Image description

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলে ভোটগ্রহণ। নির্ধারিত সময়ে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীরা ভোট দেওয়া শুরু করেন।

ডাকসুর ১০০ বছর পূর্তির বছরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এর ৩৮তম নির্বাচন। দীর্ঘ ছয় বছর পর আয়োজিত এই ভোটকে ঘিরে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করেছে। এবারই প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের বাইরে একাডেমিক ভবনে ভোট গ্রহণ করা হয়। ক্যাম্পাসের ৮টি কেন্দ্রে ৮১০ বুথে প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষার্থী ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত ছিলেন।

অতীতের অভিজ্ঞতায় ভোট প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা এড়াতে এবার প্রশাসন হলের বাইরে কেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। শিক্ষার্থীরা কার্জন হল, শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র, টিএসসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব, সিনেট ভবন, উদয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভূতত্ত্ব বিভাগ এবং ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভোট দেন। সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী ভোট দিয়েছেন উদয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে, যেখানে সূর্য সেন, জিয়া, শেখ মুজিব ও জসীমউদ্‌দীন হলের ৬ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী ভোটার ছিলেন।

গতবারের তুলনায় এবার ভোটার সংখ্যা কিছুটা কম হলেও প্রার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। ডাকসুর ২৮ পদে ৪৭১ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। হল সংসদের ২৩৪ পদে প্রার্থী হয়েছেন ১ হাজার ৩৫ জন। গতবার প্রার্থী ছিলেন ৫০৯ জন। এবার বয়সসীমা তুলে নেওয়ায় আগের তুলনায় অনেক বেশি শিক্ষার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পেয়েছেন। নিষিদ্ধ হওয়ায় এবার ছাত্রলীগের কোনো প্যানেল নেই। প্রধান লড়াই হচ্ছে ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির-সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ-সমর্থিত বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ, বামপন্থী সাত সংগঠনের প্রতিরোধ পর্ষদ এবং কয়েকটি স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে।

ভোট ঘিরে নিরাপত্তার জন্য ক্যাম্পাসে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়। টিএসসিতে পুলিশের নিয়ন্ত্রণকক্ষ ছিল। প্রতিটি কেন্দ্রের বাইরে এলইডি স্ক্রিনে ভোট গণনা সরাসরি দেখানোর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বিএনসিসি, রোভার ও রেঞ্জাররা ভোটারদের লাইনে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে দায়িত্ব পালন করেছেন।

প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, “উৎসবমুখর পরিবেশে শান্তিপূর্ণ ভোটের জন্য সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ডাকসু একটি মডেল তৈরি করতে পারলে সেটি সারা দেশের জন্য উদাহরণ হতে পারে।”

ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পর এখন চলছে গণনা। আজ রাতেই ফলাফল ঘোষণা করা হবে বলে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে।