Image description

যে কোনো সময় ব্রিটেনে হামলা চালাতে পারে রাশিয়া- এমন আশঙ্কায় ভীত যুক্তরাজ্য। সম্প্রতি তাদের প্রতিরক্ষা পর্যালোচনায় এ নিয়ে বিশদ আলোচনা তুলে ধরা হয়। সংবাদমাধ্যমে খবরটি ছড়ালে রাশিয়ার পক্ষ থেকে কড়া প্রতিক্রিয়া আসে।

যুক্তরাজ্যের কৌশলগত প্রতিরক্ষা পর্যালোচনায় (এসডিআর) রাশিয়ার উল্লেখ ৩৩ বার করা হয়েছে। এতে রাশিয়ার পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক ও জরুরি হুমকির কথা বলা হয়।

১৪৪ পৃষ্ঠার এই নথির ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার জোর দিয়ে বলেন, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার এই নতুন যুগে রাশিয়া আমাদের মহাদেশে যুদ্ধ চালাচ্ছে। দেশের ভেতরে আমাদের প্রতিরক্ষার দুর্বলতা খুঁজছে। তাই আমাদের এই বিপদের মুখোমুখি হওয়া নিয়ে ভাবতে হয়।

 

এসডিআর-এ বলা হয়েছে, রাশিয়ার ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় আক্রমণ, তার লক্ষ্য অর্জনের জন্য শক্তি প্রয়োগের ইচ্ছা, তার নিকটবর্তী অঞ্চলে প্রভাব বিস্তার, যুক্তরাজ্য ও তার মিত্রদের ক্ষতি করার জন্য আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাকে বিঘ্নিত করার অভিপ্রায়; সবই স্পষ্ট।

 

আরও বলা হয়, যদিও ইউক্রেন সংঘাতে রাশিয়ার প্রচলিত স্থলবাহিনী সাময়িকভাবে দুর্বল হয়েছে তবুও তার সশস্ত্র বাহিনীর সামগ্রিক আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণের ফলে এটি মহাকাশ, সাইবারস্পেস, তথ্য অপারেশন, সমুদ্রের নিচে যুদ্ধ এবং রাসায়নিক ও জৈব অস্ত্রের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে একটি স্থায়ী হুমকি হয়ে থাকবে।

 

প্রতিরক্ষা সচিব জন হিলি সতর্ক করে বলেন, ব্রিটেনের সামরিক বাহিনী রাশিয়া এবং অন্যান্য দেশ থেকে প্রতিদিন সাইবার হামলার মুখোমুখি হচ্ছে।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে রাশিয়ার লন্ডন দূতাবাস মঙ্গলবার (৪ জুন) বলেছে, যুক্তরাজ্যের কৌশলগত প্রতিরক্ষা পর্যালোচনা (এসডিআর) ভ্লাদিমির পুতিনের শাসনের বিভিন্ন হুমকি তুলে ধরলেও মস্কোর ব্রিটেনের উপর আক্রমণের কোনো উদ্দেশ্য নেই।

পুতিন শাসনের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে রুশ দূতাবাস এক বিবৃতিতে বলেছে, যুক্তরাজ্যের অভিযোগ রাশিয়া-বিরোধিতার নতুন ধরন। রাশিয়া যুক্তরাজ্য এবং এর জনগণের জন্য কোনো হুমকি নয়। আমাদের কোনো আগ্রাসী উদ্দেশ্য নেই এবং ব্রিটেনের ওপর আক্রমণের কোনো পরিকল্পনা নেই। আমরা এতে আগ্রহী নই। এ কাজ করারও আমাদের কোনো প্রয়োজন নেই।

তবে হোয়াইটহল এবং ওয়েস্টমিনস্টার রুশ দূতাবাসের বিবৃতিতে আশ্বস্ত নয়। কারণ, রাশিয়াকে সন্দেহ করার যথেষ্ট কারণ তাদের কাছে রয়েছে। এর একটি হলো- রাশিয়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন আক্রমণের আগে বারবার সেই উদ্দেশ্য অস্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছিল। তারা বলেছিল, ইউক্রেন আক্রমণের কোনো পরিকল্পনা পুতিনের নেই। মস্কো কেবল তার দেশের নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে চায়।

প্রসঙ্গত, যুক্তরাজ্য ইউক্রেনকে ধাপে ধাপে ট্যাঙ্ক-বিধ্বংসী অস্ত্র, চ্যালেঞ্জার-২ ট্যাঙ্ক ও স্টর্ম শ্যাডো দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করেছে। এ ছাড়া যুদ্ধে টিকে থাকতে ইউক্রেনকে নানামুখী আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছে ব্রিটেন।