Image description

শৈশব-কৈশোর এমনই এক সময়; যা ভালো লাগে, সেটিই হওয়ার ইচ্ছা জাগে। প্রশ্ন হলো–যে দিনভর গান শোনে, নিজে নিজে গান গেয়ে চলে, সে হতে চাইবে? এই প্রশ্নের উত্তরে হয়তো অনেকে শিল্পী হওয়ার কথাই বলবেন। কিন্তু জিনিয়া জাফরিন লুইপার বেলায় সেটি সত্যি নয়। হ্যাঁ, সেই লুইপার কথা বলছি, যিনি গানের ভুবনে কণ্ঠশিল্পী নিজস্ব একটি পরিচিতি গড়ে তুলেছেন। নিজের মৌলিক গান ছাড়াও অগণিত শ্রোতার মনোযোগ কেড়েছেন নন্দিত শিল্পীদের অসংখ্য কালজয়ী গান কণ্ঠে তুলে নিয়ে।

শুধু তাই নয়, মাত্র তিন বছর বয়সে সংগীতে হাতেখড়ি হয়েছিল তাঁর। শৈশবেই সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন একেকটি গান পুরো মুখস্থ করে গেয়ে শোনানোর মধ্য দিয়ে; যার সুবাদে গানের পাশাপাশি নাচ, অভিনয় ও আবৃত্তি শেখারও সুযোগ পেয়েছেন। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে জাতীয় এবং বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে জয় করেছেন ১৪টি স্বর্ণপদক। প্রতিভা অন্বেষণমূলক আয়োজন ‘নতুন কুঁড়ি’ আর ‘শাপলা কুঁড়ি’তে অংশ নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন সেরা প্রতিযোগী হিসেবে। একইভাবে দর্শক ও সংগীতবোদ্ধাদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন রিয়েলিটি শো ‘চ্যানেল আই সেরা কণ্ঠ’র প্রতিযোগী হিসেবে।

অথচ সেই লুইপা যখন বলেন, ‘বড় হয়ে কী হব– তা নিয়ে ছোটবেলায় কোনো ভাবনাই ছিল না। গান ভালো লাগতো তাই শুনতাম, নিজে নিজে গাইতাম। তা দেখেই বাবা-মা আমাকে গানের পাশাপাশি বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে অভিনয়, নাচ, আবৃত্তি সেখার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। তাদের হাত ধরেই বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া, পুরস্কৃত হওয়ার মধ্য দিয়ে ভবিষ্যতের রূপরেখা তৈরি হওয়া। ঘুরেফিরে সত্যি এটাই, ভবিষ্যতে কী হব; তা আগে থেকে ঠিক করা ছিল না।’

লুইপার এই কথায় অনেকে অবাক হতেই পারেন। কারণ, ‘ছায়াবাজী’ অ্যালবামের পাশাপাশি তাঁর গাওয়া একক গান ‘জেন্টলম্যান’, ‘নাচ ময়ূরী নাচ’ কিংবা বিভিন্ন শিল্পীর কভার করা গানগুলো শুনেছেন, তারা বরাবরই লুইপার মাঝে একজন পেশাদার ও প্রতিষ্ঠিত শিল্পীর ছায়া খুঁজে পেয়েছেন। সে কারণে হয়তো সময়ের পালাবদলে লুইপাও নিজেকে পুরোপুরি সঁপে দিতে পেরেছেন সংগীত ভুবনে।

লুইপা নিজেও স্বীকার করেন, সময়ই নির্ধারণ করে দিয়েছে তাঁর চলার পথ কখন কোন দিকে বাঁক নেবে। সে কারনেই হয়তো ‘সেরা কণ্ঠ’র প্রতিযোগী হিসেবে চ্যানেল আইয়ে নিয়মিত গান গাওয়ার সুযোগ পাওয়া, সেখানেই আলমগীর হোসেনের সঙ্গে পরিচয় এবং সেই পরিচয় থেকে পরিণয় এবং সংসার ধর্ম পালন করে যাওয়া।

এই শিল্পীর কথায়, ‘তখনও জানা ছিল না, বিয়ের পর শুধু মাতৃত্বের স্বাদ নয়, শিল্পী হিসেবে পথচলার গতিও বেড়ে যাবে। জীবনসঙ্গী যখন সব কাজের অনুপ্রেরণাদাতা হয়ে যায়, তখন সত্যি থেমে থাকার অবকাশ থাকে না। আমাদের বেলায় সেটিই হয়েছে।’

লুইপার এ কথা যে মিথ্যা নয়, তার প্রমাণ মেলে অভিনব সংগীতায়োজন থেকে। এই যেমন সদ্য প্রকাশিত ‘চুড়ি ছাম ছাম’ গানে শ্রোতারা লুইপাকে আবিষ্কার করেছেন নতুন ভাবে। বিয়ের মৌসুমে এমন একটি গানের প্রত্যাশা ছিল–এই মন্তব্য শোনা গেছে অনেকের মুখে।

এ আয়োজন ছাড়াও নিজের ইউটিউব চ্যানেলে একে একে আরও কিছু ভিন্নধাঁচের গান প্রকাশ পাবে বলেও লুইপা জানান। তার আগ পর্যন্ত এই শিল্পী রিয়েলিটি শো ‘আরটিভি লিটল স্টার-আগামীর কণ্ঠস্বর’-এর বিচারক হিসেবে ব্যস্ত থাকবেন খুদে প্রতিযোগীদের প্রতিভা অন্বেষণে।