ক্ষমতার নিষ্ঠুর বৈশিষ্ট্য ও রাজনীতি
24 December 2015, Thursday
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি সমাজের ক্ষমতাসীনদের জন্য আরামের কি-না বলা মুশকিল; তবে তারা তাদের
অর্থনৈতিক, সামাজিক ও মতাদর্শিক স্বার্থ উসুল করে নিতে পারছে, এটাই বাস্তবতা। স্বার্থ উসুল করা কথাটা বোঝা আশা করি কঠিন কিছু নয়। তারা ক্ষমতার সুবিধা নিয়ে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো লুণ্ঠন ও বিদেশে টাকা পাচার করতে পারছে। বড় কোনো প্রকল্পের জন্য এখন টেন্ডার দিতে হয় না, এর বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ আইন করেই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ সরকার টেন্ডার ছাড়া যে কাউকেই তাদের ইচ্ছামতো দরদামে কাজ বা ঠিকাদারি দিতে পারে এবং দিচ্ছেও। ক্ষমতাসীন থাকার কারণে অপরাধ করেও ক্ষমতাসীনদের দলভুক্ত লোকজন পার পেয়ে যেতে পারছে। আইন ও অধিকারের কোনো তোয়াক্কা না করে বিরোধী রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে গুলি, গুম, হত্যা ও দমন-পীড়নের মাধ্যমে খামোশ করে দিতে পেরেছে তারা। খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিকভাবে করুণ ও ক্ষমতাসীনদের দয়ার ওপর নির্ভরশীল একটি দলে পরিণত করতে পেরেছেন শেখ হাসিনা। রাজনৈতিক কূটতা, ক্রূরতা, ভাষা এবং নিত্য বিএনপিকে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ও সন্ত্রাসী রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রচারের সুফল ক্ষমতাসীনরা পায়নি বলা যাবে না। পেয়েছে। ‘আমরাও মুক্তিযুদ্ধের দল’ কিংবা ‘আমাদের দলে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যায় আওয়ামী লীগের চেয়ে বেশি’- বিএনপির এ কাতর কৈফিয়তে বিশেষ কোনো কাজ হয়নি।
শুধু তাই নয়, শেখ হাসিনা এক দঙ্গল অনুগত গণমাধ্যমকে সফলভাবে তার পক্ষে সাফাই গাওয়ার জন্য সক্রিয় রাখতে পারছেন। পঞ্চদশ সংশোধনী করে একটি ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম ও বহাল রাখতে পারছেন তিনি। যারা নীতিবিদ্যা বা নীতিবাগীশতা দিয়ে রাজনীতিতে আহা উহু করেন, তারা প্রকাশ্যে দুই-এক বুলি ফোঁসফাঁস করলেও গোপনে অশ্রুমোচন করা ছাড়া শেখ হাসিনা তাদের জন্য করণীয় কিছু রাখেননি। রাজনীতির বিচার নীতিবাগীশ নিন্দা দিয়ে নির্ধারণ করা যায় না। অর্থাৎ শেখ হাসিনা মহা অন্যায় করছেন, তার এভাবে রাজনীতি করা ঠিক হচ্ছে না- এসব কথা বলে লাভ নাই। শুকনা কথায় চিড়া ভিজে না। যারা আমার লেখা নিয়মিত পড়েছেন তারা স্বীকার করবেন, আমি রাজনীতিতে শেখ হাসিনার এ নিষ্ঠুর, নির্মোহ ও ক্ষমতাকেন্দ্রিক বৈশিষ্ট্যের সবসময় ‘প্রশংসা’ করেছি। এই অর্থে যে, রাজনীতি যদি ক্ষমতা চর্চা হয়ে থাকে তবে এটাই ক্ষমতার সার্বভৌম চরিত্র। এ চরিত্রের খোলাখুলি দিকটা শেখ হাসিনার মধ্য দিয়ে আমরা দীর্ঘদিন ধরে দেখে আসছি। এটাই তার সফলতার কারণ। এ সফলতা ইতিহাসে তাকে সম্মানজনক অবস্থানে আসীন করবে কি-না সেটা সন্দেহের। তবে বিশুদ্ধ বল প্রয়োগ এবং প্রতিপক্ষকে নির্মূল করার ক্ষেত্রে তার একনিষ্ঠতা বিরল। ক্ষমতাসর্বস্ব রাজনীতির এ চরিত্র বাংলাদেশে শেখ হাসিনার চেয়ে ভালো কেউ বুঝেছেন বলে আমার মনে হয় না।
এ কথাগুলো দিয়ে শুরু করছি কেন? রাজনীতি বিশেষত একটি জনগোষ্ঠীর ভবিষ্যৎ বিচারের দিক থেকে নিষ্ঠুর, নির্মোহ ও ক্ষমতাকেন্দ্রিক বৈশিষ্ট্যের তর্কটা নৈতিক বা নীতিবাগীশ তর্ক নয়। কিš‘ এই তর্ককে রাজনৈতিক তর্কে পরিণত করার সাধ্য ও সামর্থ্য আমরা অর্জন করিনি। প্রশ্ন হচ্ছে, একে রাজনৈতিক তর্কে পরিণত করতে পারার অর্থ কী?
