Image description
 

ইরানে সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার বিশ্বজনমতকে বিভ্রান্ত করতে আলোচনা নিয়ে ভ্রান্ত প্রচারণা চালাচ্ছে, বিশ্বকে ধোঁকা দিচ্ছে।

গত ১২ মার্চ একদল শিক্ষার্থীর সঙ্গে বৈঠকে খামেনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। তারা বলছে, ‘আমরা (যুক্তরাষ্ট্র) আলোচনায় আগ্রহী, কিন্তু ইরান তা চায় না’। অথচ এই কথাগুলো সেই ব্যক্তির (ট্রাম্প) মুখ থেকে আসছে, যিনি কিনা আমাদের আগের আলোচনার চুক্তি নিজেই ছিঁড়ে ফেলেছিলেন। আমরা কীভাবে এমন কারো সঙ্গে আলোচনা করব, যিনি কিনা নিজের দেওয়া প্রতিশ্রুতিও রক্ষা করেন না?’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতারণামূলক কূটনীতির কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক-

ট্রাম্প আলোচনার জন্য উপযুক্ত ব্যক্তি নন: পরমাণু চুক্তি (JCPOA) নিয়ে দুই বছর ধরে আলোচনা শেষে চুক্তি হওয়ার পরও ট্রাম্প একক সিদ্ধান্তে সেটি বাতিল করেছিলেন। শুধু ট্রাম্পই নন, পূর্ববর্তী মার্কিন প্রশাসনগুলোও আলোচনাকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেছে এবং অন্য পক্ষের স্বার্থের তোয়াক্কা করেনি। ইরান অতীতেও মার্কিন সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছিল—যেমন ম্যাকফারলেনের গোপন তেহরান সফর, ইরাকের পরিস্থিতি, আফগানিস্তানে তালেবানের উত্থান এবং বসনিয়ায় মুসলিম গণহত্যা। কিন্তু প্রতিবারই যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে এবং ইরানের বিরুদ্ধে শত্রুতাপূর্ণ অবস্থান বজায় রেখেছে।

 

যুক্তরাষ্ট্র আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে আগ্রহী নয়: ২০২২-২৩ সালের ইরানি দাঙ্গার সময় যুক্তরাষ্ট্র আলোচনার পরিবর্তে ‘শাসন পরিবর্তন’ নিয়ে কথা বলেছে। ওয়াশিংটন ও ইউরোপীয় কর্মকর্তারা আলোচনার দাবি করলেও, JCPOA চুক্তির পথ রুদ্ধ করতে এবং ইরানের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা উসকে দিতে তারা সরাসরি সহিংসতা ও বিক্ষোভকে সমর্থন দেয়।

আলোচনাকে কৌশলগত চাপে পরিণত করা: সামরিক হুমকি, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, আলোচনার আমন্ত্রণ, এমনকি ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে চিঠি পাঠানো—এ সবই মার্কিন প্রচারণার অংশ। এ সবের মাধ্যমে ট্রাম্প নিজেকে একজন শান্তিপ্রিয় আলোচক হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো- তিনি আলোচনার নামে ইরানকে একঘরে করতে চান।

ইরান যুক্তরাষ্ট্র বাদে বাকিদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাবে: ইরান কূটনৈতিক সম্পর্ক ও আলোচনার পক্ষপাতী এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সংকট সমাধানে আলোচনা চালিয়ে যাবে। ইউরোপের তিন দেশের সঙ্গে আসন্ন আলোচনা এবং চীন-রাশিয়ার সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে অংশগ্রহণই প্রমাণ করে যে, ইরান আলোচনায় বিশ্বাসী—তবে যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়া।