
পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ ও ১১ জন মানবাধিকার কর্মী রবিবার (১ জুন) দক্ষিণ ইতালির সিসিলির ক্যাটানিয়া বন্দর থেকে ‘ম্যাডলিন’ নামের একটি সহায়তা জাহাজ নিয়ে গাজার উপকূলের দিকে যাত্রা শুরু করেছেন। এই জাহাজটির লক্ষ্য হলো ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের অবরোধ ভেঙে গাজায় মানবিক সাহায্য পৌঁছে দেওয়া এবং গাজার ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের প্রতি বিশ্ববাসীর নজর আকর্ষণ করা।
গ্রেটা থুনবার্গ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘বিপরীত পরিস্থিতির মুখেও আমাদের থেমে থাকার কোনও সুযোগ নেই। আমাদের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে কারণ যখন আমরা চেষ্টা বন্ধ করব, তখনই আমরা আমাদের মানবতা হারিয়ে ফেলব।’ তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে যোগ করেন, ‘এই মিশন যতই বিপজ্জনক হোক, সেটা পুরো বিশ্ব যখন লাইভস্ট্রিমে গণহত্যার দৃশ্য দেখতে দেখে নিশ্চুপ থাকবে তার চেয়ে অনেক কম বিপজ্জনক।’
এই যাত্রায় অংশ নেওয়া কর্মীরা আশা করছেন সাত দিনের মধ্যে গাজার উপকূলে পৌঁছাবেন, যদিও তারা যেকোনো বাধার সম্মুখীন হতে পারেন। তাদের উদ্দেশ্য শুধু সহায়তা পৌঁছে দেওয়া নয়, বরং গাজার সংকটকে বিশ্ব মঞ্চে তুলে ধরা।
ইসরায়েল গত কয়েক মাস ধরে গাজায় কঠোর সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে, যার লক্ষ্য হামাস সংগঠনের ক্ষমতা হ্রাস এবং হামাসের বন্দি করা ৫৮ জনকে মুক্ত করানো। গত অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের অভিযান গাজায় প্রায় ৫৪,০০০ মানুষের প্রাণহানি ঘটিয়েছে বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। তবে ইসরায়েল এই গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
মে মাসের শেষদিকে ইসরায়েল গাজার ওপর অবরোধ আংশিক শিথিল করেছে, যেখানে সীমিত পরিমাণ মানবিক সাহায্য প্রবাহিত হচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে গাজার জনগণ এই পরিস্থিতিতে বৃহৎ বিপর্যয়ের মুখে, এবং সাহায্যের অভাবে সেখানে মারাত্মক দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে।
গ্রেটা থুনবার্গের এই উদ্যোগটি শুধু গাজার অবরোধ ভাঙার চেষ্টা নয়, এটি একটি মানবাধিকারবিষয়ক বিক্ষোভ যা বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চায় যে গাজার নাগরিকরা তাদের স্বাধীনতা, নিরাপত্তা ও মানবিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস।