
বিতর্কিত ও সমালোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদি। ফর্সা চেহারার আড়ালে তাঁর প্রতারণা ও নোংরা কর্মকাণ্ডের কালো মুখোশ এখন সবার সামনে উন্মোচিত হচ্ছে। চটকদার কনটেন্টে সাধারণ দর্শক-শ্রোতাদের বুঁদ করে রাখলেও তিনি আসলে অপরাধ জগতের মাফিয়া। বাবা নাসির উদ্দিন সাথীর অপকর্মের পার্টনার আফ্রিদি নারী কেলেঙ্কারির হোতা, উঠতি তরুণীদের ‘ব্যাডবয়’ আর নতুন কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের কাছে ‘ভয়ংকর’ নির্যাতনকারী হিসেবে পরিচিত।
তথ্য-উপাত্ত ও ভুক্তভোগীদের দেওয়া বক্তব্যে আরো জানা যায়, আফ্রিদির বাবা নাসির উদ্দিন সাথী একজন দখলবাজ। একদা চালচুলোহীন এই অর্থলোভী আরেকজনের মালিকানাধীন মাই টিভি দখলের পর নিজের পাশাপাশি ছেলে তৌহিদ আফ্রিদিকেও অন্ধকার জগতের ‘নায়ক’ হিসেবে গড়ে তোলেন। নিজে টিভির আড়ালে সব অপকর্ম করেন প্রভাব খাটিয়ে, আর ছেলেকে লেলিয়ে দেন ‘গ্লামার্স গার্লদের’ পেছনে।
জানা যায়, ঢাকা মহানগর ডিবি প্রধান হারুনের (হারুন অর রশীদ) সরাসরি শেল্টার, আওয়ামী সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ছত্রচ্ছায়ায় চলতেন তৌহিদ আফ্রিদি। ফলে আওয়ামী আমলে কোনো অপরাধেই আফ্রিদিকে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়নি।
এদিকে দায়িত্বরত সংশ্লিষ্ট আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, যেভাবে গ্রেপ্তারের পর আফ্রিদির বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীরা নানা মাধ্যমে অভিযোগ দিচ্ছেন, সেগুলো স্পষ্ট করে লিখিত আকারে তাঁদের কাছে দিলে যাছাই-বাছাই করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আফ্রিদির গ্রেপ্তারের পর এবং আগের সব অভিযোগ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সাধারণত মানুষ যেভাবে জামা-কাপড় পাল্টায়, সেভাবে গত কয়েক বছরে এই আফ্রিদিও মেয়ে বান্ধবী পাল্টেছেন। কোনো তরুণী তাঁর মতের বিরুদ্ধে চললে গোপনে ধারণকৃত অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করতেন। আফ্রিদির অপরাধ জগতের আরেক আইটেম হলো মাদক ব্যবসা। গুলশান-বনানীর বিভিন্ন ক্লাব ও বিত্তবানদের চাহিদা মোতাবেক সব মাদকের সাপ্লাই দিত আফ্রিদির সিন্ডিকেট। অভিযোগ আছে, শুধু মাদকই না, আফ্রিদি তাঁর স্বার্থসিদ্ধির জন্য আওয়ামী আমলের এমপি-মন্ত্রী কিংবা সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকতাদের সঙ্গ দিতে তরুণীদেরও পাঠাতেন। আর কোনো ভয়ভীতি প্রদর্শনের প্রয়োজন কিংবা সহায়তা লাগলে এতে সরাসরি শেল্টার দিতেন ডিবি হারুন। আর হারুনের সঙ্গে আফ্রিদি পরিবারে ছিল “গিভ অ্যান্ড টেক” সম্পর্ক। সেই সম্পর্কে হারুন মাই টিভির সহযোগিতায় গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে এসপি থাকাকালে সংবাদ করিয়ে চালাতেন চাঁদাবাজির অভিযান। এমনকি ঢাকায় ডিবিপ্রধান হওয়ার পরও হারুন মাই টিভির সর্বোচ্চ ফেভার নিয়েছেন। সর্বশেষ হারুনের নগ্ন ভিডিও ফাঁসের পর আফ্রিদিকে কাজে লাগিয়ে একাধিক কনটেন্ট ক্রিয়েটরকে দিয়ে সেই ভিডিও সরানোর জন্য নির্যাতন চালিয়েছেন বলে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একাধিক তরুণী বলেন, ‘আফ্রিদির খপ্পরে যেসব তরুণী, নারী কিংবা কনটেন্ট ক্রিয়েটর পড়েছেন তাঁদের জীবন নাস্তানাবুদ করে ফেলেছে সে। আফ্রিদি সব সময় ডিবি হারুন থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগ ঘরানার বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাকে নানাভাবে ম্যানেজ করে এসব ফায়দা লুটেছে। সে বিয়ে ও মডেল বানানোর প্রলোভন দেখিয়ে অসংখ্য তরুণীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেছে। ওই সময় তার ভয়ে আমরা মুখও খুলতে পারিনি। কারণ, তার হাতে সোস্যাল মিডিয়ার একটা বড় নিয়ন্ত্রণ ছিল।’
