Image description
 

ঈদে ঘরমুখী বরিশালের লঞ্চগুলোতে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন, বরিশাল লঞ্চঘাটে কীর্তনখোলা-১০ লঞ্চে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, যাত্রী হয়রানি এবং দায়িত্বরত কোস্টগার্ডের সদস্যদের হুমকি দেয়ায় ঘটনায় লঞ্চের মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আজ শুক্রবার (৬ জুন) বিকেলে বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানায় কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে কোতয়ালি মডেল থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, এ ঘটনায় ইতোমধ্যে দুইজনকে আটক করা হয়েছে।
 
জানা গেছে, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড উপকূলীয় এবং নদী তীরবর্তী অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে। আসন্ন ঈদ-উল আযহা উপলক্ষে নৌ-পথে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড নিয়মিত টহল ও অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শী অসংখ্য লঞ্চ যাত্রীদের বরাত দিয়ে কোস্টগার্ডের একাধিক সদস্যরা জানিয়েছেন, গত ৫ জুন দিবাগত রাত নয়টার দিকে কীর্তনখোলা-১০ লঞ্চটি ঢাকার সদরঘাট থেকে বরিশালের উদ্দেশ্যে যাত্রী নিয়ে ছাড়ার কথা থাকলেও প্রায় তিন ঘন্টা বিলম্ব করে যাত্রা শুরু করে। 

 

পথিমধ্যে যান্ত্রিক ত্রুটির অজুহাত দেখিয়ে মাঝ নদীতে লঞ্চ থামিয়ে নৌকা ও ট্রলারের মাধ্যমে অবৈধভাবে অতিরিক্ত যাত্রী উঠানো হয়। ধারণক্ষমতা ১৫৫০ জন হলেও প্রায় চার হাজার যাত্রী বহন করা হয়েছে। এমনকি ভোর রাতে বৃষ্টির সময় ছাদের যাত্রীদের লঞ্চের ভেতরে ঢুকতে না দিয়ে ছাদের দরজায় তালা দিয়ে রাখা হয়। 

 

ফলে ছাদে আটকিয়ে রাখা নারী, শিশু ও বৃদ্ধসহ অনেকে অসুস্থ হয়ে পরেন। এনিয়ে বরিশাল লঞ্চঘাটে পৌঁছানোর পর অতিরিক্ত ভাড়া দাবিসহ লঞ্চ কর্তৃপক্ষের দূর্ব্যবহার ও লঞ্চের বিভিন্ন অনিয়মকে কেন্দ্র করে যাত্রীদের সাথে লঞ্চের স্টাফদের বাগবিতন্ডার একপর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হয়। 

পরবর্তীতে যাত্রীদের অনুরোধে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কোস্টগার্ড, সেনাবাহিনী ও নৌ-পুলিশের সদস্যরা এগিয়ে আসে। এরপর কোস্টগার্ড কন্টিনজেন্ট কমান্ডারের মধ্যস্থতায় যাত্রী এবং লঞ্চ কর্তৃপক্ষের মাঝে সমঝোতা হয়। 

পরবর্তীতে কীর্তনখোলা লঞ্চের মালিক মঞ্জুরুল আহসান ও তার ছেলে শান্ত হাসান ঘটনাস্থলে এসে আক্রমনাত্মক ও নাশকতামূলক আচরণসহ মারমুখী হয়ে দায়িত্বরত কোস্টগার্ডের সদস্যদের বিভিন্ন ধরনের হুমকিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজে বাঁধা প্রদান করে।

এসময় কোস্টগার্ডের সদস্যরা দক্ষতার সাথে যাত্রীদের লঞ্চ থেকে নিরাপদে নামিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে লঞ্চ মালিক মঞ্জুরুল আহসান, তার ছেলে শান্ত হাসান, লঞ্চের ম্যানেজার ও সুপারভাইজারসহ স্টাফদের বিরুদ্ধে যাত্রী হয়রানি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর আক্রমনাত্মক ও নাশকতামূলক আচরণ এবং সরকারি কাজে বাঁধা প্রদান করায় থানায় মামলা দায়ের করেছেন। পাশাপাশি কোস্টগার্ডের সদস্যরা দুইজনকে আটক করে থানা পুলিশের কাছে সোর্পদ করেছেন। তবে প্রাথমিকভাবে তাদের নাম ও পরিচয় জানা যায়নি।