
ভারতের গুজরাট রাজ্যের আহমেদাবাদ শহরের ওঢাভ এলাকায় খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের ‘ইস্টার সানডে’র প্রার্থনার সময় হাঙ্গামা করেছে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা।
রোববার (২১ এপ্রিল) দেশটির শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয়, ইস্টার সানডে’র (২০ এপ্রিল) প্রার্থনার সময় হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বজরং দল ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) লোকজন ওই স্থানে ঢুকে হট্টগোল শুরু করে।
তাদের হাতে লাঠিসোঁটা ছিল। তারা খ্রিস্টানদের প্রার্থনা কক্ষে ‘জয় শ্রীরাম’ বলে স্লোগান দেয়।
খবরে আরও বলা হয়, দুই সংগঠনের দুর্বৃত্তরা ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিতে দিতে অনুষ্ঠানে উপস্থিত খ্রিস্টানদের মধ্যে কতজন হিন্দু তা জানতে চায়। স্থানীয় লোকজনকে হিন্দু থেকে খ্রিস্টান বানানো হচ্ছে বলেও তারা অভিযোগ তোলে।
পুলিশ জানায়, রোববার সকালে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ তাদের প্রার্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। প্রায় ১০০ জন ইস্টারের প্রার্থনায় অংশ নিয়েছিলেন। হঠাৎ সেখানে বজরং দল ও ভিএইচপি কর্মীরা ঢুকে পড়েন।
ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দেখা যায়, হামলাকারীরা হাতে লাঠি নিয়ে উত্তেজক স্লোগান দিচ্ছে।
ঘটনার পর পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং উভয় পক্ষকে থানায় নিয়ে যায়। ওঢাভ থানার কর্মকর্তা পি এন জিনজুভাদিয়া জানান, বজরং দলের স্থানীয় প্রতিনিধি দর্শন জোশি একটি লিখিত অভিযোগে অনুষ্ঠানে ধর্মান্তকরণ হচ্ছিল বলে দাবি করেন। তবে পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে এমন কোনো প্রমাণ পায়নি।
অন্যদিকে, খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে ইমানুয়েল আময়দাস ১০-১৫ জন অজ্ঞাতনামা যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। এতে তিনি বলেছেন, অভিযুক্তরা জোর করে হলঘরে ঢুকে পড়ে এবং উপস্থিতদের ভয় দেখায়।
পুলিশ জানিয়েছে, উভয় পক্ষের অভিযোগ তদন্তাধীন এবং প্রমাণের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘটনার জেরে এলাকায় সাময়িক উত্তেজনা ছড়ালেও পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখতে তারা নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে।
ভারতে প্রায়ই সাম্প্রদায়িক বিভিন্ন আক্রমণ ও হামলার খবর উঠে আসছে সে দেশের সংবাদমাধ্যমে। এমনকি বাংলাদেশ লাগোয়া পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে সম্প্রতি সংখ্যালঘু মুসলিমদের সঙ্গে সংঘাতে জড়ায় বিজেপি সমর্থক হিন্দুত্ববাদীরা। এ নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে দুষছেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।