Image description

১৮, ১৯, ২০ জুলাই আন্দোলনে নিহত এবং আহতদের পরিবারগুলোর দুর্দশার কথা তুলে ধরে সরকারের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট আন্দোলনকারীরা। তাদের দাবি, যে মানুষগুলো এই আন্দোলনে গুম হয়ে ছিলেন বা নিহত হয়েছেন, তাদের অনেকের কাছে এখনো ডকুমেন্টস রয়েছে, তবে সরকারের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। ফাতেমা বলছেন, যদি সরকার যথাযথ উদ্যোগ না নেয়, তবে এসব গুরুত্বপূর্ণ দলিল ভবিষ্যতে হারিয়ে যাবে।

উমামা ফাতেমা বলেন, "আমরা বারবার সরকারকে বলেছি, ডিএনএ প্রোফাইলিং করে একটি সঠিক ডাটাবেস তৈরি করুন এবং যারা পরিবারের সদস্য হারিয়েছে, তাদের কাছ থেকে তালিকা নিয়ে সেই লাশগুলো তাদের পরিবারদের কাছে হস্তান্তর করুন। কিন্তু এক বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরেও কোন সাড়া পাইনি," ।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে গত আগস্ট মাস থেকে সাতটি লাশ পড়ে আছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র শহীদ হাসান নামে একজনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে, বাকিরা এখনো সেখানে পড়ে আছে।

তিনি আরো বলেন, একটি গবেষণা সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৬৮ জন পথশিশু এই আন্দোলনে নিহত হয়েছে, কিন্তু তাদের লাশ এখনো কোথায়, এ প্রশ্ন রয়ে গেছে। "এগুলো সরকারের দায়িত্ব, এসব খুঁজে বের করা সরকারের কাজ,"।

শহীদদের তালিকা তৈরি এবং আহতদের পুনর্বাসন সংক্রান্ত সরকারের কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আন্দোলনকারীরা। জুলাই ফাউন্ডেশন থেকে জানা গেছে, আহতদের সংখ্যা ১১,০০০ এবং নিহতদের সংখ্যা ৮৩৪ বা ৮৩৫। কিন্তু, তাদের সহায়তার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ সেভাবে কার্যকর হয়নি।

অভিযোগ উঠেছে, সরকারের পক্ষ থেকে কয়েকটি শহরের কিছু আহত এবং শহীদ পরিবারের জন্য কিছু পদক্ষেপ নেয়া হলেও, অনেক জেলা শহরে এখনো কোনো সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পটুয়াখালীতে আহত পরিবারের জন্য কোনো ব্যবস্থা হয়নি, এমনকি ঢাকাতেও পরিস্থিতি শোচনীয়।

তবে, শহীদ ও আহতদের জন্য বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কাজ করছে, যারা চিকিৎসা সেবা ও সহায়তা প্রদান করছে। তাদের মধ্যে অন্যতম "এম্পাওয়ারিং আর ফাইটারস" নামক সংগঠন, যারা আহতদের পাশে দাঁড়িয়েছে। যদিও, সরকার তাদের যথাযথ সহযোগিতা দেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন সংগঠনটির সদস্যরা।

এছাড়া, শহীদ নূর মোস্তফার স্বীকৃতি নিয়ে দীর্ঘদিনের আন্দোলনের পর, সরকার স্বীকৃতি প্রদান করেছে, যা কিছুটা হলেও আন্দোলনকারীদের আশাবাদী করেছে। তবে, সরকারের পক্ষ থেকে এমন আরও স্বীকৃতি ও সহায়তার প্রয়োজনীয়তা এখনও রয়ে গেছে।

"আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই, শহীদ ও আহত পরিবারের পুনর্বাসনের জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। শুধু আর্থিক সহায়তা নয়, তাদের সেলফ সাস্টেনেবল করার জন্য ট্রেনিং ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা উচিত," 

সরকারের প্রতি আন্দোলনকারীদের সর্বশেষ অনুরোধ, "এতদিনে আমরা যে প্রশ্নগুলো করেছি, তার উত্তর যেন আমরা দ্রুত পাই। আমাদের এখান থেকে সরে যাওয়ার সুযোগ নেই, আমাদের কথা তুলে ধরতে হবে এবং দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে।"

সূত্রঃ https://www.facebook.com/share/v/16e9zZLAYG/