Image description

প্রতিটি অফিসেরই নিজস্ব কিছু নিয়মকানুন থাকে। সে নিয়মকানুনগুলো মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি। বাড়িতে যে কাজগুলো অনায়াসে করা যায়, অফিসে তা এড়িয়ে চলাই শ্রেয়। 

প্রতিটি প্রেজেন্টেশন বা সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলার ধরনের মাধ্যমেই ফুটে ওঠে আপনার ব্যক্তিত্ব। কখনো কখনো হয়তো এমন ভুল করে ফেলতে পারেন, যা আপনাকে অনুপযুক্ত ও নীতিহীন কর্মী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়। ভুলগুলো হয়তো আপনি না জেনেই করে ফেলেছেন। সুতরাং, অফিসে কাজ করার পাশাপাশি এই বিষয়গুলোও মাথায় রাখা দরকার যে কোন কাজগুলো অফিসে করা যাবে না। 

ঘরের কথা অফিসে নয়

দিনের বেশির ভাগ সময়ই আমরা অফিসে কাটাই। তাই অনেক সময়ই ব্যক্তিগত জীবনের গল্প করা হয়ে যায় সহকর্মীদের সঙ্গে। এটি একেবারে এড়ানো যায় না, তবে যতটা পারা যায় ব্যক্তিগত জীবন নিজের কাছেই রাখুন। ভুল করেও কোনো সহকর্মীর সঙ্গে নিজের যৌনজীবন নিয়ে কথা বলবেন না।

নিজের বাজে অভ্যাস নিয়ে আলোচনা করবেন না

বিভিন্ন ধরনের মানুষ নিয়েই আমাদের এ সমাজ। এখানে অনেকেরই বিভিন্ন ধরনের বদভ্যাস রয়েছে। এগুলো জীবন বা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, সেই সঙ্গে এগুলো নিয়ে অফিসে আলোচনা করা ক্যারিয়ারের জন্যও সমান ক্ষতিকর। আপনি দিনে কতগুলো সিগারেট খান অথবা কোন ব্র্যান্ডের মদ খেতে আপনার ভালো লাগে বা কী কী কিনে আপনার সব সময়ই অতিরিক্ত টাকা খরচ হয়-এগুলোর আলোচনা বড়জোর বন্ধুদের আড্ডায় করতে পারেন, অফিসে নয়।

কাজের অসন্তুষ্টি নিয়ে কথা বলবেন না

চাকরিটা একেবারেই ভালো লাগছে না, কাজ করতে করতে জীবন দিয়ে দিচ্ছি, কাজ ছেড়ে দিতে পারলে জীবনটা বাঁচে- এ ধরনের কর্মজনিত ক্লান্তি আর হতাশার কথা বলেন না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়াই কঠিন! এসব কথাও বন্ধুমহলের জন্য জমিয়ে রাখুন, অফিসের জন্য নয়!

নতুন চাকরি খোঁজার কথা বলবেন না

কর্মক্ষেত্রে প্রত্যেকেই নিজের অবস্থান শক্ত করতে চান। আর এ জন্য অনেকেই একটি কাজে থাকাকালেই আরেকটি চাকরির খোঁজ করেন, আরও ভালো কোনো সুযোগের সন্ধানে থাকেন। এতে কোনো সমস্যা নেই, কিন্তু বিপত্তি তখনই ঘটবে, যখন এই অনুসন্ধান নিয়ে আপনি কোনো সহকর্মীর সঙ্গে কথা বলবেন! ব্যাপারটি দিনশেষে আপনার জন্য ক্ষতি ছাড়া ভালো কিছুই বয়ে আনবে না।

নিজের বেতন নিয়ে কথা বলবেন না

মাস শেষে কত মাইনে পান, তা নিয়ে কারও সঙ্গেই আলোচনা করবেন না। যদি মনে করেন বেতনাদি কম আর তা নিয়ে সন্তুষ্ট নন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সরাসরি কথা বলুন। গল্পগুজব আর আফসোস করে কিন্তু আর যাই হোক, বেতন বাড়ে না!

মশকরায় সাবধান

হতে পারে যে আপনি এমনই এক রসিক মানুষ যে কথায় কথায় হাসিঠাট্টা করে বসেন, কিন্তু সবাই তো আর এই মজাকে স্বাভাবিকভাবে হজম করতে নাও পারেন। অনেকেই হাসিঠাট্টা বা মশকরাকে সিরিয়াসভাবে নিয়ে বসে। তখনই বাধে বিপত্তি। কাজেই সহকর্মীর মেজাজ বুঝে মজা করুন।

অন্যের জীবন নিয়ে কৌতূহল দেখাবেন না

পেশাদার সম্পর্ক পেশাদারত্বে বজায় রাখুন। আপনার সহকর্মী অফিসের পরে কোথায় যায়, ছুটিতে কোথায় বেড়াতে তার ভালো লাগে-এটা জেনে আপনার কোনো লাভ নেই। কেউ যদি নিজ থেকে আগ্রহ করে এসব আপনাকে না বলে, তবে এ ধরনের কৌতূহল দেখানো অন্যের ব্যক্তিগত জীবনে নাক গলানোর মতোই বিরক্তিকর আচরণ।

প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিজের মাঝে রাখুন

কাজের ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই বিষয়টি নিয়ে সবার সঙ্গে কথা বলতে যাবেন না। আর কার চেয়ে কে ভালো বা কে যোগ্য, এসব নিয়ে কখনোই আলোচনা করতে যাবেন না।

বুঝেশুনে পোস্টিং, শেয়ারিং

অফিসে প্রতিনিয়ত কী করছেন, দুপুরে কে কে একসঙ্গে খেয়েছেন বা কোথায় খেতে যাবেন, বিকেলে কোন জায়গায় বসে চা খান, আজকে অফিস শেষে কোথায় হ্যাংআউট করছেন, কাজের চাপে আপনার ঘুম আসছে-সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে এ ধরনের পোস্ট, ছবি, সেলফি দেখার অভিজ্ঞতা আমাদের অনেকেরই হয়। এ ধরনের কোনো কিছু যে পোস্ট করা যাবে না ব্যাপারটি তা নয়; তবে এটি নিয়মিতভাবে করতে থাকলে আপনি সহকর্মীদের কাছে একজন বিরক্তিকর মানুষ হিসেবে চিহ্নিত হবেন।