
নয়, দিনের বেলায়ও ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো শুরু করেছে ইরান। যার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সকালেও ইসরায়েলের বিভিন্ন এলাকায় সাইরেনের শব্দে সেখানে মানুষের ঘুম ভেঙেছে। ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের দাবি, ইরান সর্বশেষ হামলায় ইসরায়েলে ২০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। বিবিসির সংবাদদাতা হুগো বাচেগা জানিয়েছেন, সকালে জেরুজালেম ও তেল আবিবে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এগুলোর মধ্যে কমপক্ষে একটি দেশটির কেন্দ্রে আঘাত করেছে। ইসরায়েলের একজন সামরিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইরান যে ২০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে তার বেশির ভাগই তাঁরা প্রতিহত করতে পেরেছেন। তবে কয়েকটি খোলা জায়গায় পড়েছে বলে তাঁরা চিহ্নিত করেন। তাঁর দাবি, হামলা প্রতিহত করতে সক্রিয় রয়েছে ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা। দেশটির জরুরি সেবা বিভাগ এখনো হামলার শিকার এলাকাগুলোয় উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। অন্যদিকে, ইরানের রাজধানী তেহরানেও এখন বিস্ফোরণ এবং আকাশ প্রতিরক্ষার পাল্টা গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। এদিকে, এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দাবি করেন, ইরানের পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির ‘চরম ক্ষতি’ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। তবে তিনি এও যোগ করেন, তাঁর বাহিনীর অভিযান শেষ হয়নি। সূত্র : বিবিসি, সিএনএন, আলজাজির
মোসাদের ভবনে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা : ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন ভবনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর দাবি করেছে ইরান। এ ছাড়া ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের কার্যক্রম পরিকল্পনাবিষয়ক কেন্দ্রের ভবনেও হামলা চালিয়েছে দেশটি। ইরানি সংবাদ সংস্থা তাসনিম নিউজের প্রতিবেদনের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। তবে এতে কতজন হতাহত হয়েছে, তা জানা যায়নি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের ইসলামি রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) নতুন এ হামলার দাবি করেছে। এ নিয়ে একটি বিবৃতিও প্রকাশ করেছে তারা। তাতে বলা হয়, আইআরজিসির ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর ইন্টেলিজেন্স সেন্টারে এবং গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের কার্যক্রম পরিকল্পনাবিষয়ক সেন্টারের ভবনে আঘাত হেনেছে। এ নিয়ে সরাসরি কিছু জানানো হয়নি ইসরায়েলের পক্ষ থেকে। তবে তারা বলছে, হার্জলিয়া এলাকায় স্পর্শকাতর কিছু জায়গায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে। এ হামলা সামরিক স্থাপনায় হয়েছে বলে নিশ্চিত না করলেও তারা বলছে, এ ধরনের জায়গা প্রভাবিত হয়েছে।
তেহরানে মোসাদের ড্রোন তৈরির কারখানা গুঁড়িয়ে দেওয়ার দাবি : ইরানি কর্তৃপক্ষ রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের একটি ড্রোন তৈরির কারখানা গুঁড়িয়ে দেওয়ার দাবি করেছে। ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা আইআরএনএ সোমবার এ তথ্য জানায়। বলা হয়েছে, তেহরান ও আলবোর্জ প্রদেশজুড়ে চালানো আলাদা অভিযানে মোসাদের হয়ে কাজ করা সন্দেহে দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে ইরানি নিরাপত্তা বাহিনী। পুলিশের মুখপাত্র সাঈদ মন্তাজের আল-মেহদির বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, তেহরানের দক্ষিণে রেই কাউন্টির ফাশাফুয়েহ জেলায় এসব গ্রেপ্তার অভিযান চালানো হয়।
এ সময় আটকদের কাছ থেকে ২০০ কেজিরও বেশি বিস্ফোরক, ২৩টি ড্রোনের যন্ত্রাংশ, লঞ্চার ও অন্যান্য কারিগরি সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। অভিযানে ব্যবহৃত একটি নিসান পিকআপ ট্রাকও জব্দ করা হয়েছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। ইরানি কর্মকর্তারা বলছেন, মোসাদ দেশের অভ্যন্তরে নানা ধরনের নাশকতা চালানোর পরিকল্পনা করছিল। এর মধ্যে ছোট আকারের বিস্ফোরকবাহী ড্রোন ব্যবহার করে কৌশলগত স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনাও ছিল।
ইরানের শীর্ষ সামরিক কমান্ডারকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের : ইরানের যুদ্ধকালীন চিফ অব স্টাফ এবং দেশটির সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ সামরিক কমান্ডার হিসেবে পরিচিত মেজর জেনারেল আলী শাদমানিকে হত্যার দাবি করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
গতকাল এক বিবৃতিতে আইডিএফ জানিয়েছে, ‘আকস্মিক সুযোগের মধ্যে তেহরানের কেন্দ্রস্থলে একটি স্টাফ কমান্ড সেন্টারে রাতারাতি হামলায় শাদমানি নিহত হয়েছেন। শাদমানি ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির অন্যতম ঘনিষ্ঠজন।
এ ছাড়া আইআরজিসির খাতাম আল-আনবিয়া সদর দপ্তরের প্রধান ছিলেন আলী শাদমানি। খাতাম আল-আনবিয়া আইআরজিসির নির্মাণ ও প্রকৌশল শাখা। এর অধীনে আইআরজিসি ও সাধারণ সেনাবাহিনী উভয়কেই সমন্বয় করা হয়। এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ইরানের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। মাত্র চার দিন আগে খাতাম আল-আনবিয়া সদর দপ্তরের দায়িত্ব নিয়েছিলেন শাদমানি। গত শুক্রবার ইসরায়েলি হামলায় এ দপ্তরের তৎকালীন প্রধান মেজর জেনারেল গোলাম আলী রাশিদ নিহত হলে শাদমানিকে এই পদে নিয়োগ দিয়েছিলেন খামেনি।
অবিলম্বে তেহরান খালি করার আহ্বান ট্রাম্পের : ইরান-ইসরায়েল সংঘাত পঞ্চম দিনে গড়ানোর আগেই তেহরানবাসীকে শহর খালি করার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার নিজের ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘সবাইকে এখনই তেহরান ত্যাগ করতে হবে।’ ওই পোস্টে তিনি আরও লেখেন, ‘ইরান আমার প্রস্তাবিত চুক্তি মেনে নিলে আজকের প্রাণহানি এড়ানো যেত। এটি দুঃখজনক ও অনর্থক প্রাণহানি। পরিষ্কার করে বলছি- ইরান পারমাণবিক অস্ত্র গ্রহণ করতে পারে না। আমি বারবার এটি বলেছি!’
ইসরায়েলের দুটি টিভি চ্যানেলের কার্যালয় খালি করার হুমকি : ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে হামলার পাল্টা জবাবে ইসরায়েলের দুটি টেলিভিশন চ্যানেল খালি করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে তেহরান। ইরানের আধা-সরকারি সংবাদমাধ্যম ফার্স ও মেহরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান জানায়, ইসরায়েলের চ্যানেল১২ ও চ্যানেল১৪-এর প্রধান কার্যালয় দ্রুত খালি করা উচিত। কারণ সেগুলোতে হামলা চালানো হতে পারে।
জি-৭ সম্মেলন শেষ না করেই ফিরছেন ট্রাম্প : ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের কারণে কানাডায় জি-৭ শীর্ষ সম্মেলন থেকে এক দিন আগেই ফিরছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিটের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, জি-৭ সম্মেলনে যুক্তরাজ্য ও দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য চুক্তিতে সই করেছেন ট্রাম্প। অগ্রগতিও হয়েছে। তবে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতির কারণে তিনি রাতেই রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে নৈশভোজ শেষে রওনা হবেন।
ইরানের সঙ্গে দ্রুত বৈঠকের নির্দেশ ট্রাম্পের : সংঘাতের পরিবর্তে শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খুঁজতে ইরানি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যত দ্রুত সম্ভব বৈঠকের নির্দেশ দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত এক ব্যক্তি ও এক মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ খবর জানিয়েছে।
Advertisement
গত সপ্তাহে ইসরায়েল প্রথম দফায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর থেকেই ট্রাম্প প্রকাশ্যে বলে আসছেন, ইরানকে আলোচনার টেবিলে আসতে হবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে হবে। একই সঙ্গে ইরান ও তাদের মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে যোগাযোগের পথ খোলা রাখতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। জি-৭ সম্মেলনে ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকেও ট্রাম্প জানান, ইসরায়েল-ইরানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনা চলছে এবং মার্কিন কর্মকর্তারা এ সপ্তাহেই ইরানি প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসার প্রত্যাশা করছেন।
