
মিয়ানমারের সাগাইং অঞ্চলের তামু জেলায় পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ)-এর অংশ 'পা কা ফা' (পিকেপি)-এর ১০ সদস্যকে হত্যা করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। নিহতদের মধ্যে তিনজন কিশোর। ঘটনাটি ঘটেছে ১৪ মে। মিয়ানমারের জাতীয় ঐক্য সরকারের (এনইউজি) পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, নিহতরা কোনো সংঘর্ষে পড়েনি, বরং তাদের আটক করে নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, সীমান্তে টহলরত আসাম রাইফেলসের সদস্যরা গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালায় এবং 'যুদ্ধাস্ত্র বহনকারী' ১০ জন সন্দেহভাজনকে গুলি করে হত্যা করে। সেনাবাহিনীর দাবি অনুযায়ী, নিহতরা ভারতীয় ভূখণ্ডে সশস্ত্র হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
এনইউজি ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে জানান, নিহতরা তামু অঞ্চলের একটি ঘাঁটিতে অবস্থান করছিল এবং ভারতীয় বাহিনী আগে থেকেই তাদের সম্পর্কে অবগত ছিল। ১২ মে আসাম রাইফেলস তাদের নতুন ক্যাম্প পরিদর্শনও করে।
১৬ মে ভারতীয় সেনাবাহিনী মরদেহগুলো হস্তান্তরের সময় তামুর স্থানীয় প্রতিনিধিদের ‘মিথ্যা নথিতে’ সই করতে বাধ্য করে বলে অভিযোগ উঠেছে। এসব নথিতে বলা হয়, নিহতরা সীমান্ত বেড়া নির্মাণ কাজে নিয়োজিত সেনা বা শ্রমিকদের ওপর হামলার চেষ্টা করেছিল।
স্থানীয় প্রশাসনের এক সদস্য জানান, মরদেহগুলো পচে গিয়েছিল এবং প্রাথমিক শ্রদ্ধার কোনো চিহ্ন ছিল না। এনইউজির পক্ষ থেকে ভারতের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানানো হয়েছে এবং সীমান্তে বেড়া নির্মাণ স্থগিত রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড এটিই প্রথম। এর ফলে দুই পক্ষের দীর্ঘদিনের ‘নীরব সমঝোতা’ ভেঙে পড়েছে। বর্তমানে সীমান্ত অঞ্চলে আতঙ্ক বিরাজ করছে।