ষ্য করে তিনটি নতুন মনস্তাত্ত্বিক ও রাজনৈতিক অভিযান বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নিয়েছে। সাম্প্রতিক ১২ দিনের যুদ্ধের সময় অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা তৈরি করতে বা ইরানের আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে ভেঙে ফেলতে ব্যর্থ হওয়ার পর এসব পদক্ষেপ নিয়েছে ইহুদি রাষ্ট্রটি।
নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাত দিয়ে ফার্স নিউজ এজেন্সির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সরকার তার সহযোগী নেটওয়ার্ক এবং কর্মীদের কাছে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে। দেশের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক আগ্রাসনের জন্য ইসলামী প্রজাতন্ত্রকে - বিশেষ করে ইসলামী বিপ্লবের নেতার নীতিগুলিকে দোষারোপ করার দিকে মনোনিবেশ করতে তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ইরান ইন্টারন্যাশনালের মতো বিদেশী-ভিত্তিক মিডিয়া আউটলেটগুলি এই প্রচারণা লাইনটি দ্রুত গ্রহণ করেছে। ইসরায়েলি বর্ণনার পরিবর্ধক হিসেবে কাজ করে, নেটওয়ার্কটির সাথে যোগসাজস রয়েছে এমন কিছু দেশীয় উপাদানেও এর প্রতিধ্বনি দেখা গেছে।
ক্ষমতাচ্যুত শাহ পুত্রের তথাকথিত ‘নির্বাসিত সরকার’ গঠনের আগের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর ইহুদিবাদী সরকারের এজেন্ডায় দ্বিতীয় এই দিকটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে ‘কনস্টিটিয়েন্ট অ্যাসেম্বলি ইন এক্সাইল’ নামে একটি নতুন মোড়কের অধীনে পাহলভি আগামী মাসে ইউরোপের একটি রাজধানীতে অনুষ্ঠানের আয়োজনের পরিকল্পনা করছেন। ওয়াকিবহাল সূত্রের মতে, এই পরিকল্পনায় ইরান-বিরোধী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী, বিশেষ করে কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলিকে গোপনে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে, যার লক্ষ্য ইরানের রাজনৈতিক বৈধতা ক্ষুণ্ন করার জন্য একটি প্রতীকী সমাবেশ তৈরি করা।
সূত্র নিশ্চিত করেছে, এই তৃতীয় প্রকল্পটি সমন্বিত করছেন আরদেশির আমির আরজোমান্দ। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এমইকে সহযোগিতা করে আসছেন এবং ২০০৯ সালের দাঙ্গার অন্যতম নেতার প্রাক্তন উপদেষ্টা তিনি। বর্তমানে গৃহবন্দী ব্যক্তিদের একজনের বিতর্কিত বক্তব্যের প্রেক্ষিতে শুরু হওয়া এই উদ্যোগটি দেশের ভেতরে এবং বাইরে উগ্রপন্থী এবং ইরান-বিরোধী ব্যক্তিদের একটি জোটের মাধ্যমে ‘গণভোট ইশতেহার’ এর একটি খসড়া স্বাক্ষরের কাছাকাছি রয়েছে।
অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে, ‘মোস্তফা টি’ এবং ‘আবদুল্লাহ এম’ নামে পরিচিত ব্যক্তিরা সমমনা ব্যক্তিত্বদের কাছ থেকে স্বাক্ষর সংগ্রহের কাজটি গ্রহণ করেছেন বলে জানা গেছে। দেশের বাইরে এই অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন রেজা আলিজানি। তিনি আরেকজন ব্যক্তিত্ব যিনি দীর্ঘকাল ধরে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের রেকর্ড গড়ে আসছেন।
পর্যবেক্ষকরা পূর্বোক্ত ইশতেহারের বিষয়বস্তু এবং ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর বৃহত্তর কৌশলগত এজেন্ডার মধ্যে উল্লেখযোগ্য মিল লক্ষ্য করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে তথাকথিত গণভোটের আহ্বান, একটি গণপরিষদ গঠন এবং নির্বাসিত সরকার প্রতিষ্ঠা। এর সবই ইরানকে ভেতর থেকে অস্থিতিশীল করতে দীর্ঘস্থায়ী ইসরায়েলি প্রচেষ্টার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।