
পাকিস্তানের সঙ্গে সাম্প্রতিক সীমান্ত সংঘাত ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠেছে ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গন। বিরোধীদের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে নরেন্দ্র মোদির সরকার, বিশেষ করে রাফালসহ একাধিক যুদ্ধবিমান হারানো এবং সামরিক ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগকে কেন্দ্র করে।
এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী মোদির সাম্প্রতিক মন্তব্যকে কটাক্ষ করে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি রাজস্থানের বিকানেরে এক নির্বাচনী সমাবেশে বলেন, আমার শিরায় রক্ত নয়, সিঁদুর টগবগ করে ফুটছে। এমন বর্ণনামূলক ও আবেগপ্রবণ বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েছেন রাহুল।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাতে এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে তিনি প্রশ্ন তোলেন, মোদিজি, শুধুই ক্যামেরার সামনে আপনার রক্ত গরম হয় কেন?
রাহুলের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী মোদি ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে যতটা আগ্রাসী ভঙ্গিতে বক্তৃতা দেন, বাস্তবে ততটাই নতজানু অবস্থান নেন পাকিস্তানের মতো রাষ্ট্রের ব্যাপারে। খবর হিন্দুস্তান টাইমস।
তিনি বলেন, মোদিজি, ফাঁকা বক্তৃতা বন্ধ করুন। শুধু বলুন, পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদের প্রসঙ্গে তাদের বক্তব্যে আপনি কেন বিশ্বাস করলেন? কেন ট্রাম্পের কাছে মাথা নত করে ভারতের স্বার্থ বিসর্জন দিলেন?
তিনি আরও বলেন, কেন শুধু ক্যামেরার সামনেই আপনি এত সাহসী? ভারতের সম্মান ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে আপনি আপস করেছেন।
শুধু রাহুল নন, কংগ্রেসের অন্য শীর্ষ নেতারাও একইসুরে প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করেছেন। দলটির মুখপাত্র ও প্রবীণ নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদির বক্তৃতা যেন বলিউডের ডায়লগ। বাস্তবতা থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। তিনি ফিল্মি স্টাইলে ফাঁকা বুলি দেন, কিন্তু বাস্তব পদক্ষেপে দুর্বলতা প্রকাশ পায়।
প্রসঙ্গত, ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে ভারতীয় বাহিনীর উপর হামলার ঘটনায় প্রতিশোধ নিতে ‘মাত্র ২২ মিনিটেই’ পাকিস্তানে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেছেন মোদি। যদিও এ বিষয়ে ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বা বাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো নির্দিষ্ট তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে সীমান্ত উত্তেজনা এবং জাতীয়তাবাদকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মেরুকরণ চরমে পৌঁছেছে। মোদির ‘সিঁদুর’ মন্তব্য হিন্দু ভোটারদের আবেগে ছোঁয়া দেওয়ার কৌশল হলেও, বিরোধীদের কাছে তা রণনৈতিক দুর্বলতার আড়ালে লুকানোর প্রচেষ্টা হিসেবেই দেখছেন অনেকে।
সামনের দিনগুলোতে এ নিয়ে আরও রাজনৈতিক পাল্টাপাল্টি বক্তব্য সামনে আসবে বলেই ধারণা বিশ্লেষকদের।