অন্যদিকে গুলশান থেকে আলোচিত তরুণী মুনিয়ার লাশ উদ্ধারের পর থেকেই নানা অডিও কল রেকর্ডের সূত্র ধরে এই ঘটনায় আফ্রিদির যোগসাজশ আছে বলে বিভিন্ন অভিযোগ করা হয়। কিন্তু আফ্রিদিকে এই দুর্ঘটনা থেকে বাঁচাতে ডিবি হারুন, আওয়ামী সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের কারণে সেটা অন্যদিকে প্রভাবিত করানো হয়। অন্যদিকে শামসুল আরেফিন নামের একজনের গার্লফেন্ডকে (রিসা) ডিবি হারুনের সহায়তায় ভাগিয়ে নিয়ে ট্র্যাপে ফেলে বিয়ে করেছেন আফ্রিদি। ওই সময় শামসুলকে নানা ধরনের হুমকি ও নির্যাতন করিয়েছেন তিনি।
এ ছাড়া সম্প্রতি ‘ক্রাইম এডিশন’ প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ইউটিউবার ও ব্লগারদের আওয়ামী লীগের পক্ষে জোরপূর্বক কাজ করানো থেকে শুরু করে আফ্রিদির নানা কুকীর্তি। তবে এসবের ভিড়ে আলোচিত হয়েছে মুনিয়ার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক। ফাঁস হওয়া একাধিক ফোনালাপ ও ভুক্তভোগীদের সাক্ষ্য প্রমাণ করে, মুনিয়ার সঙ্গে আফ্রিদির ঘনিষ্ঠতা শুধু ব্যক্তিগত সম্পর্কেই সীমাবদ্ধ ছিল না, এটি মুনিয়ার মৃত্যু রহস্যেও নতুন মাত্রা যোগ করছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জুলাই আন্দোলন চলাকালে তৌহিদ আফ্রিদি দেশের জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের হুমকি দিয়ে সরকারের পক্ষে কাজে লাগানোর চেষ্টা চালিয়েছেন। তা ছাড়া আফ্রিদির বিরুদ্ধে বেশ কয়েকজন নারীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করার অভিযোগও উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।
জানা গেছে, আফ্রিদি বাবা নাসির উদ্দিন সাথীর প্রশ্নহীন সমর্থন পেয়ে এতটা অপরাধপ্রবণ ও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, বাবা নিজেই অপরাধচক্রের হোতা। যাঁর একসময় নুন আনতে পান্তা ফুরানো অবস্থা ছিল, তিনিই জোর-জবরদস্তি আর দুই নম্বরি করে কামিয়ে নেন হাজার কোটি টাকা। কাঁথা-বালিশ মাথায় নিয়ে লঞ্চে চড়ে ঢাকায় আসার আগে জমি দখলের কৌশলটা সাথী বরিশাল থেকেই অনুশীলন করে এসেছিলেন। নাসির উদ্দিন সাথীর উত্থানের একমাত্র সিঁড়ি মাই টিভি। তিনি নিজেকে মাই টিভির চেয়ারম্যান দাবি করলেও আসলে ছিলেন ওই টিভির একজন কর্মচারী মাত্র।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সত্যিকার অর্থে বিলকিস বেগম নামে এক নারীই মাই টিভির আসল প্রতিষ্ঠাতা। বিলকিস বেগমের আস্থাভাজন কর্মচারী নাসির উদ্দিন সাথী যেভাবে মাই টিভি দখল করেছেন, সেই গল্প সিনেমাকেও হার মানায়।
বিলকিস বেগম বলেন, ‘নাসির উদ্দিনের সঙ্গে আমার পরিচয় ছিল। ওর একটা এডিটিং হাউস ছিল শান্তিনগরে। সে সব জায়গায় সিডি সরবরাহ করত। প্রতিটা টিভি চ্যানেলে সিডি দিত। ও একবার আমাকে সিডি দিতে আসে। তখনই তার সঙ্গে আমার পরিচয়। এভাবে আসা-যাওয়ায় তার সাথে ভাই-বোনের সম্পর্ক হয়। সেই সুবাদে সে আমার চ্যানেলে আসে। তখন ওর কোনো টাকা-পয়সা ছিল না। হঠাৎই বড়লোক হইছে। মানুষকে বলছে যে সে মাই টিভির মালিক। মানুষকে ঠকাইয়া টাকা নিছে মালিক বানাবে বলে। কিন্তু ও তো মালিক বানাইতে পারবে না। মালিক আমিই বানাইতে পারব। কারণ প্রতিষ্ঠানের মালিক আমি।’
