
ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সংলাপ নিয়ে নতুন কিছু তথ্য প্রকাশ করেছেন ইরানের রাজনৈতিক বিষয়ক উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী মজিদ তাখত-রাভাঞ্চি। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান পারমাণবিক আলোচনায় ইরানি প্রতিনিধি দলের একজন সদস্য।
রাভাঞ্চি জানিয়েছেন, ইরান এখনো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা ও সক্ষমতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় প্রবেশ করেনি।
তিনি বলেন, ‘একটি কাঠামো হিসেবে আমরা উল্লেখ করেছি যে, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা, সক্ষমতা ও অনুরূপ পারমাণবিক বিষয়গুলোর ওপর সীমিত সময়ের জন্য কিছু নিষেধাজ্ঞা আমরা বিবেচনা করতে পারি। যেগুলো আস্থা গঠনের পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করবে’।
ইরানের এই উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাগুলো প্রত্যাহার করা হলে তবেই ইরান এ ধরনের পদক্ষেপ নিতে রাজি হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ‘এই পদক্ষেপগুলো একতরফা নয়, বরং পারস্পরিক পদক্ষেপের অংশ। যার মাধ্যমে প্রমাণ করা হবে আমাদের পারমাণবিক কর্মসূচি পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ’।
তাখত-রাভাঞ্চি এ সময় সাম্প্রতিক কিছু গুজবও নাকচ করে দেন। যেখানে বলা হয়েছিল আলোচনায় ২৫ বছরের মতো দীর্ঘ সময়সীমা নির্ধারণ করা হতে পারে।
তিনি বলেন, ‘সময়সীমা হোক বা সমৃদ্ধকরণের শতকরা হার— এ ধরনের কোনো ধারণাই নিশ্চিত নয়’।
এদিকে, পরমাণু ইস্যু নিয়ে আলোচনার মধ্যেই ইরানের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের সামরিক বাহিনীর সমরাস্ত্র বিষয়ক গবেষণা সংস্থা অর্গানাইজেশন অব ডিফেন্সিভ ইনোভেশন অ্যান্ড রিসার্চের (এসপিএনডি) সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তিন সিনিয়র কর্মকর্তা ও একটি প্রতিষ্ঠানের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।
ওই তিন কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানের নাম-পরিচয় গোপন রাখলেও মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, নিষেধাজ্ঞার কোপে পড়া এই কর্মকর্তারা ইরানের পরমাণু প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। যুক্তরাষ্ট্রে ওই তিন কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় সম্পদ ইতোমধ্যে ফ্রিজ করা হয়েছে এবং যতদিন এই নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে, তারা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবেন না এবং কোনো মার্কিন প্রতিষ্ঠানও তাদের সঙ্গে কোনো প্রকার আর্থিক চুক্তি করতে পারবে না।
প্রসঙ্গত, ইরানকে পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে বিরত রাখতে ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ‘জ্যাকোপা’ নামে একটি চুক্তি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে ২০১৭ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে এই চুক্তি থেকে সরে আসে। যার ফলে চুক্তিটি অকার্যকর হয়ে যায় এবং ইরানও তার পরমাণু প্রকল্পে মনোনিবেশ করে।
এরপর চলতি বছরে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্প নিজেই ইরানের সঙ্গে সরাসরি সংলাপের আহ্বান জানিয়ে দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে চিঠি দেন। ইরান সরকারও তাতে সাড়া দেয়।
কাতারের রাজধানী দোহায় চলছে ওয়াশিংটন ও তেহরানের কর্মকর্তাদের ধারাবাহিক সংলাপ। ইরানের চাওয়া অনুযায়ী সংলাপে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় আছে ওমান।
সংলাপের চতুর্থ রাউন্ড শেষ হয়েছে সোমবার। আর ওইদিনই তেহরানের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করল ওয়াশিংটন। সূত্র: মেহের নিউজ ও এনডিটিভি