
ইতালীয় ওয়েবসাইট সেনারি ইকোনমিশেতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে লেখক ফ্যাবিও লুগানো সম্প্রতি চীনের প্রকাশিত নতুন অস্ত্র ‘গ্রাফাইট বোমা’ সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। এই বোমাকে তিনি আধুনিক যুদ্ধের নিয়ম পাল্টে দিতে সক্ষম ‘কৌশলগত দুঃস্বপ্ন’ বলে উল্লেখ করেন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, চীনা রাষ্ট্রায়ত্ত সম্প্রচারক সিসিটিভি সম্প্রতি একটি ভিডিও প্রকাশ করে, যেখানে এই অপ্রচলিত বোমার কার্যকারিতা দেখানো হয়। এটি প্রাণঘাতী না হলেও কার্বন ফাইবার নির্গত করে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার ও পাওয়ার গ্রিডের গুরুত্বপূর্ণ অংশ শর্ট সার্কিট করিয়ে বিশাল অঞ্চলে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করতে পারে। এক আঘাতেই প্রায় ১০ হাজার বর্গমিটার এলাকা অচল হয়ে পড়তে পারে বলে ভিডিওর সিমুলেশনে দেখা গেছে।
লুগানোর দাবি, ৪৯০ কেজি ওজনের এই ওয়ারহেড ২৯০ কিলোমিটার দূরত্বে আঘাত হানতে সক্ষম। এটি তৈরি করেছে চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চায়না অ্যারোস্পেস সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি কর্পোরেশন। যদিও সিসিটিভি ‘গ্রাফাইট বোমা’ শব্দটি ব্যবহার করেনি। তবুও ভিডিওতে বর্ণিত প্রক্রিয়াটি এই অস্ত্রের বৈশিষ্ট্যের সাথে মিলে যায়।
এই অস্ত্র সম্পূর্ণ নতুন নয়। যুক্তরাষ্ট্র অতীতেও ইরাক ও সার্বিয়ায় এই ধরনের বোমা ব্যবহার করেছে। ফলে বৈদ্যুতিক গ্রিডের ৮৫ শতাংশ পর্যন্ত নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছিল। অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, সম্ভাব্য যুদ্ধ পরিস্থিতিতে তাইওয়ানের বিদ্যুৎ অবকাঠামো এই বোমার মূল লক্ষ্য হতে পারে।
২০১৭ সালেই চীনা সামরিক বিশেষজ্ঞ চেন চুন্ডি এই অস্ত্রকে অ-ধ্বংসাত্মক যুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। তিনি বলেন, এটি শত্রুর সি৪আইএসআর সিস্টেম অকার্যকর করে কৌশলগত পক্ষাঘাত ঘটাতে পারে।
লুগানোর মতে, এই বোমার প্রকাশ চীনের কৌশলে একটি বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। এটি দেখায়, চীন এখন প্রচলিত যুদ্ধের বদলে বিদ্যুৎ ও ডিজিটাল অবকাঠামোর ওপর আক্রমণের মাধ্যমে হাইব্রিড যুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
সূত্র : আল জাজিরা