তিনি আরো বলেন, ‘এখন আমি রাস্তায় চলতে পারি না । ও আমাকে লোকজন দিয়ে অ্যাটাক করে। আমাকে ভয়ভীতি দেখায়। বলে মাই টিভি আপনি চালাবেন না। মাই টিভিতে আপনি আসবেন না। মাই টিভি আমরা চালাব। সে সবদিকেই লোক লাগায় রাখছে। এ রকম সন্ত্রাস পার্টিগুলা এখনো আমাকে হয়রানি করছে।’
বিলকিস বেগম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ থাকতে ক্ষমতা দেখাইয়া ডিবি হারুনকে দিয়ে আমাকে অ্যারেস্ট করাইছে। দুই দিন আমি জেলেও ছিলাম। অন্যায়ভাবে একটা মিডিয়া নিয়া প্রতারণা করছে আমার সঙ্গে। আমাকে মামলা দিয়ে হয়রানি করে দূরে রাখছে।’
গণমাধ্যমে বিলকিস বেগম বলেছেন, ‘পকেটে ১০ টাকা না থাকা সাথী আজ হাজার কোটি টাকার মালিক। প্রতারণার মাধ্যমে দখল করা এক মাই টিভির ওপর ভর করে সাথীর পরিবারের সবার ঘরে লাল-নীল বাতি জ্বলছে, আর অন্ধকার হয়েছে অনেকের ঘর। এলাকায় বিভিন্ন মানুষের বাড়িঘর দখল করে মাই টিভির সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে নাসির উদ্দিন সাথী।’
আলী হোসেন হাওলাদার নামে এক ভুক্তভোগী নাসির উদ্দিন সাথীর নানা অপকর্মের তথ্য তুলে ধরেন। তাঁর জায়গাও সাথী দখলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
জানা যায়, বিলকিস বেগমের কাছ থেকে দখল করা মাই টিভির বর্তমান যে ভবনটি রয়েছে, সেটিও দখল করা। ভুক্তভোগী ব্যক্তি আইনজীবী হওয়ার পরেও সাথীর সঙ্গে পেরে ওঠেননি। কারণ টাকা আর সন্ত্রাসী বাহিনীর দাপটে দিব্বি জবরদখল করে রেখেছেন ভবনটি।
ভুক্তভোগী আইনজীবী কিবরিয়া বলেন, ‘২০১২ সালের শেষ দিকে নাসির উদ্দিন সাথী লোকজন নিয়া আইসা আমাদের বলে এটা তার জায়গা। এই জায়গা পাওয়ার অব অ্যাটর্নি করছে। এই জায়গার মালিক সে।’
তিনি আরো বলেন, ‘২০১২ সালের ৬ নভেম্বরে ৫২২ দাগে ওখানে সে জায়গাটা দখল করতে গিয়েছিল। দখল করতে পারে নাই। সে একটা পাওয়ার অব অ্যাটর্নি করছে। রামপুরা থানায় একটা জিডি করছে মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে। এরপরে সে পরবর্তী মাসে এসে আমাদের বাড়ির জায়গাটা দখল করছে।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ‘প্রশাসনের নাকের ডগায় এ রকম একটি ভবন দখল করে টিভি স্টেশন দিয়ে বসলেও কেন সরকারের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই, তা নিয়েও রয়েছে অনেক প্রশ্ন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ‘ক্রাইম এডিশন’ টিম মাই টিভির দখল করা ভবনের ভিডিও ধারণ করতে গেলে সাথীর সন্ত্রাসী বাহিনী আমাদের জোর করে ভবনের ভেতরে নিয়ে আটকে রাখার চেষ্টা করে।’
এদিকে সাথীর অপকর্মের মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে ছেলে তৌহিদ আফ্রিদি। তাঁর ক্যামেরার সামনের ঘটনার চেয়ে পেছনের অঘটন ঢের বেশি। তাঁর মধ্যে একটি হলো মডেল ও চিত্রনায়িকা দীঘির সঙ্গে প্রেম নিয়ে লুকোচুরির ঘটনা। এ নিয়ে একাধিকার সংবাদ হয়েছে এবং মিডিয়াপাড়ায় চলেছে কানাঘুষা। ইউটিউবেও রয়েছে তাঁদের বেশ কয়েকটি ভিডিও। কিছু ছবিতে তাঁদের দেখা যায় রোমান্টিক ভঙ্গিতে। ছবিগুলো ভাইরাল হয়। অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন, তাঁরা প্রেম করছেন। তবে এক সাক্ষাৎকারে দীঘি বলেছিলেন, ‘তৌহিদ আফ্রিদির সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা ভালো বন্ধু। কিন্তু অনেকেই অনেক কথা বলে।’
এ ছাড়া রাইসা নামের এক তরুণীকে বিয়ে করেছেন তিনি। এ নিয়ে শুরু হয় বিভ্রাট। পরে ঘটনা প্রসঙ্গে আফ্রিদি গণমাধ্যমে জানান, তাঁর বউ রাইসা নন, রিসাকে বিয়ে করেছেন। সম্পর্কে রাইসা আর রিসা যমজ বোন। এ নিয়ে নতুন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই মজার ভিডিও ও ছবি পোস্ট করে লিখতে থাকেন, ‘শ্যালিকাকে বিয়ে করেছেন আফ্রিদি।’
এ ছাড়া গত বছর কোটা আন্দোলন ইস্যুতে সারা দেশে যখন একের পর এক নৃশংস ঘটনা ঘটে চলে, তখন দেশের আলোচিত এই ইউটিউবার অন্য ইউটিউবারদের আওয়ামী সরকারের পক্ষে কাজ করার জন্য প্রভাব কাটান। তার কিছুদিন আগে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সাবেক প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়। ডিবির এই কর্মকর্তার সঙ্গে একাধিকবার দেখা করেন আফ্রিদি, তাঁকে নিয়ে ভিডিও শেয়ার করেছেন। ওই সময়ের ভিডিওগুলো এখনো নেটিজেনরা ভাইরাল করছে।
কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদি গ্রেপ্তারের পর তাঁর অপকর্মের বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন অসংখ্য ভুক্তভোগী ও একাধিক ইউটিউবার। তাঁদের একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর স্বপন আহমেদ। আফ্রিদির বিরুদ্ধে মামলার হুঁশিয়ারি দিয়ে ভালো উকিল খুঁজছেন তিনি। সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে লাগাতার স্ট্যাটাস দিয়ে জানাচ্ছেন তৌহিদ আফ্রিদির অপকর্মের কথা। সর্বশেষ সোমবার স্বপন তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুকে জানান মামলা করার কথা। লেখেন, ‘আমি মামলা করার কথা ভাবছি। ভালো একজন উকিল প্রয়োজন। এরা আমার জীবন থেকে এক বছর কেড়ে নিয়েছে। আমার কান্নায় এদের মন গলেনি তখন।’ এ ছাড়া আরেককটি ভিডিও বার্তায় কনটেন্ট ক্রিয়েটর সায়েম আফ্রিদিকে নিয়ে আড়াই বছর আগের ঘটনা ফাঁস করেছেন।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সিআইডির মুখপাত্র বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান কালের কণ্ঠকে বলেন, “আফ্রিদির বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে, সেগুলো যাছাই করা হচ্ছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গ্রেপ্তারের পর রাতেই তৌহিদ আফ্রিদিকে ঢাকায় আনা হয়। আদালতে সিআইডি তাঁর সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে। তার পরিপ্রেক্ষিতে আফ্রিদির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যাত্রাবাড়ী থানায় সম্প্রতি একটি হত্যা মামলায় তাঁকে আসামি করা হয়। এই মামলায় মোট ২৫ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো ১৫০ জনকে আসামি করা হয়। তাঁদের মধ্যে ১১ নম্বর আসামি তৌহিদ আফ্রিদি। এ মামলায় প্রধান আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুই নম্বর আসামি সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং তিন নম্বরে রয়েছেন পুলিশের সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল মামুন। মামলায় ২২ নম্বর আসামি তৌহিদ আফ্রিদির বাবা মাই টিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথীকে গত ১৭ আগস্ট ঢাকা মহানগর পুলিশ গ্রেপ্তার করে।