
একটি নতুন হাইড্রোজেন বোমা তৈরি করেছে চীন। সে দেশের গবেষকরা এটির সফল পরীক্ষাও করেছেন। এটি পারমাণবিক বোমা থেকে আলাদা কিন্তু অনেক বেশি শক্তিশালী। চীনের হাইড্রোজেন বোমা অস্ত্রের জন্য ব্যবহৃত TNT বিস্ফোরকের চেয়ে ১৫ গুণ বেশি তাপ উৎপন্ন করে। এটি চীনের সামরিক শক্তিতে একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি বলে মনে করা হচ্ছে। এই সফল পরীক্ষার পর, চীনের কাছে এখন পারমাণবিক অস্ত্র ছাড়াও একটি অত্যন্ত শক্তিশালী অস্ত্র রয়েছে।
বোমাটি চায়না স্টেট শিপবিল্ডিং কর্পোরেশন (CSSC) দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। বোমাটিতে ম্যাগনেসিয়াম থেকে তৈরি হাইড্রোজেন উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে। এই উপাদানটি আগুনের গোলা তৈরি করে। এটি সাধারণ বিস্ফোরকের চেয়ে বেশি সময় ধরে জ্বলে, যা এটিকে অনেক বেশি বিপজ্জনক করে তোলে। হাইড্রোজেন বোমায় পারমাণবিক উপাদান ব্যবহার করা হয় না।
চীন ম্যাগনেসিয়াম হাইড্রাইড দিয়ে তৈরি দুই কিলোগ্রাম ওজনের একটি বোমা পরীক্ষা করেছে। রূপালী রঙের এই পাউডারটি প্রচুর পরিমাণে হাইড্রোজেন ধারণ করতে পারে। একটি ছোট বিস্ফোরণের মাধ্যমে জ্বলে ওঠে, যার ফলে ম্যাগনেসিয়াম হাইড্রাইড দ্রুত উত্তপ্ত হয়। এটি হাইড্রোজেন গ্যাস নির্গত করে যা বাতাসের সঙ্গে মিশে গেলে পুড়ে যায়। এটি এক হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রার একটি আগুনের গোলা তৈরি করে। এই আগুন দুই সেকেন্ডেরও বেশি সময় ধরে জ্বলতে পারে, যা টিএনটি-র মতো অন্যান্য বোমার তুলনায় বেশি ক্ষতি করতে পারে।
গবেষক ওয়াং জুয়েফেং এবং তাঁর দল জানিয়েছে, হাইড্রোজেন গ্যাস বিস্ফোরণের জন্য খুব কম শক্তি লাগে। এর শিখা খুব দ্রুত এবং একটি বিশাল এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। এই সংমিশ্রণ বিস্ফোরণের তীব্রতা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। উৎপন্ন ভয়াবহ তাপ সহজেই বিশাল এলাকার লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যখন একটি হাইড্রোজেন বোমা প্রচলিত বিস্ফোরক দ্বারা চালিত হয়, তখন ম্যাগনেসিয়াম হাইড্রাইড তাপ উৎপন্ন করে। এটি হাইড্রোজেন নির্গত করে, যা বাতাসের সঙ্গে মিশে যায়। যখন এই গ্যাস একটি নির্দিষ্ট স্তরে পৌঁছায়, তখন এটি জ্বলে ওঠে। এই প্রক্রিয়াটি চলতে থাকে যতক্ষণ না সমস্ত জ্বালানি শেষ হয়ে যায়।
গবেষকরা দেখেছেন যে চীনের এই নতুন অস্ত্রের বিস্ফোরণ TNT-এর তুলনায় ৪০ শতাংশ কম। পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, বিস্ফোরণের শক্তি ছিল ৪২৮.৪৩ কিলোপাস্কেল। এই অস্ত্রের শক্তি হল এটি যে তাপ উৎপন্ন করে যা ১,০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি। এই তীব্র তাপ একটি বিশাল এলাকা জুড়ে ক্ষতি করতে পারে।