Image description

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ভারতীয় গণমাধ্যমে তথ্যের চেয়ে উগ্রতা ও গুজবই যেন এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। যুদ্ধোন্মাদনা এতটাই তুঙ্গে উঠেছে যে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের গুজব ও রাজনৈতিক চাপের মাঝে অনেক সংবাদমাধ্যম বস্তুনিষ্ঠতা ভুলে গেছে।

পাকিস্তানি গণমাধ্যম ‘ডন’ বলছে, গত কয়েক দিনে ভারতীয় গণমাধ্যমে পাকিস্তান সংক্রান্ত যেসব সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তা অনেকাংশেই কাল্পনিক ও বিভ্রান্তিকর। যেমন- করাচি বন্দরে হামলা, পাকিস্তানের সেনাপ্রধান গ্রেপ্তার, ইসলামাবাদ দখল, পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়া কিংবা পাইলট আটক—এসব খবরের কোনোটিরই সত্যতা পাওয়া যায়নি। বাস্তবতা হলো, এই সময়ে সীমান্তে হামলায় বহু বেসামরিক পাকিস্তানি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন অনেকে। অথচ ভারতের সংবাদমাধ্যম এসব মৃত্যু নিয়ে নীরব, বরং যুদ্ধকে উৎসাহিত করছে।

যখন দু’টি পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, তখন দায়িত্বশীল গণমাধ্যমের উচিত ছিল পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করা। কিন্তু ভারতের বহু গণমাধ্যম বরং যুদ্ধের পক্ষে সুর তুলছে, যা শুধু ভুল তথ্য ছড়ানোই নয়, বরং জনগণের মনে আতঙ্ক ও ঘৃণা ছড়িয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ ‘ডন’ এর।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিশ্লেষকদের মতে, এটি শুধুই রেটিংয়ের জন্য নয়, বরং রাজনৈতিক স্বার্থে পরিচালিত একধরনের প্রোপাগান্ডা। ভারতের একমাত্র কয়েকটি স্বাধীন কণ্ঠস্বর, যেমন ‘দ্য ওয়্যার’, যারা এই প্রোপাগান্ডার বাইরে সত্য বলার চেষ্টা করেছে, তাদের ওপরও চাপ আসছে। ইতোমধ্যেই এই গণমাধ্যমটিকে নিষিদ্ধ করেছে সরকার।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুদ্ধকালীন সময়ে মিথ্যা সংবাদ আরও বড় বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। সাংবাদিকদের উচিত তথ্য যাচাই করে সত্য তুলে ধরা। অন্যথায় তারা আর সাংবাদিক থাকেন না, শুধুই একতরফা প্রচারক হয়ে ওঠেন।

সূত্র: দ্য ডন