রাজনৈতিক তর্কে পরিণত করার কথা বলার অর্থ হচ্ছে, একটি রাজনৈতিক জনগোষ্ঠীর অনুমান মাথায় নিয়ে কথা বলা। সেই অনুমানমাফিক কে বা কারা সেই জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা ছাড়া কোনো বিষয়কে রাজনৈতিকভাবে বিচার-বিবেচনা করার সাধ্য ও সামর্থ্য অর্জন করতে পারা অসম্ভব। কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করার সময় আমরা কাদের কথা মাথায় রেখে কথা বলছি, সেই দিকটাকে বারবার পর্যালোচনা করতে পারা চাই। যদি বাংলাদেশের জনগণকে আমরা আমাদের চিন্তায় রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী হিসেবে ভাবি, তাহলে এটাও অনুমান করতে হবে, এখানে নানান দলের, নানান বিশ্বাসের, নানান মতের বা আদর্শের মানুষ অন্তর্গত। তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-বিরোধ-সংঘাত আছে। জনগোষ্ঠী হিসেবে বাংলাভাষী বা বাঙালিরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হতে পারে, কিন্তু এ দেশে আরও অনেক ক্ষুদ্র জাতিসত্তা রয়েছে। কিন্তু সবকিছুর ঊর্ধ্বে বিভিন্নতা ও বৈচিত্র্যের মধ্যে তাদের একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে, সেখানে তারা একই রাজনৈতিক জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। আর ঠিক সে কারণে তারা একই রাষ্ট্রের নাগরিক এবং তাদের প্রত্যেকেরই নাগরিক ও মানবিক অধিকার মেনে নিয়েই রাজনীতির আলোচনা করতে হবে।
ক্ষমতাসীনদের রাজনীতির প্রতি আপত্তি তাদের নিষ্ঠুর, নির্মোহ ও ক্ষমতাকেন্দ্রিক বৈশিষ্ট্যের জন্য নয়। তারা যে রাজনৈতিক জনগোষ্ঠীর অনুমান মাথায় রেখে তাদের ক্ষমতা চর্চা করে, সেখানে দেশকে তারা মোটা দাগে দুই ভাগে ভাগ করে। এক পক্ষ তাদের সমর্থক কিংবা তাদের বিশ্বাস ও মতাদর্শের অনুসারী। এর বাইরের কাউকেই তারা বাংলাদেশের জনগণের অন্তর্ভুক্ত গণ্য করে না। কথায় কথায় তাদের তারা পাকিস্তানে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। যারা তাদের বিরোধী, তাদের তারা বিএনপি-জামায়াত মনে করে। বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতি কিংবা আওয়ামী লীগের যে কোনো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের মতাদর্শ ও রাজনীতির সমালোচনা করার অধিকার আওয়ামী লীগের অবশ্যই রয়েছে। কিন্তু ক্ষমতাসীনরা যে ধারণা প্রতিষ্ঠিত করেছে তা হচ্ছে, এদেশে তারা ছাড়া সমাজের প্রায় বাকি অর্ধেক মানুষেরই থাকার কোনো অধিকার নাই। তারা প্রতিপক্ষের কথা বলা ও সভা-সমিতি করা, প্রতিবাদ-বিক্ষোভ ইত্যাদি কিছুই বরদাশত করতে রাজি নয়। প্রতিপক্ষকে তারা নির্মূল করতে চায়। এর মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী হিসেবে তাদের অনুমান সম্পর্কে আমরা স্পষ্ট একটা ধারণা করতে পারি। এটাই হচ্ছে বাংলাদেশের মহাবিপদের জায়গা।