এক মার্কিন কর্মকর্তা সিএনএনকে জানিয়েছেন, এখনো কোনো বৈঠকের দিনক্ষণ নির্ধারিত হয়নি, তবে ইসরায়েল ও ইরান একটি ইতিবাচক পথে এগোচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। ট্রাম্পও জানিয়েছেন, সোমবার মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে ইরান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে, ইরান এখন কার্যত আলোচনার টেবিলে বসতে আগ্রহী। তারা একটি চুক্তি করতে চায়।’ তবে কূটনৈতিক উদ্যোগ ব্যর্থ হলে যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ কী হতে পারে- বিশেষ করে ইসরায়েলের সঙ্গে মিলে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ধ্বংসে সামরিক হস্তক্ষেপ করবে কি না, সে বিষয়ে কিছু জানাননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তার আগে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধের পরিধি বাড়াতে চায় না ইরান। তবে কোনো আক্রমণের সমানমাত্রায় পাল্টা জবাব দেবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এ আলোচনা এ অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ হওয়ার ওপর নির্ভর করছে।’ স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ইরানে কোনো হামলায় অংশ নেয়নি। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র অ্যালেক্স ফিফার বলেন, ‘মার্কিন বাহিনী প্রতিরক্ষামূলক অবস্থানেই রয়েছে এবং তা এখনো অপরিবর্তিত। আমরা কেবলমাত্র আমেরিকার স্বার্থ রক্ষায় পদক্ষেপ নেব।’
ইসরায়েলে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের নিরাপদে থাকার পরামর্শ : ইসরায়েলে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের দুঃসংবাদ দিয়েছে সেখানকার মার্কিন দূতাবাস। সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যার দিকে এক বার্তায় দূতাবাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বর্তমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে যেসব নাগরিক ইসরায়েলে বসবাস করছেন, তাদের আপাতত নিজেদের সুরক্ষার ব্যবস্থা নিজেদেরই করতে হবে।
“ইসরায়েলে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস এখন এমন অবস্থায় নেই যে, এখানে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে কিংবা ইসরায়েল ত্যাগ করে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে কোনো প্রকার সহযোগিতা করতে পারবে। সেই সঙ্গে নাগরিকদের অনুরোধ করা হচ্ছে যে, বিপদ কেটে যাওয়ার আগ পর্যন্ত তারা যেন বম্ব শেল্টার কেন্দ্রগুলো থেকে বাইরে না বের হন”, বলা হয়েছে মার্কিন দূতাবাসের বিবৃতিতে।
খামেনিকে হত্যা করলেই সংঘাতের অবসান হবে-নেতানিয়াহু : প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমার যা করা প্রয়োজন, তাই করছি।’ ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে হত্যা করলে ইসরায়েল ও ইরানের চলমান সংঘাতের অবসান হবে বলে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সোমবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেন, ‘এটি সংঘাতকে আরও বাড়াবে না, বরং সংঘাতের ইতি টানবে।’
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ভবনে ইসরায়েলি হামলায় মৃত্যু বেড়ে ৩ : তেহরানে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের প্রধান কার্যালয়ে ইসরায়েলের বিমান হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন। হামলার একদিন পর সোমবার সম্প্রচারকারী চ্যানেল আইআরআইবি জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় টেলিভিশনের তিনজন কর্মী নিহত হয়েছেন এবং কয়েকজন আহত হয়েছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে। লাইভ সম্প্রচারে উপস্থাপক সহার এমামি ‘মাতৃভূমির বিরুদ্ধে আগ্রাসনের’ নিন্দা জানান। ঠিক তখনই সেখানে বিস্ফোরণ ঘটে এবং পর্দাজুড়ে ধোঁয়া ও ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে পড়ে।
Advertisement
পরে তাকে স্টুডিও থেকে দৌড়ে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়। এরপর ভিডিওটি শেষ হয়। এর আগে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন আইআরআইবির এক সংবাদ সম্পাদক ও আরেকজন কর্মীর মৃত্যুর খবর দিয়েছিল। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী তেহরানে ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারকের সদর দপ্তর লক্ষ্য করে হামলা চালানোর সময় স্থানীয়দের ওই এলাকা ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
নতুন ‘আত্মঘাতী’ ড্রোন উন্মোচন করেছে ইরান : ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান সংঘাতের মধ্যেই ‘শাহেদ-১০৭’ নামে নতুন ‘আত্মঘাতী’ ড্রোন উন্মোচন করেছে ইরান। দেশটির আইআরজিসির মহাকাশ বাহিনী এ ড্রোন প্রকাশ্যে আনে। এদিন ইরানের সংবাদমাধ্যম মেহের নিউজ এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, শাহেদ-১০৭ একটি মানববিহীন আকাশযান (ইউএভি), যা আত্মঘাতী হামলার জন্য বিশেষভাবে নির্মিত। এটি পিস্টন ইঞ্জিনচালিত এবং ১ হাজার ৫০০ কিলোমিটারেরও বেশি দূরত্বে উড়তে সক্ষম। ড্রোনটির ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে। এর দীর্ঘ পাল্লা এবং নির্ভুলতা একে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, নতুন আবিষ্কার করা ড্রোনটি ইসরায়েলি অধিকৃত অঞ্চলের ওপর দিয়ে ‘অ্যারো ৩’ আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার কাছে পৌঁছে গেছে। তাই এটি প্রমাণ করে যে, নতুন ইরানি ড্রোনটি ইসরায়েলের বহুস্তরবিশিষ্ট প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ভিতরে ঢুকতে সক্ষম হবে।
Advertisement
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যদি শাহেদ-১০৭ ড্রোন দলগতভাবে ব্যবহার করা হয়, তবে তা ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। তবে ইরান জানিয়েছে, শাহেদ-১০৭ কেবল প্রতিরক্ষামূলক কৌশলের অংশ হিসেবেই ব্যবহৃত হবে।
ইসরায়েলি হামলার নিন্দা ২১ আরব-মুসলিম দেশের : ইরানে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা জানিয়ে ২১টি আরব ও মুসলিম দেশ যৌথ বিবৃতি দিয়েছে। একই সঙ্গে তারা আঞ্চলিক উত্তেজনা কমানো, নির্বিচারে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ এবং আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর আহ্বান জানিয়েছে। মিসরের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা মেনা এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এ বিবৃতি এসেছে মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আবদেলআত্তির উদ্যোগে, যিনি অঞ্চলজুড়ে বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনার পর তা চূড়ান্ত করেন।
Advertisement
যৌথ বিবৃতিতে অংশ নেওয়া দেশগুলো হলো- তুরস্ক, জর্ডান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, পাকিস্তান, বাহরাইন, ব্রুনাই, চাদ, গাম্বিয়া, আলজেরিয়া, কোমোরোস, জিবুতি, সৌদি আরব, সুদান, সোমালিয়া, ইরাক, ওমান, কাতার, কুয়েত, লিবিয়া, মিসর ও মাউরিতানিয়া। বিবৃতিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ইরানের ভূখণ্ডে ইসরায়েলের হামলাকে আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদের লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেন। তারা জাতীয় সার্বভৌমত্ব, ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও সুসম্পর্ক বজায় রাখার নীতিমালার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর ওপর গুরুত্ব দেন এবং বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান চান।
ইরানে ইসরায়েলি হামলার ‘ভয়াবহ পরিণতি’ হতে পারে-কাতার : ইরানে ইসরায়েলি হামলার ‘ভয়াবহ পরিণতি’ হতে পারে ইরান-ইসরায়েলের চলমান উত্তেজনায় কাতারের রাজধানী দোহায় এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি।
Advertisement
এ সময় তিনি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলার কড়া নিন্দা জানিয়েছেন। পাশাপাশি আঞ্চলিক শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য অবিলম্বে সহিংসতার পথ পরিহার করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলার ঘটনাকে ??‘অবিবেচনাপ্রসূত পদক্ষেপ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। ইসরায়েলি এ হামলার ‘ভয়াবহ পরিণতি’ হতে পারে উল্লেখ করে কড়া নিন্দা জানান তিনি।
ট্রাম্পকে নিজের স্বাক্ষর করা জার্সি উপহার দিয়ে শান্তির বার্তা রোনালদোর : ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধাবস্থার পরিস্থিতি যখন আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে, তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে শান্তির বার্তা দিয়েছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। প্রেসিডেন্টকে নিজের স্বাক্ষর করা একটি জার্সিও উপহার পাঠিয়েছেন পর্তুগিজ মহাতারকা।
আর তা হাতে পেয়ে রোনালদোকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন ট্রাম্প। কানাডার কানানাস্কিসের আলবার্টায় সোমবার অনুষ্ঠিত জি-৭ সম্মেলনে বিশ্বের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বিভিন্ন বৈশ্বিক বিষয়ে আলোচনায় অংশ নিচ্ছিলেন ট্রাম্প। সেখানে তার হাতে রোনালদোর স্বাক্ষরিত পর্তুগালের একটি জার্সি মার্কিন প্রেসিডেন্টের হাতে তুলে দেন ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট অ্যান্টিনিও কস্তা।