
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) ছাত্র সংসদ (হাকসু) নির্বাচন এখনও কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ। প্রায় দেড় মাস আগে আট সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হলেও এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাকসু নির্বাচন ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকসু নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রস্তুতি চলছে। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ও রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে। কিন্তু হাবিপ্রবিতে এখনো আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে হাকসু নির্বাচন আয়োজনের দাবি শিক্ষার্থীদের মধ্যে জোরালো হতে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা নির্বাচন চেয়ে তাদের অবস্থান তুলে ধরেন। তারা দ্রুত গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের আওতায় নির্বাচন আয়োজনের দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ারও কথা জানান।
এর আগে ২৭ জুলাই হাবিপ্রবি শাখা ছাত্রশিবিরের দুই কর্মী প্রশাসনিক ভবনের সামনে অনশন কর্মসূচি পালন করেন। সেদিন রাতেই প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা অনশনস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে উপাচার্যের বাসভবনে নিয়ে গিয়ে তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়। সেখানে উপাচার্য নির্বাচনী কমিটি গঠনের আশ্বাস দিলে অনশন ভাঙেন শিক্ষার্থীরা। পরদিনই কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু সাঈদ মন্ডলকে আহ্বায়ক ও উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. এস. এম. এমদাদুল হাসানকে সদস্য সচিব করে আট সদস্যের কমিটি ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে এতদিনেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করছে অনেকে।
নির্বাচন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব ফরহাদ ইসলাম বলেন, “আমরা অবশ্যই হাকসু চাই, তবে তার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাঠামোর পূর্ণাঙ্গ সংস্কার জরুরি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত কি না, তা নিশ্চিত করতে হবে। জুলাই আন্দোলনে হামলাকারীদের বিচার না করে এমন উদ্যোগ নেয়া হলে সেটি প্রশ্নের মুখে পড়ে।”
নির্বাচন প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব ফরহাদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা হাকসু চাই। তবে তার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাঠামোর সংস্কার প্রয়োজন। সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে প্রশাসনের সক্ষমতা আছে কি না, সেটিও নিশ্চিত করতে হবে। জুলাই আন্দোলনে হামলাকারীদের বিচার না করে নির্বাচন আয়োজনের উদ্যোগ প্রশ্নবিদ্ধ।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি রেজওয়ানুল হক বলেন, ‘আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে হাকসু নির্বাচন চাই। এ বিষয়ে আমাদের কর্মসূচি চলবে এবং শিগগিরই প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আবু সাঈদ মন্ডল বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠনতন্ত্র পর্যালোচনা করছি। সব কিছু যাচাই করে শিগগিরই গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করা হবে।’