বিপদ হচ্ছে, রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী হিসেবে বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর এই বিভক্তি এবং নিষ্ঠুর ও নির্মোহভাবে সেই বিভক্তির চর্চা বাংলাদেশকে রাজনৈতিকভাবে চরম অস্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে গিয়েছে। ক্ষমতায় থাকার জন্য ক্ষমতাসীনরা তাদের দ্বারা বিভক্ত জনগোষ্ঠীর ওপর নির্ভর করছে না। তাদের নির্ভর করতে হচ্ছে নিখাদ বল প্রয়োগ ও বাইরের শক্তির ওপর। আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিকভাবে যেসব রাষ্ট্র ও শক্তির সঙ্গে তাদের আঁতাত করতে হচ্ছে, তা বাংলাদেশের স্বার্থের অনুকূল নয়। বাংলাদেশের চরম বিপদ এখানেই।
দুই
এই বাস্তবতার মধ্যেই পৌরসভার নির্বাচন হতে যাচ্ছে। রাজনীতির গোড়ার প্রশ্নের মীমাংসা না করে স্রেফ নির্বাচন বাংলাদেশকে বর্তমান বিপদ থেকে উদ্ধার করতে পারবে কি-না সন্দেহ। বর্তমান বিপদ থেকে উদ্ধার দূরে থাকুক, বরং বিদ্যমান পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে কি-না সেটাই বরং এখন চরম উৎকণ্ঠার কারণ হয়ে উঠেছে। ক্ষমতাসীনদের দিক থেকে পৌরসভা নির্বাচন ক্ষমতা চর্চা ও ক্ষমতা বহাল রাখার একটা কৌশল মাত্র। এর পরিণতি হচ্ছে রাজনৈতিক বিভাজনকে আরও বিস্তৃত ও গভীর করা। একটি দৈনিক পৌরসভা নির্বাচনের হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছে প্রার্থীদের মধ্যে কোটিপতি রয়েছেন ৮৯ জন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের রয়েছে ৩৩ আর বিএনপির ৫৬। আওয়ামী লীগের ২১৩ প্রার্থীর মধ্যে ব্যবসায়ী হচ্ছে ১৪০ (৬৬ শতাংশ)। আর বিএনপির ২০৫ প্রার্থীর মধ্যে ব্যবসায়ী ১২৯ (৬৩ শতাংশ)। এই ছোট্ট পরিসংখ্যান প্রথাগত রাজনীতির চরিত্র আমাদের উন্মোচন করে দেখায়। রাজনীতিতে ধনী ও ব্যবসায়ীদের আধিপত্য বেড়েছে। টাকা ছাড়া কারও পক্ষে নির্বাচনী টিকিট পাওয়া রীতিমতো অসম্ভব ব্যাপার। রাজনীতি ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের ক্ষেত্র ছাড়া আর কিছু নয়। একদিকে ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক ক্ষমতা আমাদের নাগরিক ও মানবিক অধিকার হরণ করে নিচ্ছে, অন্যদিকে বিনিয়োগের জায়গা হওয়ার কারণে রাজনীতি ব্যবসায়ীদের লুটতরাজের ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। ফলে যারা নানাভাবে দাবি করেন নির্বাচন বাংলাদেশের পরিস্থিতির ক্ষয় ঠেকাতে পারবে, কিংবা নিদেনপক্ষে গণতান্ত্রিক অধিকার কিছুটা ফিরিয়ে দেবে, তারা খামাখা জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন।
এই দিকটি বুঝতে পারলে আমরা বুঝব কেন রাজনীতিকে অর্থবহ করে তোলা এবং সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক আদর্শ ও কর্মসূচি সম্পর্কে সম্পূর্ণ নীরব থেকে বিএনপি বারবার শুধু নির্বাচনের কথা বলে। কারণ বিএনপির কাছেও রাজনীতি একান্তই একটি ব্যবসায়িক বিনিয়োগের অধিক কিছু নয়। পৌরসভার রাজনীতির পর্যায়ে বিএনপির কোটিপতি প্রার্থীর সংখ্যা এ কারণে আমাকে অবাক করেনি।
