এবার শিক্ষার্থীদের অপহরণ, হত্যাচেষ্টা ও মিথ্যা স্বীকারোক্তি নেওয়ার অভিযোগে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি প্রশাসনের মামলা করেছে সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। ঢাকার সাভারের খাগান এলাকায় ড্যাফোডিল শিক্ষার্থীদের মেস ব্যাচেলর প্যারাডাইসে হামলারও অভিযোগ আনা হয়েছে।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সাভার থানার ওসি। এর আগে মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ভিসি অধ্যাপক ড. এম. আর. কবিরের সংবাদ সম্মেলনের পরে সিটি ইউনিভার্সিটিতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করে সিটি ইউনিভার্সিটি প্রশাসন।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) সংঘর্ষের দিনই সিটি ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ড. ইঞ্জিনিয়ার মো. লুৎফর রহমান সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, আর্থিক ক্ষতিপূরণ না পেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মামলা করা হবে।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. আর. কবির সংবাদ সম্মেলনে সিটি ইউনিভার্সিটির সব অভিযোগ মিথ্যা দাবি করেন। তিনি বলেন, পরিকল্পিত হামলার শিকার হয়েছে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীরা। তাদের জিম্মি করে অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
গত রবিবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ড্যাফোডিলের এক শিক্ষার্থীর ওপর সিটি ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থীর মোটরসাইকেল থেকে থুথু পড়া নিয়ে খাগানের ব্যাচেলর প্যারাডাইসের সামনে ঘটনার সূত্রপাত। এ নিয়ে উভয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়। পরে রাত ৯টার দিকে সিটি ইউনিভার্সিটির প্রায় ৪০–৫০ জন শিক্ষার্থী দেশীয় অস্ত্র ও ইট-পাটকেল নিয়ে ড্যাফোডিল শিক্ষার্থীদের বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন।
এরপরই শুরু হয় দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলা। প্রায় ৭ ঘণ্টার সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় খাগান এলাকা। রাত ৯টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত থেমে থেমে চলা সংঘর্ষে প্রায় ২৫০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অন্তত ৭টি যানবাহন ভাঙচুর ও ৫টিতে অগ্নিসংযোগ করেন।
বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিটি ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস। খাগানের ব্যাচেলর প্যারাডাইস বাসাও ভাংচুর করা হয়। এমন সময় ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীদের বাসায় হামলার পর কিছু শিক্ষার্থীকে জিম্মি করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে। পরবর্তীতে সিটি ইউনিভার্সিটি প্রশাসন আটকের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে ১৭ শিক্ষার্থীকে আহত অবস্থায় ফেরত দেয়। তাদের অধিকাংশেই রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।