Image description

সারা দেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোর চলমান পূর্ণাঙ্গ শাটডাউন কর্মসূচি শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার (৭ মে) সকালে শিক্ষক, আইডিবি এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিষয়টি আজ দুপুরে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে নিশ্চিত করেছেন কারিগরি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কার্যনির্বাহী সদস্য জুবায়ের পাটোয়ারী। 

তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের শিক্ষক ও আইডিবিসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সর্বসম্মতিক্রমে আমরা শাটডাউন কর্মসূচি আংশিকভাবে শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিকেল চারটায় এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলোতে লাগানো তালা খুলে দেওয়া হবে। তবে ছয় দফা দাবির প্রেক্ষিতে আমাদের আন্দোলন আগের মতোই চলমান থাকবে।’

প্রসঙ্গত, ছয় দফা দাবিতে দেশের পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে সড়ক, মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন। কিন্তু দীর্ঘ সময়েও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে কার্যকর সাড়া না পাওয়ায় তারা চূড়ান্তভাবে শাটডাউনের মতো কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হন। এর ফলে শিক্ষাকার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয় এবং শিক্ষাপঞ্জিতে চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়।

শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবিগুলো হলো- জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ প্রমোশন কোটা বাতিল করতে হবে। জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল করতে হবে। ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদবি পরিবর্তন, মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চাকরিচ্যুত করতে হবে। ২০২১ সালে রাতের আঁধারে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের নিয়োগ সম্পূর্ণভাবে বাতিল এবং সেই বিতর্কিত নিয়োগবিধি অবিলম্বে সংশোধন করতে হবে।

ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিল করতে হবে। উন্নত বিশ্বের আদলে চার বছর মেয়াদি মানসম্পন্ন কারিকুলাম চালু করতে হবে এবং একাডেমিক কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে ইংরেজি মাধ্যমে করতে হবে।

উপসহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (দশম গ্রেড) থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও যেসব সরকারি, রাষ্ট্রীয়, স্বায়ত্তশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিম্ন পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব পদে কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে এবং তা আইনানুগভাবে নিশ্চিত করতে হবে। এই পদগুলোয় অনতিবিলম্বে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ ও সব শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।

স্বতন্ত্র ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা’ মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা ও ‘কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠন করতে হবে এবং পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের লক্ষ্যে একটি উন্নত মানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁও) পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পাস এবং ডুয়েটের আওতাভুক্ত একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আগামী সেশন থেকে শতভাগ আসনে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।