এ লেখা আমি পাবনার একটি গ্রামে বসে লিখছি। কাল গ্রামে দেখেছি পৌরসভার কোটিপতির সংখ্যা সাধারণ মানুষকে বিচলিত করলেও তারা অবাক হয়নি। নির্বাচনের একটি অর্থনৈতিক দিক আছে, যার সুবিধা গরিব মানুষ কিছুটা ভোগ করে। তারা জানে, নির্বাচন কিংবা ক্ষমতার বর্তমান দ্বন্দ্ব তাদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন ঘটাতে পারবে না। কিন্তু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থীরা স্থানীয়ভাবে যে অর্থ খরচ করে তার কিছুটা চুইয়ে তাদের হাতেও আসে। আর এটাই তাদের নগদ লাভ। রাজনীতি কোটিপতি ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের ক্ষেত্র মাত্র, এই উপলব্ধি শহর ও গ্রাম উভয় জায়গাতেই বাড়ছে। এর অর্থ হচ্ছে, সাধারণ মানুষ ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়ে উঠছে, নির্বাচন বাংলাদেশের গোড়ার রাজনৈতিক প্রশ্নের মীমাংসা নয়। রাজনীতির গোড়ার প্রশ্ন উপেক্ষা করে বিএনপি কিংবা ইসলামী দলগুলোর নির্বাচনবাদিতার প্রতি সাধারণ মানুষের রাজনৈতিক আগ্রহ কমছে। ক্ষমতাসীনদের বিপরীতে এদের তারা রাজনৈতিক বিকল্প হিসেবে মনে করছে এটা ভাবার কোনো কারণ ঘটেনি। গ্রামে গ্রামে আমার কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে এটা টের পাচ্ছি। বিরোধী দলের ওপর দমন-পীড়ন তাদের প্রতি সমবেদনা বাড়াতে পারে; কিন্তু তার চরিত্র রাজনৈতিক নয়। নির্বাচনবাদী রাজনৈতিক দলগুলো দেশের রাজনৈতিক সংকটের মীমাংসা করতে পারবে না, এটাই সাধারণ উপলব্ধি। এই উপলব্ধি বাড়ছে। এর মানে জনগণ নির্বাচনবিরোধী তাও নয়। এটা শেখ হাসিনার ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার সুযোগ বৃদ্ধি করেছে। তার পুরোপুরি সুযোগ ক্ষমতাসীনরা নিচ্ছেও বটে। শেখ হাসিনা মেয়র নির্বাচন যেভাবে করেছেন, পৌরসভার নির্বাচনও তেমন করেই করবেন। ফলে তার দলের প্রার্থীদের তিনি জিতিয়ে আনবেন। এতে জনগণের বিশেষ কিছুই আসবে যাবে না। এটাই হওয়ার কথা। এটাই হবে।
আগামী দিনে রাজনীতিতে তাদেরই উত্থান ঘটবে যারা রাজনীতিই করতে আসবে। রাজনীতি তাদের কাছে বিনিয়োগের ক্ষেত্র হবে না এবং নির্বাচন দিয়ে তারা গণতন্ত্রের সংজ্ঞাও নিরূপণ করবে না। ভাবার কোনো কারণ নাই যে, সমাজে নতুন রাজনৈতিক ধারা নির্মাণের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলো অক্ষম হলেও সাধারণ মানুষ অক্ষম। বাংলাদেশ একটি ক্রান্তিকালের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। এটা গড়া-ভাঙার কাল। নির্বাচনবাদী বিরোধী রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূল করতে গিয়ে শেখ হাসিনা নতুন সম্ভাবনার প্রক্রিয়াকেই বরং নিজের অজান্তে দ্রুততর করছেন। কিন্তু সে কাজ করতে গিয়ে যেখানে তিনি নেমে যাচ্ছেন, সেখান থেকে তিনি উঠে আসতে পারবেন কি-না কে জানে!
উৎসঃ banglakhabor
পাঠক মন্তব্য
This article is by RENOWNED Intellectual Farhad Mazhar. Mr. BSC does posses that caliber to write this.
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন