
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীরা সম্প্রতি ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য শিক্ষকদের কাছে খোলা চিঠিতে ক্ষমা চেয়েছেন।
রোববার (২৭ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘কুয়েট ১৯’ পেজে ওই চিঠি প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬টি বিভাগের ছাত্র প্রতিনিধিদের স্বাক্ষর সংযুক্ত রয়েছে।
মূলত সম্প্রতি সময়ে ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি চালু থাকার পক্ষে বিপক্ষে অবস্থান নেওয়াকে কেন্দ্র করে কুয়েটে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গত ১৮ ফেব্রুয়ারির ঘটনার পর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়। ওইদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্যসহ একাধিক শিক্ষক লাঞ্ছনার শিকার হন। এরপর একাধিকবার উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় ক্যাম্পাসে।
একজন শিক্ষক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করে লেখেন, ‘কিছু শিক্ষার্থীর হাতে শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ককে তলানিতে পৌঁছে দিয়েছে।’
চিঠিতে শিক্ষার্থীরা লেখেন, ‘আমরা আপনাদের সন্তানসম। কোনো আচরণে যদি আপনাদের প্রতি অসম্মান প্রকাশ পেয়ে থাকে, তার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত ও বিনীতভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আপনারা আমাদের পিতৃতুল্য। আপনাদের প্রতিটি কথা আমাদের জীবনের দিকনির্দেশনা। আমরা আশাবাদী, আপনারা আমাদের ভুলগুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং কুয়েট আবারও ঐক্য ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার বন্ধনে আবদ্ধ হবে।’
ঘটনার পটভূমি তুলে ধরে চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট ছাত্রদল ও বহিরাগত বিএনপি কর্মীদের হাতে পিস্তল, চাপাতি, রামদাসহ দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী ও একজন শিক্ষক আহত হন, যা কুয়েটের ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়।’
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, কিছু কুচক্রী মহল প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে এবং শিক্ষকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চাচ্ছে।
তারা আরও লেখেন, ‘আমাদের আন্দোলন কখনোই শিক্ষাবিরোধী বা শিক্ষকবিরোধী ছিল না। এটি ছিল সন্ত্রাস ও দুর্নীতিবিরোধী শান্তিপূর্ণ একটি উদ্যোগ। নিরাপদ, রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত শিক্ষাপরিবেশ গড়ে তোলাই ছিল আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। আন্দোলনের সময় কোনো শিক্ষার্থীর আচরণে যদি শিক্ষকদের মনে কষ্ট লেগে থাকে, তার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।’