Image description

ভারতের অপারেশন ‘সিঁদুর’ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মন্তব্য করায় আশোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আলী খান মাহমুদাবাদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পাকিস্তান এবং পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে অবস্থিত জঙ্গি ঘাঁটিগুলোর বিরুদ্ধে পরিচালিত এই সামরিক অভিযানের বিষয়ে তাঁর করা মন্তব্যকে কেন্দ্র করেই এই গ্রেপ্তার।

আজ রবিবার (১৮ মে) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, বিষয়টি একাধিক সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে এবং স্ক্রল সংবাদমাধ্যমকে তাঁর আইনজীবীও গ্রেপ্তারের খবর নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, আলী খান মাহমুদাবাদ সোনিপাতে অবস্থিত আশোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান। এই গ্রেপ্তারের কয়েক দিন আগে হরিয়ানা রাজ্য নারী কমিশন তাঁর মন্তব্যের বিরুদ্ধে সুয়ো মোটো (নিজ উদ্যোগে) পদক্ষেপ নেয়। কমিশনের এক নোটিশে বলা হয়, তাঁর বক্তব্যে ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর নারী কর্মকর্তাদের অসম্মান করা হয়েছে এবং সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা উসকে দেওয়ার মতো উপাদান রয়েছে।

এদিকে, সমন পাওয়ার পর মাহমুদাবাদ জানান, অপারেশন সিঁদুর ও তাতে অংশগ্রহণকারী নারী কর্মকর্তাদের নিয়ে তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মন্তব্য নারীবিদ্বেষমূলক নয়, বরং তাঁকে সেন্সর করা হচ্ছে।

এক্স–এ (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘নোটিশের সঙ্গে সংযুক্ত স্ক্রিনশটগুলো থেকেই স্পষ্ট, আমার মন্তব্যগুলো পুরোপুরি ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এই বিষয়ে নারী কমিশনের কোনো এখতিয়ার নেই। নারী কমিশন একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা। তবে তারা যে সমন পাঠিয়েছে, তাতে স্পষ্ট নয়—আমি নারীদের অধিকার বা সংবিধানবিরোধী কোনো আইন কীভাবে লঙ্ঘন করেছি।’

তিনি আরও বলেন, কর্নেল সোফিয়া কুরেশি এবং উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিংহকে প্রেস ব্রিফিংয়ে ভারতীয় বৈচিত্র্যের প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে বেছে নেওয়ায় তিনি প্রশংসা করেছেন।

‘আমি এমনকি ডানপন্থিদের সাধুবাদ জানাই, যারা কর্নেল কুরেশিকে সমর্থন করেছেন। আমি তাঁদের আহ্বান জানিয়েছি যেন তারা সাধারণ ভারতীয় মুসলমানদের প্রতিও একই মনোভাব দেখান—যারা প্রতিদিন দানবায়ন ও নিপীড়নের শিকার হন। আমার পুরো বক্তব্য ছিল নাগরিক ও সেনাসদস্য—উভয়ের জীবন রক্ষা করার আহ্বানে। এর মধ্যে নারীবিদ্বেষ বা নারীবিরোধী কোনো কিছু নেই,’—যোগ করেন মাহমুদাবাদ।

অপারেশন সিঁদুর
চলতি বছরের ৭ মে ভোরে ভারতের সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তান এবং পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে সন্ত্রাসী অবকাঠামোতে হামলা চালায়। এটি ছিল ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগামে পর্যটকদের ওপর চালানো সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধ, যেখানে ২২ জন নিহত হন—যাদের বেশিরভাগই ছিলেন পর্যটক।

এই সামরিক অভিযানের সময় ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি, কর্নেল সোফিয়া কুরেশি এবং উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিংহ যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলন পরিচালনা করেন।