
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) ছাত্র হল-২ নির্মাণে নানান অব্যবস্থাপনার অভিযোগ উঠেছে। ৬৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হলটির ডিজাইনে ত্রুটি এবং নির্মাণকাজ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব স্বীকার করে বলছে, অল্প জায়গায় নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করতে গিয়ে এমন অবস্থা হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলছেন, ছয় তলা থেকে ১০ তলা পর্যন্ত থাকার জন্য মোট ১৮০টি কক্ষ রয়েছে। প্রত্যেকটিতে চারজন করে থাকার কথা। কিন্তু এ কক্ষে জায়গা অনেক কম, ফলে গাদাগাদি করে থাকতে হবে। এগুলোয় শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো লকারের ব্যবস্থা রাখা হয়নি। আলাদা করে রাখার জায়গাও নেই। এটি হল নাকি হাসপাতাল, এমন প্রশ্ন তাদের।
প্রতি তলায় শিক্ষার্থীদের নামাজের জন্য একটি কক্ষ আছে। কিন্তু হল ঘুরে দেখা যায়, যে কক্ষ রাখা হয়েছে, সেখানে একসঙ্গে সর্বোচ্চ ১০ জন নামাজ পড়তে পারবেন। কিন্তু প্রতি তলায় কক্ষভেদে ১০০ থেকে ১৫০ জন শিক্ষার্থীর থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। নামাজের জন্য প্রতি তলায় ওজুর যে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, সেটি নামাজের কক্ষ থেকে অনেক দূরে।
ক্যান্টিন থাকলেও সেখানে রান্না-বান্নার কোথায় হবে, সেই জায়গা তৈরি করা হয়নি জানিয়ে তারা বলছেন, ডায়নিংয়ে এমন জায়গায় ফ্যানের লাইন করা হয়েছে, সেখানে বসানো যাবে না। গেস্টরুম থাকার কথা হলে প্রবেশের মুখে, কিন্তু রাখা হয়েছে শেষ প্রান্তে।
হলটির নকশা দেখে জানা যায়, প্রতি তলায় শিক্ষার্থীদের নামাজের জন্য একটি কক্ষ আছে। কিন্তু হল ঘুরে দেখা যায়, যে কক্ষ রাখা হয়েছে, সেখানে একসঙ্গে সর্বোচ্চ ১০ জন নামাজ পড়তে পারবেন। কিন্তু প্রতি তলায় কক্ষভেদে ১০০ থেকে ১৫০ জন শিক্ষার্থীর থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। নামাজের জন্য প্রতি তলায় ওজুর যে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, সেটি নামাজের কক্ষ থেকে অনেক দূরে।
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী শাকিল বলেন, ‘হলের যে কক্ষগুলো তৈরি করা হয়েছে, সেগুলো হাসপাতালের বেডের মতো। হাসপাতালের বেডগুলো রাখার পর যেমন হাঁটার সামান্য জায়গা থাকে, এখানেও তেমন অবস্থা। হল তৈরি করার সময় এখানে লকার দেওয়া প্রয়োজন ছিল, সেটা দেয়নি। আমরা নিজেরাও যে লকার কিনে নেব, সে জায়গাও নেই।’
আরেক শিক্ষার্থী ইমরান বলেন, ‘অনুষ্ঠান করার জন্য যে ধরনের হলরুমের প্রয়োজন ছিল, তা নাই। যে ডিজাইন করা হয়েছে, সেটা ত্রুটিপূর্ণ ছিল, এখন কাজ শেষ হওয়ার পরে বুবোঝা যাচ্ছে। যেখানে সব সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন একটি হল পাওয়ার কথা ছিল, সেখানে আমরা যা পেয়েছি- এটা বলার মত না।’
প্রভোস্ট কিছু কক্ষ ঘুরে দেখা যায়, এমন কিছু কক্ষ তৈরি করা হয়েছে, যেখানে কোনও জানালা নাই। আলো-বাতাস ঢোকার মতো জায়গা নেই। এমন কিছু কক্ষ তৈরি করা হয়েছে, সেগুলো কোন কাজের জন্য, সেই ব্যাখ্যা প্রকৌশল দপ্তরের কাছে নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হলটি ২০২৪ সালের জুন মাসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু হল ঘুরে দেখা যায়, যে জায়গাগুলোয় ফ্যান লাগানোর কথা ছিল, সেগুলোতে লাগানো হয়নি। পানির ফিল্টারগুলো নষ্ট হয়ে পড়ে আছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক লেফট্যান্যান্ট কর্নেল জিএম আজিজুর রহমান কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলী (সিভিল) নাইম রেজোয়ান বলেন, ‘সরকার আমাদের যেমন বাজেট দিয়েছে, আমরা তেমনই করেছি। এখানে যে জায়গা দেওয়া হয়েছে, সে জায়গায় আসলে এক হাজার সিটের হল তৈরি করা কঠিন ছিল। এরপরও যেহেতু সরকারের নির্দেশনা ছিল, তাই আমাদের কাজটা সেভাবেই করতে হয়েছে।’