Image description

নিজের প্রয়োজনে আফগানিস্তানে একদল মিনিয়ন তৈরি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। তালেবান নামের সেই মিনিয়নদের হাতেই শেষ পর্যন্ত মার খেয়ে মার্কিন সেনাদের আফগানিস্তান ছাড়তে হয়। সবাই মনে করেছিল, আফগানিস্তানের শাসনক্ষমতা আবারও তালেবানদের হাতে যাওয়ায়, একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে দেশটি। কিন্তু ঘটেছে ঠিক তার উল্টোটাই।

তালেবানের হাতে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আফগানিস্তান। সামরিক ও অর্থনৈতিকভাবে বেশ শক্তিশালী হয়ে উঠেছে কাবুল। এমনকি সম্প্রতি পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানকেও উচিত শিক্ষা দিয়েছে দেশটি।

শুধু সামরিক ও অর্থনৈতিক শক্তিমত্তাই নয়, কূটনীতিতেও বাজিমাত করেছে তালেবান। সম্প্রতি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তালেবানের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের পথ সুগম করেন। চীনও তালেবানদের সঙ্গে বিপুলভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য করে যাচ্ছে। এবার তালেবানের কাছে নতি স্বীকার করল যুক্তরাষ্ট্রও। তালেবানকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে চাওয়া যুক্তরাষ্ট্র এখন গোষ্ঠীটির সঙ্গে দরকষাকষি করছে।

তালেবানরা ক্ষমতা দখলের পরই বদলে যেতে শুরু করে আফগানিস্তান। এবার বদলে যাওয়া সেই আফগানিস্তানের সঙ্গেই বন্দি বিনিময় নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে বাইডেন প্রশাসন। কুখ্যাত গুয়ানতানামে বে কারাগারে থাকা অন্তত একজন হাইপ্রোফাইল বন্দির বিনিময়ে তালেবানের হাতে থাকা মার্কিন বন্দীদের মুক্ত করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের বরাতে সংবাদমাধ্যম রয়টার্স জানিয়েছে, নিজেদের তিন বন্দি রায়ান করবেট, জর্জ গ্লেজম্যান ও মাহমুদ হাবিবির বিনিমিয়ে মুহাম্মদ রাহিম আল-আফগানিকে ফেরত দেবে বাইডেন প্রশাসন। তবে এ বিষয়ে মুখ খোলেননি মার্কিন কর্মকর্তারা। কিছু জানায়নি তালেবানরাও। তবে একটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, গেল জুলাই থেকেই এ ধরনের আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে দুই পক্ষ।

তালেবানরা আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলে নেওয়ার এক বছর পর ২০২২ সালের আগস্টে পৃথক দুই ঘটনায় করবেট ও হাবিবিকে আটক করা হয়। একই বছর গ্লেজম্যানকেও আটক করে তালেবানরা। তিনি পর্যটক হিসেবে আফগানিস্তান গিয়েছিলেন। এরপর থেকেই মূলত ওই তিন বন্দির মুক্তি নিয়ে চেষ্টা তদবির শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এ নিয়ে খুব একটা অগ্রগতি হয়নি।

সম্প্রতি গুয়ানতানামো বে কারাগার থেকে বন্দি কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় বাইডেন প্রশাসন। এরই অংশ হিসেবে চলতি সপ্তাহে গুয়ানতানামোর ১১ জন বন্দিকে ওমানে পাঠানো হয়েছে। এতে গুয়ানতামোতে বন্দি থাকাদের সংখ্যা প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। ব্যাপক সমালোচনা হলেও কুখ্যাত এই কারাগার এখনও বন্ধ করতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র।