
জাতিসংঘে নিযুক্ত এক পাকিস্তানি কূটনীতিক দাবি করেছেন, বেলুচিস্তানে গত মাসে জাফর এক্সপ্রেস ট্রেন ছিনতাইয়ের ঘটনায় ভারতের সংশ্লিষ্টতার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ ইসলামাবাদের হাতে রয়েছে। বুধবার (৩০ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
সোমবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সন্ত্রাসবিরোধী দপ্তর আয়োজিত ‘ভিকটিমস অব টেররিজম অ্যাসোসিয়েশনস নেটওয়ার্ক’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে পাকিস্তানি কাউন্সেলর জাওয়াদ আজমল এ মন্তব্য করেন।
তিনি ভারতীয় প্রতিনিধির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে কোনও ‘ভিত্তিহীন প্রচার’ চালাচ্ছে না। বরং ইসলামাবাদের কাছে স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মির (বিএলএ) সদস্যরা মার্চ মাসে সিবির কাছে যে জাফর এক্সপ্রেসে হামলা চালায়, তাতে ‘আঞ্চলিক শত্রুদের’ প্রত্যক্ষ মদত ছিল।
উল্লেখ্য, ওই হামলায় অন্তত ৩০ জন সাধারণ যাত্রী নিহত হন।
জাওয়াদ আজমল বলেন, ‘পাকিস্তানের কাছে এই হামলার পেছনে বাইরের পৃষ্ঠপোষকতার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে।’
যদিও তিনি সরাসরি ভারতের নাম নেননি, তবে ইঙ্গিত স্পষ্ট ছিল।
ভারতের ডেপুটি স্থায়ী প্রতিনিধি যোগনা প্যাটেলের বক্তব্যের জবাবে আজমল বলেন, পাকিস্তান এ ফোরামকে ‘প্রচারের হাতিয়ার’ বানাচ্ছে না, বরং ভারত নিজের ঘর গোছানোর বদলে অন্যকে দোষারোপ করছে।
তিনি বলেন, ‘গত দুই দশকে পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ৮০ হাজারের বেশি প্রাণ হারিয়েছে। আমরা নিজেরাই সন্ত্রাসবাদের শিকার, এই লড়াইয়ে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও সেনা সদস্যদের আত্মত্যাগ আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি।’
বক্তব্যে তিনি সন্ত্রাসবাদের মূল কারণ খতিয়ে দেখার ওপর জোর দেন, সেই সঙ্গে ‘আত্মনিয়ন্ত্রণের সংগ্রাম’ ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদকে আলাদা করে চিহ্নিত করার প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেন।
তিনি বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমে যে নতুন ধরনের সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রম চালানো হচ্ছে, তা শুধু বিভাজনকেই গভীর করছে না, বরং ঘৃণা ও সহিংসতা উসকে দিচ্ছে। এই প্রচার ও ভুল তথ্যর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একসঙ্গে রুখে দাঁড়াতে হবে।’
কাশ্মীর প্রসঙ্গে জাওয়াদ আজমল বলেন, ‘ভারতীয় রাষ্ট্রযন্ত্রের হাতে জম্মু-কাশ্মীর -এর মানুষরা দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদের শিকার হয়ে আসছে। এ ধরনের অপরাধের জন্য দায়ীদের আন্তর্জাতিক আইনে বিচারের আওতায় আনা উচিত।’
তিনি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, কাশ্মীর সংকট সমাধানে পরিষদের গৃহীত প্রস্তাব অনুযায়ী জনগণের ইচ্ছার ভিত্তিতে গণভোটের ব্যবস্থা করতে হবে এবং ভারতের রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।