
দীর্ঘ ৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট প্রতিনিধি নির্বাচনকে ঘিরে পুরো ক্যাম্পাস এখন উৎসবের নগরী।
সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে প্রচারণা, সেøাগান, লিফলেট বিতরণ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণার ঝড়। পুনর্বিন্যস্ত তফসিল অনুযায়ী, ভোটগ্রহণ হবে ১৬ অক্টোবর, প্রচারণা চলবে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত। মোট ২৮,৯০১ ভোটার তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবেন এর মধ্যে নারী ১১,৩০৫ ও পুরুষ ১৭,৫৯৬ জন। প্রার্থীরা শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করতে ব্যবহার করছেন ভিডিও, গান, পোস্টার ও সরাসরি প্রচারণা। ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’ প্যানেলের এজিএস প্রার্থী জাহিন বিশ্বাস এষা, বামজোট সমর্থিত গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ ও সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থীরা দিনরাত প্রচারণা চালাচ্ছেন। গণযোগাযোগ বিভাগের শিক্ষার্থী সামিয়া সিদ্দিকী রিমি বলেন, এতদিন বইয়ে রাকসুর কথা পড়েছি, আজ তা চোখে দেখছি এ এক ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা।
ইশতেহারে প্রতিশ্রুতির বন্যা, শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন বাস্তবায়ন কতটা সম্ভব? রাকসু নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রায় সব প্যানেলই বড় বড় প্রতিশ্রুতিতে ইশতেহার প্রকাশ করেছে। ছাত্রদল সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম দাবি করেছে ১৮ ফেব্রুয়ারি ড. শামসুজ্জোহার শাহাদাত দিবসকে ‘জাতীয় শিক্ষক দিবস’ ঘোষণা ও বিবাহিত শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা হল নির্মাণের। শিবির সমর্থিত সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট এক বছরের মধ্যে ২৪টি সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, আর বামজোট সমর্থিত গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ বলেছে রাকসুর কাঠামো সংস্কার ও ক্ষমতা বৃদ্ধির কথা।
তবে শিক্ষার্থীরা বলছেন, প্রতিশ্রুতি অনেক, বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা কম। ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী রাফায়েল মারুফ বলেন, বেশিরভাগ প্রতিশ্রুতি পুরনো এবং অনেকটাই অবাস্তব।
আগামী ১৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে একযোগে রাকসু, সিনেট প্রতিনিধি ও হল সংসদ নির্বাচন। ভোট শেষে সেদিনই ফলাফল ঘোষণা করা হবে। শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা ৩৫ বছর পরের এই নির্বাচন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনবে গণতন্ত্র, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির নতুন অধ্যায়।