![Image description](https://content.bdtoday.net/files/img/202502/ed7331ce95ecc709043c1093e4a78b60.png)
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি অর্থনীতি বিভাগের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক ড. এম. হারুন-অর-রশিদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে অধ্যয়নরত মালয়েশিয়ান এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। ফলে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আদেশে এই তথ্য জানানো হয়েছে। চাকরিচ্যুত এই শিক্ষক বাকৃবির বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন ‘সোনালি দলের’ নির্বাচিত সভাপতি ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আদেশে বলা হয়েছে, কৃষি অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এম. হারুন-অর-রশিদের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ান ছাত্রী প্রিসিলা প্রিয়াঙ্কার ওপর যৌন নিপীড়নের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত গঠন করা হয়। কমিটির সুপারিশের আলোকে গত বছরের ১৪ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের জরুরি অধিবেশনে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। অধ্যাপকের অনুকূলে প্রেরিত চার্জশিটের দাখিলকৃত জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ৩২৭তম অধিবেশনে গৃহীত ১ এর (৫) নং সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাকে বাকৃবি কর্মচারী (দক্ষতা ও শৃঙ্খলা) স্ট্যাটুটস-এর ৪ (১) (এফ) নং ধারা অনুযায়ী চাকরি থেকে অপসারণ করা হলো। এই আদেশনামা ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।
জানা যায়, গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর ড. হারুনের বিরুদ্ধে উপাচার্য বরাবর যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করেন বিশ্ববিদ্যালয় ভেটেরিনারি অনুষদে অধ্যয়নরত মালয়েশিয়ান ওই নারী শিক্ষার্থী।
উপাচার্যকে দেওয়া অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেছিলেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি হলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতি বিভাগের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ, যিনি আমার প্রতিবেশী (৭এ, বাগান বাড়ি) হিসেবে বাস করছেন। তিনি আমার বাড়িতে প্রবেশ করে আমাকে একাধিকবার যৌন হয়রানি করেছেন। এছাড়া তিনি প্রয়োজন ছাড়াই আমাকে মেসেজ পাঠিয়েছেন এবং রাতে অস্বাভাবিক সময়ে আমার বাসায় ঢোকার চেষ্টা করেছেন। এ ঘটনায় আমার মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছে এবং আমি শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। ফলে আমি পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারছি না এবং পরীক্ষায়ও অংশগ্রহণ করতে পারিনি।’
অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির দেওয়া প্রতিবেদন ও সুপারিশের প্রেক্ষিতে গত ১৪ অক্টোবর ওই শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৮ সেপ্টেম্বর ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
এদিকে, গত সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে মালয়েশিয়ার নাগরিক ওই শিক্ষার্থী বাংলাদেশ ত্যাগ করেছিলেন। এর আগে মালয়েশিয়ান হাইকমিশন ও পুলিশের কাছেও অভিযোগ করেছেন তিনি। এরপর তিনি ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে নীরবে দেশ ছেড়ে চলে যান বলে জানা গিয়েছিল।